বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমান্তের ঝামেলায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট সরিয়ে নিচ্ছে ভারতে (Textile Giants)। জারা, এইচ অ্যান্ড এম (H&M) এবং ইউনিক্লো—এই তিনটি জায়ান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে উৎপাদন বন্ধ করে ভারতের টেক্সটাইল হাবে শিফট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই খবর ভারতের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিরাট সুযোগ নিয়ে এসেছে। টেক্সটাইলে জায়েন্টগুলির এই সিদ্ধান্ত নতুন কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের দরজা খুলে দেবে।টেক্সটাইলে শিল্পে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ। বাংলাদেশের টেক্সটাইলে রফতানি দেশের অর্থনীতির ৮০ শতাংশ আয় করে।
কিন্তু ২০২৪-এর আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং রাজনৈতিক অশান্তির পর গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে ।বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্পূর্ণ শাটডাউন ঘোষণা করে, যা জারা, এইচএম এবং ইউনিক্লোর মতো ব্র্যান্ডগুলোর সাপ্লাই চেইনকে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে।
এইচ অ্যান্ড এম বাংলাদেশের ১,০০০-এর বেশি কারখানা থেকে পোশাক সোর্স করে। জারার মালিক ইন্ডিটেক্সের ১৫০টি সাপ্লায়ার আছে এবং আছে ২৭৩টি সেলাই ইউনিট। আর ইউনিক্লোরের আছে ২৯টি ফ্যাক্টরি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অশান্তিতে এই কোম্পানির ইউনিটগুলো বিশ্বব্যাপী পোশাক রফতানি করতে পারছে না।
এর উপর ভারতের সঙ্গে ল্যান্ড বর্ডারের ঝামেলা যোগ হলে বেড়ে গিয়েছে খরচ। সম্প্রতি ভারত রাজনৈতিক চাপে বাংলাদেশি রফতানির জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে । ফলে কোম্পানিগুলোকে ঘুরপথে রফতানি করতে হচ্ছে যেমন সমুদ্রপথ বা অন্যান্য দেশের মাধ্যমে। এতে লজিস্টিক খরচ ৩০-৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে, যা ফ্যাশন জায়ান্টদের জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং।
এই কারণেই তারা বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ভারতের টেক্সটাইল মন্ত্রক বলেছে, এই শিফট ২০২৫-এর মধ্যে শুরু হবে, বিশেষ করে তামিলনাড়ু, গুজরাট এবং আন্ধ্রপ্রদেশের ক্লাস্টারে।
বিশ্বমানের এই টেক্সটাইলে জায়েন্টদের এই সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য বড় জয়। ভারতের টেক্সটাইল শিল্প ইতিমধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কটন উৎপাদক হিসেবে পরিচিত। জারার মতো ব্র্যান্ডের উপস্থিতি দেশে নতুন বিনিয়োগ আনবে।
অনুমান করা হচ্ছে, এতে ৫০,০০০-এর বেশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের জন্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ক্যাম্পেইন এতে নতুন গতি পাবে। এছাড়া, ভারতের স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ এবং উন্নত লজিস্টিক (যেমন সাগরমালা প্রকল্প) এই ব্র্যান্ডগুলোকে আকর্ষণ করছে।বাংলাদেশের জন্য এটা ধাক্কা।
উৎসবের মরসুমে ঝড় তুলল Oben Electric, গ্রাহকরা পাবেন ৩৫,০০০ টাকার সুবিধা
দেশের ৪০ লাখ শ্রমিকের চাকরি ঝুঁকিতে, এবং রফতানি আয় কমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম্বোডিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশও এই সুযোগ নিতে পারে। কিন্তু ভারত এখন গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের নতুন হাব হয়ে উঠছে। এই শিফট ২০২৬-এর মধ্যে সম্পূর্ণ হলে ভারতের টেক্সটাইল রফতানি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।