মানুষের মস্তিষ্কে ‘সুপারপাওয়ার’ আনবে Neuralink! বানরের মস্তিষ্কে সফল পরীক্ষা মাস্কের সংস্থার

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিবিদ ও ধনকুবের এলন মাস্কের (Elon Musk) সংস্থা Neuralink ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি সংস্থা এমন এক ব্রেন ইমপ্লান্ট ডিভাইস ‘Blindsight’-এর সফল পরীক্ষার দাবি করেছে,…

Neuralink Claims Success in Monkey Brain Test

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিবিদ ও ধনকুবের এলন মাস্কের (Elon Musk) সংস্থা Neuralink ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি সংস্থা এমন এক ব্রেন ইমপ্লান্ট ডিভাইস ‘Blindsight’-এর সফল পরীক্ষার দাবি করেছে, যা একটি বানরের মস্তিষ্কে স্থাপন করে তার মধ্যে কল্পনাতীত জিনিস দেখার ক্ষমতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। সংস্থার দাবি অনুযায়ী, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে দৃষ্টিহীন মানুষকেও দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে এবং এমন কিছুও দেখা সম্ভব হবে, যা বাস্তবে সামনে নেই। এটি মানবজাতিকে ‘সুপারপাওয়ার’-এর এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারে।

দৃষ্টির বিভ্রম তৈরি করল Neuralink-এর ‘Blindsight’

Neuralink-এর ইঞ্জিনিয়ার জোসেফ ও’ডোহার্টি সম্প্রতি এক কনফারেন্সে জানিয়েছেন, Blindsight নামক এই ব্রেন চিপ বানরের মস্তিষ্কে দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে যুক্ত অংশগুলিকে উত্তেজিত করে। গবেষকরা মস্তিষ্কে এমন সংকেত পাঠান, যা বাস্তবে কোনও বস্তু না থাকলেও বানর সেটিকে অনুভব করে দেখে ফেলছে বলে প্রতিক্রিয়া জানায়। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সময়েই বানর এমন কিছুর দিকে তাকিয়েছে, যা বাস্তবে ছিল না। কিন্তু মস্তিষ্কে প্রেরিত সংকেতের মাধ্যমে সে সেটির অস্তিত্ব ‘দেখেছে’।

   

কীভাবে কাজ করবে এই ব্রেন চিপ প্রযুক্তি?

Blindsight একটি অত্যাধুনিক ব্রেন ইমপ্লান্ট ডিভাইস, যা চোখের কাজ অনুকরণ করে। এটি মস্তিষ্কে সরাসরি ভিজ্যুয়াল ইনফরমেশন প্রেরণ করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। এলন মাস্ক নিজেই বছরের শুরুতে স্বীকার করেছেন, এই ডিভাইসটি কয়েক বছর ধরে বানরের ওপর পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এখন মানুষের ওপর ট্রায়াল শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। তবে, এই প্রযুক্তি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের মানব ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়নি। ফলে এখনও নিশ্চিত নয় যে, প্রাণীদের পরীক্ষায় পাওয়া ফলাফল মানবদেহেও একইরকম কার্যকর হবে কিনা।

WhatsApp-এ আসছে নতুন ডকুমেন্ট স্ক্যানার ফিচার, নিমেষে তৈরি করে পাঠানো যাবে PDF

Advertisements

নিউরালিঙ্ক জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে এই চিপটিকে একটি বিশেষ চশমার সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে, যাতে আরও উন্নত ভিজ্যুয়াল ডেটা প্রদর্শনের সুবিধা পাওয়া যায়। বানরের মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্স মস্তিষ্কের পৃষ্ঠে কাছাকাছি থাকায় তাদের উপর পরীক্ষা করা তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এটি অনেক গভীরে থাকে, তাই সেখানে চিপ স্থাপন করতে হবে বিশেষ সার্জিকাল রোবটের সাহায্যে। এই প্রযুক্তি শুধু অন্ধত্বের সমস্যাই নয়, ভবিষ্যতে আরও অনেক জটিল নিউরোলজিক্যাল কন্ডিশন নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

প্রসঙ্গত, Neuralink-এর Blindsight চিপ একদিকে যেমন চমকপ্রদ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, অন্যদিকে এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সম্ভাবনাও সৃষ্টি করছে। যদিও এখনো এটি বিকাশধীন এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে যদি এই প্রযুক্তি সফল হয়, তাহলে দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের জীবনে তা সত্যিই এক আলো নিয়ে আসবে – প্রযুক্তির মাধ্যমে কল্পনার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া যাবে বাস্তবে।