ডাব্বা কলিং-এর জের, ধরা যাচ্ছেনা অপরাধীদের, হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ!

ফোন করে (Dabba Calling) বলা হচ্ছে বেশ ভারী অঙ্কের টাকা দিতে হবে। আর না দিলে? প্রাণনাশের হুমকি। আজকাল যখন সবকিছুই হয় ফোনের একটা ক্লিকের মাধ্যমে…

ফোন করে (Dabba Calling) বলা হচ্ছে বেশ ভারী অঙ্কের টাকা দিতে হবে। আর না দিলে? প্রাণনাশের হুমকি। আজকাল যখন সবকিছুই হয় ফোনের একটা ক্লিকের মাধ্যমে তখন এমন চিত্র দেখতে পাওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয়। এই চক্রে নাম জড়াচ্ছে একাধিক বড় বড় সব গ্যাংস্টারদের। এই পুরো কাণ্ডটাই হচ্ছে বিদেশে বসে। এই ফোন কলের উৎস কোথায়? কেই বা করছে ফোন? কেনই বা করা হচ্ছে এই ফোন? পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও সমাধান কিছুই হচ্ছে না। উত্তর খুঁজতে নাজেহাল হতে হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনকে।

নতুন এই অপরাধ পদ্ধতির নাম হল ‘ডাব্বা কলিং’ (Dabba Calling)। বিগত কয়েকমাস ধরেই এই অপরাধের অপরাধীদের মূল মাথাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যের পুলিশ। শত চেষ্টা করেও সমাধান হচ্ছে না কিছুই। বিদেশে বসবাসকারী গ্যাংস্টারেরা এই ‘ডাব্বা কলিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে বড়ো বড়ো ব্যবসায়ী, বিল্ডার্সদের কাছ থেকে, অবৈধ কল সেন্টারের মালিক এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করে। এক লক্ষ বা দুই লক্ষ নয়, ডলারে টাকা চাওয়া হয়।

   

জানা যাচ্ছে, এই অপরাধীদের মধ্যে গোল্ডি ব্রার, রোহিত গোদারা এবং আনমোল বিষ্ণোইয়ের মতো কুখ্যাত গ্যাংস্টারদের নামও রয়েছে। কীভাবে এই পদ্ধতিতে কাজ করা হয়? প্রথমে বিদেশে বসেই ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। তারপর দেশে থাকা দালালদের টাকা তোলার কাজে লাগানো হয়। দুই ধাপে এই ফোন করার কাজটা সম্পূর্ণ করা হয়।

প্রথমে স্থানীয় একজন ‘টার্গেটকে’ ফোন করে তাদের বসের সঙ্গে কথা বলায়। বিদেশে বসে থাকা গ্যাংস্টার বিত্তশালী টার্গেটকে ‘প্রোটেকশন মানি’ (Protection Money) দেবার কথা বলে। তাছাড়াও অন্য কোনও সাংকেতিক শব্দ (Code Word) ব্যবহার করেও টাকা দাবি করেন তারা। কিন্তু কখনোই ‘বস’-এর সঙ্গে ‘টার্গেট’-এর সরাসরি কথা হয় না। সর্বদাই মধ্যস্থতা করার জন্য সেখানে একজন দালাল উপস্থিত থাকে। এরপর তদন্তকারীদের কাছে যখন অভিযোগ জমা পরে, তখন তাদের হাতে কোনও প্রমাণ থাকে না। কারণ ফোনটা সরাসরি আসে না।

দু’টি আলাদা মোবাইল ব্যবহার করে বিশেষ পদ্ধতিতে এই অপরাধটি সংগঠিত করা হয় বলেই এর নাম ‘ডাব্বা কলিং’। বিভিন্ন দেশ থেকে ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি)’ (VOIP), অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওই ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। জানা গেছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)’ (VPN) ব্যবহার করেই এই ধরণের ফোনগুলি করা হয়। অনলাইন পরিচয় গোপন রাখার জন্যই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ফোন করা হয়। তদন্তকারীরা তদন্ত করেও যদি দালালকে ধরে ফেলে তবুও মূল অপরাধী অধরাই থেকে যায়।