কলকাতা: চলতি বছর থেকেই বড় পরিবর্তনের পথে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক (West Bengal HS Exam 2025) শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা সংসদের (WBCHSE) ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বছরে দু’বার হবে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা, চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এবারই প্রথমবার উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পরীক্ষার্থীদের ওএমআর (OMR) শিটে পরীক্ষা দিতে হবে।
শিক্ষা সংসদ একটি বিস্তারিত ২৩ পাতার বিধি প্রকাশ করেছে, যেখানে পরীক্ষার নিরাপত্তা, কেন্দ্রে উপস্থিতি, আচরণবিধি, প্রশ্ন ও উত্তরপত্রের পরিবহণ সংক্রান্ত একাধিক দিক উল্লেখ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলোর মধ্যে উঠে এসেছে শিক্ষক ঘাটতির বিষয়টি। বিধিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি কোথাও শিক্ষক সংখ্যা কম থাকে, সেক্ষেত্রে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের স্থায়ী শিক্ষক ইনভিজিলেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এ বছর প্রথমবার অ্যাডমিট কার্ড অনলাইনে দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই সেটি ডাউনলোড করতে পারবে। তবে যদি কেউ প্রথম দিনে অ্যাডমিট কার্ড আনতে ভুলে যায়, তাহলে তার পরীক্ষা বাতিল হবে না। তবে দ্বিতীয় দিন থেকে অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে না থাকলে, পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না।
আগে কোনও পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট সহ ধরা পড়লে তার পুরো পরীক্ষা বাতিল করা হত। নতুন বিধিতে সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তবে পরীক্ষার্থী যদি পরীক্ষাকেন্দ্রে খারাপ আচরণ করে, তবে সমস্ত পরীক্ষা বাতিল হতে পারে।
তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা মাত্র এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের হবে। তাই পরীক্ষার সময় কোনও পরীক্ষার্থী শৌচালয়ে যেতে পারবে না। এছাড়া বর্ষাকালে পরীক্ষা হওয়ায়, বন্যাপ্রবণ এলাকায় পরীক্ষা কেন্দ্র না করার নির্দেশও জারি করা হয়েছে। বন্যার সম্ভাবনা থাকলে শেষ মুহূর্তে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিবর্তনের ব্যবস্থাও থাকবে।
ওএমআর শিটভিত্তিক উত্তরপত্র ট্রেনে পাঠানো যাবে না, কারণ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। পরীক্ষার পর সেগুলি গাড়ি ভাড়া করে ক্যাম্প অফিসে পাঠাতে হবে, সেখান থেকে কাউন্সিল সংগ্রহ করে নেবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এই বছরের তৃতীয় সেমেস্টার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ওএমআর পদ্ধতিতে প্রথম মূল্যায়ন। সেই কারণে বর্ষার কথা মাথায় রেখে অনেক নতুন দিক সংযোজন করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের এই নিয়মগুলি ভালভাবে বুঝে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”
নতুন বিধিতে পরীক্ষার সময়সূচি থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মূল্যায়ন পদ্ধতি—সবই আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করার চেষ্টা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় নজিরবিহীন কিছু পরিবর্তন হতে চলেছে বলে মনে করছেন শিক্ষামহল।