গোটা বিশ্বেই রয়েছে IPL 2024 উন্মাদনা। এবার আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে স্মার্ট রিপ্লে সিস্টেম ব্যবহার শুরু করেছে বিসিসিআই। এর আওতায় আটটি হাই-স্পিড ক্যামেরার মাধ্যমে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রতিটি কোণে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। এতে আম্পায়ারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।
স্মার্ট রিপ্লে সিস্টেম ছাড়াও, এমন ১০ টি প্রযুক্তি ক্রিকেটে ব্যবহার করা হয় যা এই গেমের স্টাইলকে বদলে দিয়েছে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে ক্রিকেট খেলা এবং দেখার অভিজ্ঞতা উন্নত হয়েছে। আপনিও যদি ক্রিকেটের অনুরাগী হয়ে থাকেন এবং ম্যাচগুলোর দিকে কড়া নজর রাখেন, তাহলে এই প্রযুক্তিগুলো সম্পর্কে জানা খুবই আকর্ষণীয় হবে। এর মধ্যে রয়েছে হক আই থেকে স্পাইডারক্যামের মতো প্রযুক্তি, যা ক্রিকেটে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
ক্রিকেটে ব্যবহৃত ১০টি প্রযুক্তি
1. স্মার্ট বেইলস এবং স্টাম্প: ক্রিকেটে, পিচে স্টাম্পের মধ্যে একটি ক্যামেরা ইনস্টল করা হয়। এ ছাড়া স্টাম্পের পেছনে মাটিতে চাপা পড়ে আছে একজন স্পিকার। এর সাহায্যে রানআউট হওয়ার পর সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। বোলারের হাত থেকে বল সরাসরি স্টাম্পে আঘাত করলে তা শনাক্ত করা হয় এবং স্টাম্পের পিছনে স্থাপিত স্পিকার ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে কি না তা সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এছাড়া স্মার্ট বেলের এলইডি যেকোনো কিছুতে আঘাত করলে জ্বলতে শুরু করে।
2. স্নিকোমিটার: এই প্রযুক্তিটি কাজ করে যখন বলটি বোলারের হাত থেকে চলে যায় এবং বলটি পিচে আঘাত করার সময় থেকে ব্যাটসম্যানের ব্যাটে আঘাত না হওয়া পর্যন্ত স্নিকোমিটার শব্দটি রেকর্ড করে। কখনও কখনও এই প্রযুক্তিটি খুব কার্যকর প্রমাণিত হয় যখন বলটি ব্যাটের খুব কাছাকাছি চলে যায়। স্নিকোমিটার বলে যে বল ব্যাটকে সামান্য স্পর্শ করেছে কি না।
3. বল স্পিন RPM: এই প্রযুক্তি বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য ব্যবহৃত হয়। একজন স্পিন বোলার কত বল স্পিন করে? বলটি বোলারের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কতটা সাঁতার কাটে? এই প্রযুক্তি মিনিটে মিনিটে বলে দেয়। এর মাধ্যমে আমরা টিভিতে বলের ঘূর্ণন সম্পর্কে জানতে পারি।
4. হক আই: হক আই এর কাজ হল এলবিডব্লিউ এর সিদ্ধান্ত দেওয়া। এটি দেখায় বলটি আসলে স্টাম্পে আঘাত করেছে কি না। এটি পরীক্ষা করার জন্য 6টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
বোলার যখন বোলিং করে, তখন এই 6টি ক্যামেরা বলের পথ ট্র্যাক করে এবং ৬টি ভিন্ন থ্রিD ছবি তৈরি করে, তারপর আম্পায়ার তাদের সবার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজটি সেকেন্ডে সম্পন্ন হয়।
5. স্পাইডারক্যাম: আপনি অবশ্যই অনেকবার ম্যাচে লণ্ঠনের মতো ক্যামেরা দেখেছেন। এই ক্যামেরাগুলিকে স্পাইডারক্যাম বলা হয় এবং আপনাকে অবশ্যই ড্রোন অর্থাৎ উড়ন্ত ক্যামেরা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে এগুলো ক্রিকেটেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এর কাজ হল উপর থেকে ক্রিকেট ম্যাচের উপর নজর রাখা। স্পাইডারক্যাম কেবল এবং তারের সাহায্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে এবং আমাদের ছক্কা এবং শটের পর্যালোচনা দেখাতে পারে।
6. আম্পায়ার ক্যামেরা: আপনি জেনে অবাক হবেন যে আম্পায়ার যে ক্যাপটি পরিধান করেন তাতেও একটি ক্যামেরা থাকে। আম্পায়াররা এটি পর্যালোচনার জন্য ব্যবহার করেন। আপনি নিশ্চয়ই অনেকবার দেখেছেন যে বলটি আম্পায়ারের কাছে গেলে তা স্পষ্ট দেখা যায়, এ সবই আম্পায়ারের ক্যাপে লাগানো ক্যামেরার অলৌকিক ঘটনা।
7. গ্রাফিক্স প্যাকেজ: টিভিতে আমাদের দেখানো স্কোর বোর্ড গ্রাফিক্স প্যাকেজ দিয়ে তৈরি। এতে ম্যাচের জন্য বিশেষ প্যাকেজ তৈরি করা হয়। এভাবে দর্শকদের ম্যাচের স্কোর, ব্যাটসম্যানের রেকর্ড এবং ক্যারিয়ার সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়।
8. HotSpot: এটি একটি কৌশল যাতে পর্যালোচনাগুলি কালো রঙে দেখানো হয়। বল ব্যাটকে কোথাও স্পর্শ করলে সেখানে সাদা দাগ তৈরি হয়। এতে বোঝা যায় ব্যাটের কোন অংশে বল স্পর্শ করেছে।
9. পিচ ভিশন: পিচ ভিশন দেখায় কোন ব্যাটসম্যান কোন বল খেলেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ম্যাচে নিক্ষিপ্ত প্রতিটি বল পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটি ব্যাটসম্যান এবং বোলার উভয়ের ত্রুটিগুলি এবং তাদের দুর্বলতাগুলিও প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে ব্যাটসম্যান ও বোলার উভয়েই তাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি করতে পারে।
10. স্পিডগান: আপনি অবশ্যই জানেন যে বিশ্বের দ্রুততম বল নিক্ষেপের রেকর্ডটি প্রাক্তন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারের নামে রয়েছে। শোয়েব ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার বেগে বল করেন। স্পিডগান এমন একটি প্রযুক্তি যা বলে বোলার কত দ্রুত বল করেছে।