মুম্বই, ২ অক্টোবর ২০২৫: ভারতের কর্পোরেট জগতে নতুন চমক। ইন্ডিয়ান ইনফ্রা রিপোর্টের একটি সাম্প্রতিক পোস্টে দেশের সেরা পাঁচ লাভজনক সংস্থার তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। তালিকায় নাম দেখে অনেকেই অবাক হলেও, এতে ভারতের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে।
শীর্ষ ৫ লাভজনক সংস্থা
১. রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ – মুকেশ আম্বানির নেতৃত্বে থাকা এই সংস্থা প্রায় ₹৭০,০০০ কোটি টাকার নিকটবর্তী মুনাফা করেছে। টেলিকম (জিও), রিটেইল ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে বিস্তৃত বিনিয়োগ এই সাফল্যের মূল চালিকা শক্তি। যদিও কোম্পানির গ্লোবাল র্যাঙ্কিং ৪৬তম থেকে ৭৩তম স্থানে নেমে যাওয়া প্রতিযোগিতার চাপকে তুলে ধরছে।
২. স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) – দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাংক, যা গত পাঁচ বছরে ৩১% CAGR (গড় বার্ষিক মুনাফা বৃদ্ধি) অর্জন করেছে। এর গ্রামীণ ও নগরীয় নেটওয়ার্ক এই সাফল্যের মূল কারণ।
৩. এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক – বেসরকারি খাতের অন্যতম শক্তিশালী ব্যাংক, গ্রাহক সেবা ও আর্থিক পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকার জন্য তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
৪. আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক – খুচরো ঋণ, ডিজিটাল ব্যাংকিং ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার কারণে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে।
৫. টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS) – ভারতের আইটি খাতের গর্ব, বিশ্বব্যাপী সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবায় নেতৃস্থানীয়। আন্তর্জাতিক বাজারে বিস্তৃত কাজ এবং ডলার আয় এই কোম্পানিকে শীর্ষ পাঁচে তুলেছে।
প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
তালিকা প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
- কেউ শীর্ষ ১০ কোম্পানির নাম জানতে চেয়েছেন।
- আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—“এত লাভ করেও SBI বা অন্যান্য সংস্থা কেন আরও বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি করছে না?”
- অন্যদিকে, কিছু ব্যবহারকারী কর্মচারীদের উপর চাপ এবং কর্পোরেটদের সামাজিক দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেকাংশেই এই শীর্ষ সংস্থাগুলোর সাফল্যের উপর নির্ভরশীল। দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পথে এগোচ্ছে। তবে—
- রিলায়েন্সের গ্লোবাল র্যাঙ্কিং পতন,
- ব্যাংকগুলোর ঋণ ব্যবস্থাপনার চাপ,
- এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা,
এই সংস্থাগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, ভারতের শীর্ষ কর্পোরেট সংস্থাগুলো শুধু দেশের অর্থনীতিকেই এগিয়ে নিচ্ছে না, বরং বৈশ্বিক বাজারেও তাদের প্রভাব বিস্তার করছে। তবে, কর্পোরেট সাফল্যের সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ব ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ভারসাম্য রক্ষা করাই আগামী দিনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।