উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। এখন থেকে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের বয়স্কভাতা পেতে কোনো ফর্ম পূরণ বা সরাসরি আবেদন করতে হবে না। সরকারের ডিজিটাল ডেটাবেস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্য ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ভাতা পাঠানো হবে।
৬৮ লাখ প্রবীণকে সহজতর সুবিধা প্রদান করবে সরকার:
বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ৬৮ লাখ প্রবীণ বয়স্কভাতার সুবিধা পাচ্ছেন। সরকার জানিয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ হবে। “ফ্যামিলি ওয়ান আইডেন্টিটি” প্রকল্পের আওতায় পরিবারভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যেখানে প্রতিটি সদস্যের বয়স, পরিচয়, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ৬০ বছর পূর্তির পর ব্যক্তিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাতার জন্য চিহ্নিত করা হবে।
কীভাবে শনাক্ত হবেন উপকারভোগীরা?
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী (স্বতন্ত্র দায়িত্ব) অসীম অরুণ জানান, পরিবার পরিচয়পত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে উপকারভোগী শনাক্তকরণ সম্পূর্ণ ডিজিটাল হবে।
ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ভাতা অনুমোদনের আগে তার সম্মতি নেওয়া হবে। এই সম্মতি সংগ্রহ করা হবে এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ বা ফোন কলে।
ডিজিটাল সুবিধা না থাকা বা প্রযুক্তি ব্যবহারে অক্ষম প্রবীণদের জন্য স্থানীয় সহকারী বা সরকারি কর্মীরা সরাসরি বাড়িতে গিয়ে সম্মতি নেবেন। সরকারের লক্ষ্য, কেউ যেন সুবিধা থেকে বঞ্চিত না থাকে।
১৫ দিনের মধ্যেই ভাতা অনুমোদন ও টাকা জমা:
অসীম অরুণ জানান, সম্মতি পাওয়ার সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যেই ভাতা অনুমোদন সম্পন্ন হবে। এরপর অর্থ সরাসরি আধার-সংযুক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। এতে আবেদন প্রক্রিয়ার ঝামেলা, দালালচক্রের সম্পৃক্ততা এবং অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব পুরোপুরি দূর হবে।
শ্রম সুরক্ষা ও ভাড়ার নিয়মেও নতুন সংশোধন:
মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে।
প্রথমত, দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৬২-এর সংশোধিত বিধান এখন থেকে রাজ্যের সব এলাকায়—গ্রামীণ অঞ্চলসহ—কার্যকর হবে। শ্রমমন্ত্রী অনিল রাজভার জানান, এতে শ্রমিকদের সুরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে, তবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা বাড়বে না।
দ্বিতীয়ত, ভাড়া নীতিকে সহজ করার অংশ হিসেবে, ১০ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া ভাড়ার চুক্তিতে স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফিতে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের দাবি, এতে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে চুক্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং বাজারে স্বচ্ছতা বাড়বে।
এই নতুন ব্যবস্থাগুলি বাস্তবায়িত হলে উত্তর প্রদেশে প্রবীণ সুরক্ষা, শ্রম সুরক্ষা ও প্রশাসনিক ডিজিটালায়ন আরও শক্ত হবে বলে আশা করছে সরকার।


