ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ধরনের সাইবার প্রতারণা। WhatsApp-কে মাধ্যম বানিয়ে রমরমিয়ে চলছে জালিয়াতি চক্র। হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের সময় নতুন ধরণের সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেক ইউজার। আর এই সংখ্যাটি বেড়েই চলেছে। কীভাবে হচ্ছে শুনবেন? সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে মাত্র একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপে ডাউনলোড করার পর এক ২৮ বছরের যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
WhatsApp-এ স্টেগনোগ্রাফি প্রযুক্তির সাহায্যে ঘটছে এই প্রতারণা
এই প্রতারণার পেছনে ব্যবহৃত হয়েছে একটি উচ্চতর প্রযুক্তি, যার নাম স্টেগনোগ্রাফি (Steganography)। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একদম সাধারণ বা নিরীহ দেখানো ছবি বা ইমেজের মধ্যে লুকিয়ে দেওয়া হয় ম্যালিশিয়াস কোড। ব্যবহারকারী যখন সেই ছবি ডাউনলোড করে, তখন সেই কোড সক্রিয় হয়ে যায় এবং ব্যবহারকারীর মোবাইল ডিভাইসে সাইবার হামলা শুরু হয়। এর মাধ্যমে হ্যাকাররা সহজেই ডিভাইসে ঢুকে ব্যবহারকারীর আর্থিক তথ্য চুরি করে নিতে পারে।
6720mAh ব্যাটারি ও 50MP OIS ক্যামেরা সহ আসছে Motorola-র দুটি শক্তিশালী ফোন
এই স্ক্যামের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হল, ব্যবহারকারীকে কোনো অ্যাপ ইনস্টল করতে হয় না বা কোনো লিঙ্কে ক্লিক করতেও হয় না। কেবলমাত্র ছবি ডাউনলোড করলেই ঝুঁকি তৈরি হয়। হোয়াটসঅ্যাপে (WhatsApp) ছবি ডাউনলোড করাকে সাধারণ ব্যবহারকারীরা একেবারে সাধারণ বিষয় মনে করেন, কিন্তু এখন সেটিই হতে পারে চরম বিপদের কারণ। অধিকাংশ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এই ধরনের কোড চিহ্নিত করতে পারে না, ফলে এগুলিকে ঠেকানো বা সনাক্ত করা খুবই কঠিন।
একবার ছবি ডাউনলোড হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ম্যালওয়্যার অ্যাক্টিভ হয়ে যায় এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যেতে পারে একেবারে বিনা সাবধানতায়। এই ম্যালওয়্যার এমনভাবে তৈরি, যা অধিকাংশ নিরাপত্তা টুলসকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম।
স্ক্যাম থেকে বাঁচতে কী করবেন
এই ধরনের সাইবার আক্রমণ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে হোয়াটসঅ্যাপে (WhatsApp) অটো-ডাউনলোড ফিচার বন্ধ করে দিন। এর জন্য অ্যাপের Settings > Storage and Data-তে গিয়ে Media Auto-Download অপশনটি বন্ধ করতে হবে, যাতে কোনো ছবি বা মিডিয়া ফাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাউনলোড না হয়। এছাড়াও, অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কোনো ছবি ডাউনলোড করবেন না। প্রসঙ্গত, সাইবার প্রতারণা যত প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে, ততই সাবধান থাকা জরুরি। হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্রতিদিন ব্যবহৃত অ্যাপেও এখন নজরদারি ও সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।