মুম্বই, ২ অক্টোবর ২০২৫: দেশের টেলিকম গ্রাহকদের জন্য বড় খবর। এ বছরের শেষের দিকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের খরচ বাড়তে চলেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইকনমিক টাইমস-এর একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ট্যারিফ বাড়তি খরচের হার হবে প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ।
এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হিসেবে টেলিকম কোম্পানিগুলোর আর্থিক চাপ এবং 5G নেটওয়ার্ক বিস্তারে বিশাল বিনিয়োগকে দায়ী করা হয়েছে।
কেন বাড়ছে খরচ?
বর্তমানে রিলায়েন্স জিও এবং ভারতী এয়ারটেল মিলে বাজারের ৬৫ শতাংশেরও বেশি গ্রাহকের দখলে রেখেছে। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) এর তথ্য অনুযায়ী, এই সংস্থাগুলো 5G নেটওয়ার্ক বিস্তারে বড়সড় বিনিয়োগ করছে। ফলে তাদের Average Revenue Per User (ARPU) বাড়ানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
নতুন গ্রাহক সংযোগের হার কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো আয় বাড়ানোর বিকল্প পথ হিসেবে ট্যারিফ বৃদ্ধির পথে হাঁটছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালেই ট্যারিফে ২০–২৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছিল, যা নিয়ে তখন গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।
গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
- একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন: “বছরের পর বছর ট্যারিফ বাড়ছে, কিন্তু সেবার মান কি বাড়ছে?”
- অন্য কেউ বলেছেন: “মাঝারি মানের প্ল্যানের জন্য প্রতি মাসে ২০–৫০ টাকা বেশি খরচ করতে হলে সাধারণ মানুষের পকেটে বড় চাপ পড়বে।”
তবে কিছু গ্রাহক মনে করছেন, এন্ট্রি-লেভেল প্ল্যানগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়ায় নিম্ন আয়ের গ্রাহকরা তুলনামূলকভাবে কম প্রভাবিত হবেন।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
টেলিকম সংস্থাগুলোর দাবি, এই বাড়তি আয় দিয়ে তারা গ্রামীণ এলাকায় 5G সংযোগ বিস্তার করবে এবং নেটওয়ার্ক আরও স্থিতিশীল করবে। অন্যদিকে সরকারও আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগের অংশ হিসেবে 6G প্রযুক্তি উন্নয়নে বিনিয়োগ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতে খরচ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
ট্রাই (TRAI) এবং ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন (DoT) বর্তমানে এই ট্যারিফ বৃদ্ধির সম্ভাব্য প্রভাব পর্যালোচনা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিযোগিতা বাড়ানো এবং সরকারের নীতিগত সহায়তা গ্রাহকদের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
তবে, পরিষেবা মানের উন্নতি না হলে গ্রাহকরা বিকল্প নেটওয়ার্ক বা কম খরচের পরিষেবার দিকে ঝুঁকতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।
এবারের ট্যারিফ বৃদ্ধি গ্রাহকদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ, তবে টেলিকম সেক্টরের উন্নয়নের জন্য এটি প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার বিষয়—কোম্পানিগুলো সেবার মান বাড়াতে কতটা সক্ষম হয়, আর সরকার গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেয়।