নয়াদিল্লি ১ ডিসেম্বর: দেশের মধ্যবিত্তের জন্য ঐতিহাসিক স্বস্তি নিয়ে এসেছে কেন্দ্রের নতুন কেন্দ্রীয় বাজেট (West Bengal income tax relief)। আয়কর কাঠামোয় ব্যাপক রদবদল করে মোদী সরকার আয় ₹১২ লক্ষ পর্যন্ত পুরোপুরি করমুক্ত ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গই সবচেয়ে বড় উপকারভোগী রাজ্যগুলির অন্যতম।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মোট ৫২,৯৮,৬৩৩ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। নতুন করসুবিধা কার্যকর হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪৭ লক্ষ করদাতা এখন সম্পূর্ণ করমুক্ত। অর্থাৎ বাংলার লাখো মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতে থাকছে অতিরিক্ত সঞ্চয়ের সুযোগ, বাড়বে ক্রয়ক্ষমতা, সেই সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই আর্থিক স্বস্তিও।
প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ফের ২২ গজে এই তারকা ক্রিকেটার! সামনে এল আপডেট
মধ্যবিত্তের মুখে হাসি শূন্য করের যুগে প্রবেশ বাংলার ৪৭ লক্ষ পরিবার। কর বিশেষজ্ঞদের মতে, আয় ₹১২ লক্ষ পর্যন্ত করমুক্ত ঘোষণা এ দেশের করব্যবস্থার ইতিহাসে এক অভিনব সিদ্ধান্ত। বাংলার বিশাল মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য যা কার্যত জীবনযাপনের নতুন স্বস্তি। কর্মজীবী পরিবারের বহুদিনের দাবি ছিল মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে করছাড় সীমা বাড়ানো। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হওয়ায় সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়ায় স্বস্তিই বেশি।
সরকারি মহল জানাচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত শুধু আর্থিক নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বলছে, এটি প্রকৃত অর্থে “মোদী কি গ্যারান্টি” মধ্যবিত্তের আর্থিক বোঝা কমানো ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোই ছিল তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। মধ্যবিত্তের অতিরিক্ত সঞ্চয় বাজারে খরচ বাড়াবে, ফলে অর্থনীতির চাকা আরও দ্রুত ঘুরবে এমনই মত অর্থনীতিবিদদের। এদিকে বিপরীত ছবি দেখা যাচ্ছে রাজ্যের রাজস্ব ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় করবণ্টনে পশ্চিমবঙ্গের অংশীদারিত্ব কমেছে একসময় যেখানে বাংলার শেয়ার ছিল ৩.১৪%, বর্তমানে তা নেমে হয়েছে ২.৮৯%।
এমন পতনের কারণ হিসেবে কেন্দ্রের অভিমত দুর্বল শিল্পনীতি, চাকরির অভাব, অবিরাম দুর্নীতি, বিনিয়োগ পলায়ন। ফলে রাজ্যের আর্থিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে, এবং কর সংগ্রহে স্থবিরতা এসেছে। অর্থনীতিবিদ সৌরভ রায়ের মতে, “করছাড় মানুষের জন্য ভালো, কিন্তু রাজ্যের অর্থনীতি যদি শক্তিশালী না হয়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে।”
স্বভাবতই এই করছাড় এবং রাজস্বে পতন দুই বিষয়ই নতুন রাজনৈতিক তর্কের জন্ম দিয়েছে। কেন্দ্র দাবি করছে, বাংলা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে কারণ সেখানে শিল্প নেই, কাজ নেই, বিনিয়োগ নেই। অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি এটা কেন্দ্রের পক্ষপাতমূলক আচরণ, যাতে বাংলা আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
