মন ভেঙেছিল কেকের ? এক পুরোনো সাক্ষাৎকার থেকে উঠে এল অজানা তথ্য !

আজ কিংবদন্তি গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ অর্থাৎ কেকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২২ সালে এই দিনে কলকাতায় এক কলেজের অনুষ্ঠানে এসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে আচমকা মারা যান…

Krishnakumar Kunnath

আজ কিংবদন্তি গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ অর্থাৎ কেকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২২ সালে এই দিনে কলকাতায় এক কলেজের অনুষ্ঠানে এসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে আচমকা মারা যান কেকে। শোকস্তব্ধ হয়ে পরে সংগীত জগৎ থেকে শুরু করে কিংবদন্তি গায়কের পরিবার এবং অনুরাগীরা।

ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ঘুরছে গায়কের এক সাক্ষাৎকার। কয়েকবছর আগে দুবাইয়ে অনুষ্ঠান এর পর ‘ফিল্মফেয়ার মিডল ইস্ট’- কে দেওয়া একটা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সংগীত জগতে প্রবেশ, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। এই সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় যে প্রথমে পেশায় চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে সগীত জগতে প্রবেশ করে মানুষের মনের বেদনা তিনি সংগীতের মাধ্যমে সারিয়ে ডাক্তারি পেশার উদ্দেশ্যও সফল হয়েছিলেন তিনি।

   

এই সাক্ষাৎকারে তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করা হয় যেখানে জানতে চাওয়া হয় যে শ্রোতাদের অন্তরে পৌঁছনোর জন্য কোনও গানের অনুভূতি বিশেষ করে যন্ত্রনার অনুভূতির মধ্যে দিয়ে তিনিও গিয়েছিলেন কি না ? এর উত্তরে গায়ক বলেছিলেন যে তার কাছে যন্ত্রণা-নামক অনুভূতিটি বিভিন্ন স্তরের। তার মধ্যে দিয়ে অন্য কেউ যাচ্ছে জানতে পারলে তিনিও সেটি অনুভব করতে পারতেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই সেই অনুভূতির সাথে একাত্ম বোধ করতেন। তিনি আরও বলেছিলেন যে যেমন বেদনাদায়ক ঘটনা তার মনে প্রভাব ফেলত, তেমনই কোনও মজার জিনিসও তাকে আনন্দ দিতো।

কেকে এও জানিয়েছিলেন যে যে আবেগ গানে রয়েছে সেই আবেগ ও যে শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনে থাকবে তার কোনও মানে নেই। সেই কারণে শিল্পীকে গানটি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। গান অনুযায়ী শিল্পীকে নিজেকে ভেঙে গড়ে নিতে হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি ‘তড়প তড়প কে’ গানটির উল্লেখ করেছিলেন। বিস্তারিভাবে তিনি জানান যে ওই গানটি যখন তিনি রেকর্ড করেছিলেন তখন তার জীবনে কোনও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেনি। তার স্ত্রী জ্যোতির সঙ্গে ১১ বছর সম্পর্কে থাকার পর তারা বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এই গানটির ক্ষেত্রে ‘মেথড এক্টিং’ এর উল্লেখ করে বলেছিলেন যে তিনি যদি নিজে ওই পরিস্থিতিতে, তাহলে কি আবেগ অনুভব করতেন, সেটা বুঝে, অনুভব করে, গভীরতার সঙ্গে তাকে গাইতে হয়েছিল। এরপর কেকে জানান যে তিনি বেছে বেছে এমন গান গেয়ে থাকেন যা মানুষকে বেদনা থেকে আরাম দেয় বা আনন্দ দেয় ।

২০২২ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গায়ক। তবে তাঁর গান আজও বেঁচে আছে মানুষের মুখে মুখে, এবং সেরে উঠতে সাহায্য করে বহু মানুষকে। সাক্ষাৎকারে বলা তার কথাগুলি যে কোনও সংগীত শিল্পীর জন্য সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।