গুগলের কোয়ান্টাম বিস্ফোরণ! ‘Quantum Echoes’-এ দুনিয়ার প্রথম সাফল্য

Google CEO Sundar Pichai announces a breakthrough quantum algorithm, “Quantum Echoes,” achieving the first verifiable quantum advantage with the Willow chip, 13,000x faster than classical supercomputers, opening doors to drug discovery and materials science.

ওয়াশিংটন, ২৩ অক্টোবর: প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ আরেক ধাপ এগিয়ে গেল গুগলের (Google) হাত ধরে। গুগল এবং অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই (@sundarpichai) জানালেন, তাঁদের নতুন কোয়ান্টাম চিপ Willow বিশ্বে প্রথমবারের মতো “verifiable quantum advantage” অর্জন করেছে। বৈজ্ঞানিক জার্নাল Nature-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে এই যুগান্তকারী সাফল্যের খবর।

Advertisements

গুগলের নতুন কোয়ান্টাম অ্যালগরিদমের নাম রাখা হয়েছে “Quantum Echoes”। সুন্দর পিচাইয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, এই অ্যালগরিদমটি উইলো চিপে চলেছে প্রচলিত সুপারকম্পিউটারের সেরা অ্যালগরিদমের তুলনায় প্রায় ১৩,০০০ গুণ দ্রুত। এর মাধ্যমে অণুর মধ্যে পরমাণুর পারস্পরিক ক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়েছে nuclear magnetic resonance পদ্ধতিতে। এই সাফল্য ভবিষ্যতে ড্রাগ ডিসকভারি (নতুন ওষুধ আবিষ্কার) এবং উন্নত উপাদান বিজ্ঞান (materials science)–এর ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

কেন এই আবিষ্কার বিশেষ?

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা রকম দাবি এবং তত্ত্ব উঠে এসেছে। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল—এই কম্পিউটারের ফলাফল কি সত্যিই যাচাইযোগ্য? এবার গুগল সেই দ্বন্দ্বের ইতি টানল। পিচাই জানিয়েছেন, উইলো চিপে চালানো এই অ্যালগরিদমের ফলাফল কেবল পুনরাবৃত্তিই নয়, বরং অন্য কোয়ান্টাম কম্পিউটার বা পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করাও সম্ভব। অর্থাৎ, এটি কেবল তাত্ত্বিক নয়, বরং ব্যবহারিকভাবে নির্ভরযোগ্য এক সাফল্য।

সম্ভাব্য প্রয়োগ ক্ষেত্র

১. ওষুধ গবেষণা (Drug Discovery): জটিল অণু কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে পারলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন ওষুধ তৈরির পথ অনেকটাই সহজ হবে।

২. উপাদান বিজ্ঞান (Materials Science): নতুন ধরনের ধাতু, সেমিকন্ডাক্টর বা শক্তিশালী উপাদান তৈরি সম্ভব হবে।

৩. শক্তি গবেষণা: পারমাণবিক শক্তি ও নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে নতুন সমাধান মিলতে পারে।

সুন্দর পিচাইয়ের প্রতিক্রিয়া

পিচাই এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে লিখেছেন,

Advertisements

“এই সাফল্য কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের প্রথম বাস্তব প্রয়োগের পথে বড় পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত, ভবিষ্যতে এটি আমাদের কোথায় নিয়ে যায় তা দেখার অপেক্ষায়।”

বিশ্ব প্রযুক্তি মহলে প্রতিক্রিয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে প্রথমবারের মতো একটি ‘বাস্তব সমস্যার কার্যকর সমাধান’ মিলেছে। এতদিন পর্যন্ত কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ছিল মূলত পরীক্ষামূলক, তবে এখন এর ব্যবহারিক সম্ভাবনা স্পষ্ট হলো।

গুগলের এই সাফল্য প্রযুক্তির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখতে পারে। আগামী দিনে স্বাস্থ্য, শক্তি ও মহাকাশ গবেষণার মতো জটিল খাতে এর ব্যবহার বিশ্বকে আমূল পাল্টে দিতে পারে। কোয়ান্টাম কম্পিউটিং আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নয়, বরং বাস্তবতার কাছাকাছি পৌঁছে গেল।