কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেও পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা হলে ঠাঁইপেল না ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ (The Diary of West Bengal) । বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’এর মুক্তির বিষয়ে কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করলেও, বাংলার কোনও সিনেমা হল সনোজ মিশ্র পরিচালিত ছবিটি প্রদর্শন করতে রাজি হয়নি।
ছবিটির মুক্তি আটকানোর জন্য বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল এবং সেখানে বলা হয়েছিল যে এটি “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে খারাপ দৃষ্টিভঙ্গিতে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছিল”। আদালত মন্তব্য করেছিল যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে কোনও সুস্থ সমালোচনা বন্ধ করা উচিত নয়।গত বছর বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-এর মুক্তির সময় প্রায় একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, কলকাতায় সুদীপ্ত সেন পরিচালিত ছবিটি দেখানোর জন্য কোনও এক্সহিবিটার রাজি হননি।
পরিচালক জানিয়েছেন যে তাঁর ছবিটি দেশব্যাপী ৬০০ টিরও বেশি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে। তাঁর কথায়, “এটি দিল্লি, মুম্বাই এবং দক্ষিণের স্ক্রিনগুলিকে ঘিরে রয়েছে। আমরা বাংলাতেও ছবিটি মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। আদালতও ছবিটিকে বাংলায় মুক্তি দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। বাংলায় আমাদের প্রতিনিধি আছে। পোস্টারও প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু কেউ বাংলায় ছবির মুক্তিকে সমর্থন করছেন না।”
কাস্টিং কাউচ রুখতে ফেডারেশনের বড় পদক্ষেপ, আসছে ‘সুরক্ষা বন্ধু’
মিনার, বিজলী ও ছবিঘর চেনের কর্ণধার সুরঞ্জন পাল বলেন, “আমরা বহু প্রজন্ম ধরে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি। ব্যবসা ভালো দেয় এমন সিনেমাগুলোই আমরা প্রদর্শন করে থাকি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিতর্কিত চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকি। তাই, ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর মতো একটি বিতর্কিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা মতাদর্শ নিয়ে আমি চলি না। তাছাড়া এটা প্রদর্শন করার জন্য কেউ আমার কাছে আসেননি।”
কলকাতায় বসবাসকারী সিনেমা বাণিজ্য বিশ্লেষক সূত্রে জানা যাচ্ছে, ছবিটির প্রযোজক বাংলায় এই ছবি মুক্তি দিতে চাননি। সিনেমা ডিস্ট্রিবিউটর বাবলু দামানি বলেছেন, “প্রযোজক ছবিটি ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য আমার কাছে আসেননি। যদি কোনও প্রস্তাব আসত এবং শর্তাবলী মিলে যেত, তাহলে কলকাতায় এটি ডিস্ট্রিবিউট করার জন্য আমার কোনও আপত্তি থাকত না।”
সনোজ মিশ্র মনে করছেন যে এক্সহিবিটার এবং ডিস্ট্রিবিউটারদের ভয়ের কারণে ছবিটি বাংলায় মুক্তি পায়নি। তিনি বলেছেন, “প্রদর্শকরা আশঙ্কা করছেন যে বাংলায় আমার ছবি বাংলায় মুক্তি পেলে সমস্যা হবে। তাঁরা ঝুঁকি নিতে চাননি । স্ক্রীনিংয়ের প্রতিবাদে কেউ যদি থিয়েটারে আগুন ধরিয়ে দেয়? ক্ষতিপূরণ দেবে কে? তবুও, আমি বাংলায় ছবিটি মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
শহরের ডিস্ট্রিবিউটার এবং এক্সহিবিটাররা একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপাটি দেখছেন। নবীন সিনেমার কর্ণধার নবীন চৌখানি বলেছেন, “আমাকে এই ছবিটি দেখানোর জন্য যোগাযোগ করা হয়নি। আমি মনে করি এই ধরনের বিতর্কিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন না করাই ভালো। আমাদের প্রেক্ষাগৃহে এখনও প্রতিদিন ‘স্ত্রী ২’ কে তিনটে করে শো দেওয়া রয়েছে। এটি তৃতীয় সপ্তাহ এবং ছবিটি খুব ভালো ব্যবসা করছে।”
ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (EIMPA) সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত বলেছেন: “বাংলায় ছবিটি মুক্তির প্রতিকূলতার বিষয়ে ছবির প্রযোজক ইআইএমপিএর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”