‘আলোচনা না করেই কর্মবিরতির …’ শুটিং বন্ধ নিয়ে পরিচালকদের কাঠগড়ায় তুললেন ফেডারেশনের সভাপতি

টলিপাড়া (Tollywood strike) দীর্ঘদিন ধরেই ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ডের মধ্যে শীতল যুদ্ধের সাক্ষী। এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়, গতবছর থেকে একাধিকবার ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের এই অশান্তি চর্চার…

federation-president-swarup-biswas-reacts-on-tollywood-strike

টলিপাড়া (Tollywood strike) দীর্ঘদিন ধরেই ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ডের মধ্যে শীতল যুদ্ধের সাক্ষী। এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়, গতবছর থেকে একাধিকবার ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের এই অশান্তি চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। সম্প্রতি টলিপাড়ার তিন পরিচালক—কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং শ্রীজিৎ রায়কে কাজ থেকে নিষিদ্ধ করার পর আবারও চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তাঁদের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেশন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। এরই মধ্যে শুক্রবার পরিচালক গিল্ড ফেডারেশনের তরফে কোনও সাড়া না পাওয়ায় তারা ফ্লোর বয়কটের ঘোষণা করে।

ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস (Swarup Biswas) এই ইস্যুতে পালটা পরিচালকদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন। শুক্রবার এক সংবাদ মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে শুটিং বন্ধ করেছেন পরিচালকরা। কোনও আলোচনা না করেই কাজ বন্ধ করা হয়েছে। সেটে পরিচালকদের সঙ্গে অন্যান্য কলাকুশলীদেরও সম্মান থাকা উচিত। ফেডারেশন শ্রম আইন জানে, এবং সেই অনুযায়ী কথা বলা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “পূর্বে ১৮-১৯ ঘণ্টা কাজ করা হতো, তখন শৌচালয়ে যাওয়ারও সময় পেতেন না কলাকুশলীরা। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সেটি ১৪ ঘণ্টায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল, এবং সে সময় কে এই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিল, তা খুঁজে দেখুন।”

   

তিনি আরও বলেন, “ফেডারেশন কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়, আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র টেকনিশিয়ানদের স্বার্থরক্ষা করা।” এরপর পরিচালক গিল্ডকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমরা ধর্মঘট ডাকলে ইন্ডাস্ট্রির কোনও কিছু নড়ে না। আমরা ধর্মঘট চাইনি, আলোচনা চেয়েছিলাম। কৌশিকবাবু (গঙ্গোপাধ্যায়) এসেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। তবে পরিচালক একাই কাজ করেন, অন্যান্য কলাকুশলীদের কোনও গুরুত্ব নেই কি?”

অশান্তির শুরুটা ঘটেছিল গত মঙ্গলবার। জানা গেছে টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়া থেকে আচমকাই ফেডারেশন শুটিং (Tollywood strike) স্থগিত করার ঘোষণা করে। তবে বিষয়টি জানতেন না পরিচালক শ্রীজিৎ রায়। তিনি তখন নতুন ধারাবাহিকের সেট তৈরির কাজ করছিলেন। কিন্তু সেটে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর সব কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিনা নোটিশে। এই পরিস্থিতিতে শিল্পী এবং কলাকুশলীদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়।

পরিচালক শ্রীজিৎ রায় এই ব্যাপারে ফেডারেশনকে ইমেল পাঠিয়েছিলেন। তবে তার কোনও সাড়া পাননি। তিনি বলেন, “শুটিং বন্ধের কারণ জানতে চেয়ে ইমেল পাঠালাম, কিন্তু কোনও জবাব পাইনি। আমি শুটিংয়ের জন্য অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছি। কাজ না করলে বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হব।”

এই পরিস্থিতিতে পরিচালক গিল্ডের পক্ষ থেকে অতি দ্রুত সমাধানের দাবি জানানো হয়। শ্রীজিতের পাশে দাঁড়ান অন্যান্য পরিচালকেরা—রাজ চক্রবর্তী, সুদেষ্ণা রায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য প্রমুখ। তবে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকালে এই ইস্যুতে পরিচালকদেরই কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই দ্বন্দ্ব কিভাবে সমাধান হবে এবং আগামী দিনে টলিপাড়ার (Tollywood strike) পরিবেশ কেমন রূপ নেবে।