মুম্বই: এক সময় টেলিভিশনের জনপ্রিয় দম্পতি হিসেবে ভক্তদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তাঁরা৷ তাঁদের সম্পর্ক ছিল অনেকের কাছেই উদাহরণ৷ সেই সম্পর্কেই এবার ছেদ পড়তে চলেছে৷ বিচ্ছেদের পথে জয় ভানুশালি ও মাহি ভিজ৷ প্রায় ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ভিন্ন পথের পথিক তাঁরা।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক মাস আগেই জয় ও মাহি আইনি বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করেন। জুলাই–আগস্টে সেই ডিভোর্স পেপার আনুষ্ঠানিকভাবে সই ও চূড়ান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সন্তানদের হেফাজত সম্পর্কিত সিদ্ধান্তও ইতিমধ্যেই নির্ধারিত।
দীর্ঘ সম্পর্কের অবসান
২০১১ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জয় ও মাহি। তাঁদের তিন সন্তান— ২০১৯ সালে জন্ম হয় তাঁদের কন্যা তারার৷ তারার জন্মের আগেই ২০১৭ সালে দুই সন্তান রাজবীর ও খুশিকে দত্তক নিয়েছিলেন তাঁরা।
তবে বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁদের সম্পর্কের ভেতর নীরব দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল।
এক ঘনিষ্ঠ সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, “অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই আর আগের মতো ফিরল না। আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে। জুলাই–আগস্টে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, সন্তানদের হেফাজতের বিষয়টিও মিটে গিয়েছে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় বদলে যাওয়া গল্প Jay Bhanushali Mahhi Vij Divorce
একসময় একসঙ্গে ভ্লগ ও ফ্যামিলি ভিডিওতে দেখা যেত তাঁদের। কিন্তু ২০২৪ সালের জুন মাসের পর থেকে যৌথভাবে কোনও পোস্ট বা ছবি আর চোখে পড়েনি। শেষবার একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল কন্যা তারার জন্মদিনে— যেখানে তাঁরা আয়োজন করেছিলেন একটি লাবুবু-থিমের পার্টি।
সম্প্রতি জয় শুধুমাত্র কন্যাদের নিয়ে জাপান সফরের ছবি ভাগ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, অন্যদিকে মাহি সন্তানদের নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠেছেন দুই সপ্তাহ আগে।
জয়ের পোস্টে মাহির মৃদু মন্তব্য
অক্টোবরের মাঝামাঝি, জয় ইনস্টাগ্রামে কন্যা তারাকে সঙ্গে নিয়ে টোকিওর শিবুয়া ক্রসিং–এ তোলা একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, “টোকিও ড্রিফ্ট’ তো শুনেছই, এবার দেখো— কীভাবে বাবা আর মেয়ে শিবুয়া ক্রসিংয়ে একসঙ্গে ‘ড্রিফ্ট’ করছে!”
ভিডিওটিতে মাহি মন্তব্য করেন— “ওর ফিতেটা (bow) দেখো! পাপার সঙ্গে ঘোরার একটা আলাদা মজা, আর মামির সঙ্গে ঘোরা একেবারে সাজানো-গোছানো৷’’ জয়ও উত্তর দেন হালকা রসিকতায়, “মামির সঙ্গে এত হাসে না, যতটা পাপার সঙ্গে হাসে।” এই বিনিময় দেখেই অনেকে বলেন, সম্পর্ক ভেঙে গেলেও সৌজন্য এখনও রয়ে গিয়েছে।
বিচ্ছেদ নিয়ে মাহির খোলামেলা মন্তব্য
বিচ্ছেদের গুঞ্জন যখন প্রথম ছড়িয়েছিল, তখন মাহি এক সাক্ষাৎকারে তীব্রভাবে প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, “ধরে নিলাম, যদি সত্যিই বিচ্ছেদ হয়েও থাকে, তাতে আপনাকে জানাব কেন? আপনি কি আমার মামা? আমার আইনজীবীর ফি দেবেন?”
অভিনেত্রীর সংযোজন, “আমাদের সমাজে একক মা বা ডিভোর্সকে এখনও অন্য চোখে দেখা হয়। সবাই ভাবে, এখন নাকি নাটক শুরু হবে, দু’জন একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করবে। কিন্তু আমি মনে করি, বাঁচতে দিন, বাঁচতে শিখুন।”
একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি
টেলিভিশনের এই প্রিয় দম্পতির ভালোবাসার গল্প একসময় ছিল অনুপ্রেরণার প্রতীক। কিন্তু বাস্তবের জটিলতা শেষে তাঁদের নিয়ে গিয়েছে দুই ভিন্ন পথে। এখন প্রশ্ন একটাই, তাঁরা কি আলাদা থেকেও নতুন জীবনের আলো খুঁজে পাবেন?


