শহর হোক কিংবা গ্রাম, আজকাল বাজারে পা দিলেই ক্রেতাদের চোখ কপালে উঠছে। প্রতিদিনের রান্নাঘরের অপরিহার্য উপকরণ—সবজি—এখন যেন বিলাসপণ্যে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সব ধরনের সবজির দাম (Vegetable price) লাগামছাড়া। পটল, টমেটো, শসা থেকে শুরু করে ফুলকপি, বাঁধাকপি—সবকিছুর দামই চড়ছে হু-হু করে।
স্থানীয় বাজারের চিত্র বলছে, আগে যে পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকায় (Vegetable price) মিলত, এখন সেই দাম ছুঁয়েছে ৭০-৮০ টাকা। টমেটোর কেজি প্রায় ১২০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, (Vegetable price) কাঁচালঙ্কা ১৮০ টাকা। আলুর দামও এক লাফে ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের বাজেট পুরোপুরি হিমশিম খাচ্ছে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বছরের অস্বাভাবিক আবহাওয়া—কখনও অতিবৃষ্টি, কখনও খরা—সবজি চাষে বড় ধাক্কা দিয়েছে। অনেক জেলায় জলবন্যায় ফসল নষ্ট হয়েছে, আবার কোথাও তীব্র গরম ও জলসংকটের কারণে চাষ কম হয়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, যা খুচরো বাজারে দ্বিগুণ আকারে এসে পৌঁছেছে। তার সঙ্গে পরিবহণ খরচ ও জ্বালানির দামের বৃদ্ধি যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।
প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনে
রান্নাঘরের বাজেট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন গৃহিণীরা। (Vegetable price) আগে যেখানে সাপ্তাহিক বাজারে নির্দিষ্ট টাকায় বেশ কিছু সবজি কেনা যেত, এখন সেই টাকায় অর্ধেকও মিলছে না। অনেকেই এখন বাজার থেকে কম পরিমাণে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ডাল, ডিম, সয়াবিনের মতো তুলনামূলক সস্তা বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন।
কলকাতার এক গৃহিণী বললেন, “আগে প্রতিদিন বাজার থেকে তিন-চার রকম সবজি কিনতাম। এখন দাম এত বেশি যে দু-তিন দিন এক ধরনের সবজি খেয়ে কাটাচ্ছি। শিশুদের জন্য ফল কিনতেও এখন ভাবতে হচ্ছে।”
বিক্রেতাদের বক্তব্য
খুচরো বিক্রেতাদেরও অভিযোগ, পাইকারি বাজার থেকেই তারা বেশি দামে সবজি কিনছেন। একজন সবজি বিক্রেতা জানালেন, “আমরা তো নিজেরা দাম বাড়াচ্ছি না। পাইকারি দামে এত বেশি বাড়ছে যে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে, নইলে লোকসান হবে।”
সরকারি উদ্যোগ ও প্রত্যাশা
সরকারি তরফে এখনো পর্যন্ত দামের উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণের কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে পাইকারি বাজারে নজরদারি বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, হিমঘরে মজুত রাখা আলু ও অন্যান্য সবজি বাজারে ছেড়ে দাম কমানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।