মদ এবং কৃষিপণ্যে ১৫০% ও ১০০% শুল্ক আরোপে ভারতের বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রতিবাদ

ভারতের আমেরিকান মদ ও কৃষিপণ্যের উপর ১৫০% এবং ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ওয়াশিংটন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার এক…

Tariff

short-samachar

ভারতের আমেরিকান মদ ও কৃষিপণ্যের উপর ১৫০% এবং ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ওয়াশিংটন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা শুধু কানাডা নয়, বরং সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শুল্কের হার পর্যবেক্ষণ করছি।

   

ভারতের ১৫০% শুল্ক আমেরিকান মদ এবং ১০০% শুল্ক কৃষিপণ্যের উপর। আপনি কি মনে করেন, ভারতের বাজারে কেন্টাকি বুর্বন রপ্তানি করতে এটা সাহায্য করছে?”

এছাড়া লেভিট আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বাস করেন যে ব্যবসা-বাণিজ্যে পারস্পরিক সমতা হওয়া উচিত। সঠিক এবং সুষম বাণিজ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।” হোয়াইট হাউসের এই অভিযোগের পর, আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

কানাডার বিরুদ্ধে অভিযোগ:

লেভিট কানাডার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, “কানাডা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকাচ্ছে, তাদের অত্যধিক শুল্কের মাধ্যমে। তাদের শুল্কের হার অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাজকর্মের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।” তিনি আরও বলেন, “এটা সত্যিই ক্ষতিকারক এবং আমি মনে করি, ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে এমন একটি রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, যারা আমেরিকান ব্যবসা ও কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করে।”

জাপান ও ভারতের শুল্ক বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য:

এদিকে ট্রাম্প নিজেও এই শুল্ক নিয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি ভারতের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের বিষয়টি একাধিকবার উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, “ভারত আমাদের থেকে অনেক বেশি শুল্ক আদায় করে, এবং তাদের শুল্কের কারণে কিছুই রপ্তানি করা সম্ভব নয়। কিন্তু এখন তারা শুল্ক কমানোর কথা বলেছে, কারণ কেউ তাদের কৃতকর্মের জন্য প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, “মেক্সিকো, কানাডা এবং চীনের শুল্ক খুবই উচ্চ এবং শিগগিরই এই দেশের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সুবিচারের দাবি জানানো হচ্ছে, আর আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।”

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রতিক্রিয়া:

ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তার শুল্ক নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তখন তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির সাথে একপেশে ব্যবসা চালানো বন্ধ করতে চান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে শুল্ক পুনর্বিবেচনা করছেন। তিনি বলেন “বিশ্বের প্রতিটি দেশ, প্রতিটি কোম্পানি আমাদের দেশকে ঠকাচ্ছে। আমরা সেই সমস্ত অর্থ ফিরিয়ে আনতে চাই।”

এছাড়া ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা জানি, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশের উপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে এবং এই অবস্থায় পরিবর্তন আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ভারতের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা:

ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং শুল্ক বিষয়ক আলোচনা এখন আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের শুল্ক কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, এবং ভারতও এই বিষয়ে সাড়া দিতে সম্মত হয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে শুল্ক নীতির ব্যাপারে একাধিক বৈঠক এবং আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক প্রভাব:

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং শুল্ক নীতির পরিবর্তনের প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর পড়তে পারে। বিশেষ করে, ভারতের শুল্ক নীতি নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য এবং আমেরিকার ক্ষোভ, এটি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি, মদ এবং অন্যান্য শিল্পের রপ্তানি ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

ভারতের শুল্ক নীতি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে আগামী দিনগুলোতে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক, বাণিজ্য নীতি ও অর্থনৈতিক কৌশল নতুন করে আলোচনায় আসবে।