মোদী সরকারের কর সংস্কারকে স্বাগত জানাল ইউএসআইবিসি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য পরিষদ (US-India Business Council – USIBC) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জিএসটি কাউন্সিল এবং অর্থ মন্ত্রকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ভারতের সাম্প্রতিক জিএসটি কাঠামো সংস্কারের…

usibc india gst

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য পরিষদ (US-India Business Council – USIBC) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জিএসটি কাউন্সিল এবং অর্থ মন্ত্রকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ভারতের সাম্প্রতিক জিএসটি কাঠামো সংস্কারের জন্য। পরিষদ মনে করছে, এই পদক্ষেপ ব্যবসার পরিবেশকে আরও গতিশীল করে তুলবে, ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী পরিস্থিতি তৈরি করবে এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগকে ভারতের দিকে আকর্ষণ করবে।

একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর হ্রাস

ইউএসআইবিসি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, খাদ্য, স্বাস্থ্য, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর হ্রাসের সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে গতি দেবে। “আমরা সরকারের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই, কারণ এই সংস্কার ভোগ বৃদ্ধি করবে এবং ‘Ease of Doing Business’-এর পরিবেশ আরও উন্নত করবে,” সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

   

বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন যে, ১২ শতাংশ ও ১৮ শতাংশ করের দুটি স্তর একীভূত করে নতুন দ্বিস্তর কর কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এখন থেকে অধিকাংশ পণ্য ও সেবায় কার্যকর হবে ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ জিএসটি হার। অন্যদিকে, তামাক ও বিলাসপণ্যসহ ক্ষতিকর পণ্যের ক্ষেত্রে ধার্য থাকবে ৪০ শতাংশ কর।

অর্থমন্ত্রীর মতে, “এটি ভারতের ‘নেক্সট-জেনারেশন জিএসটি’ উদ্যোগের অংশ। কর কাঠামোকে আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং কার্যকরী করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোক্তারা স্বস্তি পাবেন, সাশ্রয়ী দামে পণ্য ও সেবা পাবেন, পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভবান হবে।”

বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ usibc india gst

ইউএসআইবিসি বলেছে, এই সংস্কার কেবলমাত্র দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে শক্তিশালী করবে না, বরং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছেও ভারতের প্রতিশ্রুতিশীল ভাবমূর্তি তুলে ধরবে। “কর কাঠামোর সরলীকরণ বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলছে। এর ফলে বিদেশি সংস্থা ও বিনিয়োগকারীরা ভারতের বাজারে আরও আস্থার সঙ্গে প্রবেশ করবে,” পরিষদের মন্তব্য।

তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আগামী দিনে আরও মজবুত হবে। পরিষদ জানিয়েছে, তারা ভারত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে সহযোগিতা করবে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।

ইউএসআইবিসি আরও বলেছে, ভারতের কর সংস্কার কেবল ব্যবসার স্বার্থেই নয়, বরং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের দিকেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরিষদ মনে করছে, নবায়নযোগ্য শক্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধে কর হ্রাস মানুষের জীবনমান উন্নত করবে এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

Advertisements

অর্থনীতিবিদদের মতে, কর কাঠামোর সরলীকরণের ফলে বাজারে ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। খাদ্যপণ্য ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যে কর কমানোয় সাধারণ মানুষ সরাসরি স্বস্তি পাবেন। একই সঙ্গে শিল্পখাত, বিশেষত ইলেকট্রনিক্স ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে উৎপাদন ব্যয় কমবে। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক দামে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

জটিলতা কমলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে USIBC India GST

এক অর্থনীতিবিদ মন্তব্য করেছেন, “ভারতের কর ব্যবস্থার এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। করের জটিলতা কমলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে, ফলে ভারত বৈশ্বিক উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।”

সরকারের এই উদ্যোগ ‘গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স’ বা জিএসটি ব্যবস্থার সূচনার পর থেকে সবচেয়ে বড় সংস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম। ২০১৭ সালে জিএসটি চালুর পর থেকেই একাধিক স্তরে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে এবার কর হারের একীকরণ এবং সরলীকরণ ব্যবসায়ী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

ইউএসআইবিসি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা আশাবাদী যে, এই সংস্কার ভারতের অর্থনীতিকে আরও টেকসই, সমন্বিত এবং বিনিয়োগবান্ধব করে তুলবে। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।”

ভারতের নতুন জিএসটি সংস্কার নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী জীবনযাত্রা, ব্যবসার জন্য সহজ পরিবেশ এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য আস্থার প্রতীক—এই তিনটি ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়বে। ইউএসআইবিসি-র প্রশংসা যেমন আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে, তেমনি দেশের ভেতরেও অর্থনীতির গতি বাড়াতে সহায়ক হবে।

Business: The US-India Business Council (USIBC) has praised India’s recent GST reforms, including the new two-tier tax structure and rate reductions on essential goods. The council believes this move will boost consumer spending, enhance the ‘Ease of Doing Business’ and attract global investors, strengthening the US-India economic partnership.