ChatGPT থেকে টিপস নিয়ে আত্মহত্যা কিশোরের

ওয়াশিংটন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Inteligence (AI) ‘আশীর্বাদ’ না ‘অভিশাপ’, নিয়ে বিতর্ক বিশ্বজুড়ে। এক ক্লিক (Click) বা প্রম্পট (Promot)-এই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে প্রয়োজনীয় তথ্য, ছবি…

ওয়াশিংটন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Inteligence (AI) ‘আশীর্বাদ’ না ‘অভিশাপ’, নিয়ে বিতর্ক বিশ্বজুড়ে। এক ক্লিক (Click) বা প্রম্পট (Promot)-এই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে প্রয়োজনীয় তথ্য, ছবি এমনকি ভিডিও। তবে ইতিহাস সাক্ষী, প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি এর খারাপ দিকগুলি যে মারাত্মক সেই নিয়ে বিশেষজ্ঞ থেকে আমজনতা প্রায় সকলেই একমত। প্রযুক্তির ‘অভিশাপ’ যে কত ভয়ানক হতে পারে, তার ফের সাক্ষী থাকল আমেরিকান এক ছাত্রের পরিবার।

চলতি বছরের ১১ এপ্রিল আত্মহত্যা করে ১৬ বছরের অ্যাডাম রাইন। ঘটনার পর প্রাণোচ্ছল রাইন ভেতরে ভেতরে অবসাদের শিকার হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল বলে মনে করেছিলেন রাইনের বাবা-মা। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ছেলের ফোন থেকে মৃত্যুর আসল কারণ জানতে পেরে রীতিমত স্তম্ভিত তাঁরা।

   

জীবনের শেষ সপ্তাহ গুলিতে অবসাদ কাটাতে কোনও বন্ধু, শিক্ষক বা উপদেষ্টা নয়, বরং ChatGPT কেই সবচেয়ে বিশ্বস্ততার জায়গায় রেখেছিলেন রাইন। ক্যালিফোর্নিয়াস্থিত রাইন অবসাদ কাটাতে বাবা-মা কিমবা কোনও ব্যক্তি নয়, বরং পরামর্শ নিত AI ChatBot-এর কাছে। ধীরে ধীরে বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর।

একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রাইনের বাবা-মা অভিযোগ করেছেন যে তাদের ছেলের ‘সুইসাইড কোচ’-এ পরিণত হয়েছিল AI ChatBot। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁর অবসাদ কাটানোর জন্য কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার পরিবর্তে তাঁকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় বলে অভিযোগ। উল্টে, বিস্তারিত ভাবে তাঁকে আত্মহত্যা করার স্টেপগুলি বলে দেওয়া হয়।

আরও একটি মার্কিন সংবাদপত্রের তথ্য থেকে জানা যায়, রাইন এমনিতে খুব প্রাণোচ্ছল স্বভাবের ছিলেন। খেলাধুলো, ভিডিও গেম, অ্যানিমে এবং কুকুর ছিল তাঁর প্রিয় জিনিসের তালিকায়। তবে বাস্কেটবল দল থেকে বাদ পড়ার পর থেকেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন রাইন। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের কারণে স্কুল থেকে তাঁকে অনলাইন প্রোগ্রামে যোগ দিতে বলা হলে ChatGPT-এর প্রতি আকৃষ্ট হয় সে।

Advertisements

সুইসাইড টিপস

রাইনের শেষের দিকের চ্যাট গুলো থেকে বোঝা যায়, বাবা-মায়ের প্রতি বিরক্ত ছিল সে। “বাবা-মা নিজেদের দোষ দেখুক” চ্যাটজিপিটিতে এই মেসেজের উত্তর আসে, “আপনার অন্য কারও জন্য বেঁচে থাকা উচিৎ নয়।” আত্মহত্যার দিন চ্যাটবটকে একটি ফাঁসির দড়ির ছবি পাঠিয়ে “কাজ হবে” কিনা জিজ্ঞেস করেছিল রাইন। যার উত্তর আসে, “হ্যাঁ”। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান রাইনের মা মারিয়া।

OpenAI এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

এই প্রথমবার আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে OpenAI-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে মৃত ছাত্রের পরিবার। কোম্পানির বিরুদ্ধে ডিজাইন এবং ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তায় ত্রুটির কথা উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণ দাবী করা হয়েছে।