হরিয়ানার সোনিপটে দুটি বলিউড অভিনেতা, শ্রেয়াস তালপাড়ে ও অলোক নাথের (Shreyas Talpade Alok Nath ) বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। এফআইআরটি একটি সমবায় সমিতির সঙ্গে সম্পর্কিত। যেটি লাখ লাখ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করে নেওয়ার পর হঠাৎ করেই সব উধাও হয়ে যায়। সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে। এই ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ।
সমবায় সমিতি “হিউম্যান ওয়েলফেয়ার ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি” নামে পরিচিত। ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে হরিয়ানাসহ একাধিক রাজ্যে ব্যবসা শুরু করেছিল। সমবায় সমিতির প্রধান দপ্তর ছিল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। সোসাইটিটি বহু-রাষ্ট্রীয় সমবায় সমিতি আইনের অধীনে কাজ করছিল এবং বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণীয় সুদের হার প্রস্তাব করে। তাদের ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) এবং রেকারিং ডিপোজিট (আরডি) স্কিমে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছিল। সোসাইটির কর্মকর্তারা দাবি করেছিল তাদের বিনিয়োগকারীদের অর্থ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।
বলিউডের এই অভিনেতাকে ডেট করছেন সারা? সম্পর্কের গুজবে নীরবতা ভাঙলেন ‘বয়ফ্রেন্ড’
সমিতিটি ধীরে ধীরে মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) মডেলও গ্রহণ করে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা দিয়ে আরও অনেক মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে থাকে। এমনকি এটি নিজের ব্যবসা বৃদ্ধি করে সোসাইটিকে একটি নির্ভরযোগ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছিল। বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করা হত, তাদের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে এবং তারা লাভের অংশ পাবে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্রেয়াস তালপাড়ে ও অলোক নাথ এই সোসাইটির বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রকল্পের প্রচার করেছিলেন। এই দুই অভিনেতার উপস্থিতি এবং অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়া ছিল এই সমিতির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপকরণ। এছাড়াও বলিউড অভিনেতা সোনু সুদও এই সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের উপস্থিতি বিনিয়োগকারীদের কাছে এই সমিতির প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই, সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে অস্বাভাবিকতা শুরু হতে থাকে। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সোসাইটি নিয়মিতভাবে বিনিয়োগকারীদের তাদের পরিপক্কতার অর্থ প্রদান করেছিল। কিন্তু সোসাইটির ব্যবসা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কর্মকর্তারা তাদের আসল উদ্দেশ্য প্রদর্শন শুরু করে। প্রথমে এজেন্টদের প্রণোদনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বিনিয়োগকারীদের মেয়াদপূর্তির পরিমাণও আর দেওয়া হয়নি। যখন বিনিয়োগকারীরা তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত দাবি করতে শুরু করেন, তখন সোসাইটির কর্মকর্তারা সিস্টেম আপগ্রেডেশনের অজুহাত দিতে থাকে।
অভিনয় থেকে অবসর নিতে চলেছেন ‘শ্রীবল্লি’? কারণ জানালেন নিজেই
লোকেরা যখন অফিসে পৌঁছাতে থাকে, তারা দেখতে পান যে অফিসে তালা মারা হয়েছে এবং সমস্ত কর্মচারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। এরপরই বিনিয়োগকারীরা প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন।
পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সোসাইটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। শ্রেয়াস তালপাড়ে এবং অলোক নাথসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১৬(২), ৩১৮(২), (৪) BNS ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের তদন্তের সঙ্গে সোসাইটির সম্বন্ধে আরও তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তে দেখা গেছে সমবায় সমিতির বিপুল শাখা এবং প্রায় ৫০ লক্ষ সদস্যের অন্তর্ভুক্তি। সোসাইটির কর্মীরা ডোর টু ডোর ভিজিটের মাধ্যমে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করত। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরত। এছাড়াও, সোসাইটি হোটেলগুলিতে বড় আকারের অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারী এবং এজেন্টদের আশ্বস্ত করা হত যে তাদের অর্থ নিরাপদ থাকবে।