বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খানের (Saif Ali Khan) বাড়িতে ঢুকে তাকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করার ঘটনাটি যতটা চমকপ্রদ, মুম্বাই পুলিশের জন্য অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করাও ততটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছিল। সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্তের মুখ স্পষ্ট দেখা গেলেও তাকে ধরতে পুলিশের সময় লেগে যায় ৬০ ঘণ্টারও বেশি।
অভিযুক্তের পরিচয়
গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তের নাম মোহাম্মদ শরিফুল আহমেদ শাহজাদ, বয়স ৩০ বছর। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। পুলিশের অনুসন্ধানে জানা গেছে তিনি থানের শ্রম শিবিরে থাকতেন এবং বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করতেন।
পুলিশের অভিযান: কীভাবে তাকে ধরা হলো?
সইফ আলি খানের (Saif Ali Khan) বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ এবং ঘটনাস্থলে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে মুম্বাই পুলিশ ৩৫টি দল গঠন করে। ১০০টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। বান্দ্রা থেকে আন্ধেরি পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার ভিডিও পরীক্ষা করা হয়। অভিযুক্ত প্রথমে বান্দ্রা স্টেশনে যায়, সেখান থেকে দাদরে পৌঁছে একটি ইয়ারফোন কিনে।
গুরুত্বপূর্ণ ক্লু: Google Pay
ওয়ারলির একটি রেস্তোরাঁয় অভিযুক্ত ব্রেকফাস্ট করেন। Google Pay-এর মাধ্যমে সেই বিল মেটান। এই অর্থপ্রদানের তথ্য থেকেই পুলিশ তার মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়। মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তার গতিবিধি অনুসরণ করা হয়। পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত ওয়ারলি থেকে দাদর হয়ে থানে পৌঁছেছেন।
এর পরে মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ অভিযুক্তর থানের অবস্থান শনাক্ত করে। মুম্বাই এবং থানে পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত থানের ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে ছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় সে ধরা পড়ে।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে বাইকের মালিক পর্যন্ত
তদন্ত চলাকালীন ৯ জানুয়ারির একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্তকে একটি বাইকে আন্ধেরি থেকে ডিএন নগর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাইকের নম্বরের মাধ্যমে পুলিশ মালিক পান্ডের কাছে পৌঁছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পান্ডে অভিযুক্তের পরিচিত ছিল সে অভিযুক্তকে থানে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্তকে বান্দ্রা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে আদালত অভিযুক্তকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার সহযোগী পান্ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত শাহজাদ বাংলাদেশি নাগরিক এবং ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। এই কারণে পুলিশ এই মামলাটি আন্তর্জাতিক স্তরে তদন্ত করছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার পেছনে কোনো বড় ষড়যন্ত্র বা অপরাধচক্রের যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।