কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অভিনেতাদের ভয়, শেষ কি ক্যারিয়ার?

হলিউডের চলচ্চিত্র (Actors) শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডিপফেক প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নিয়ে উত্তেজনা ও উদ্বেগ দুই-ই বাড়ছে। ডিপফেক প্রযুক্তি, যা এআই-এর মাধ্যমে মানুষের মুখ,…

Actors carrier in threat

হলিউডের চলচ্চিত্র (Actors) শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডিপফেক প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নিয়ে উত্তেজনা ও উদ্বেগ দুই-ই বাড়ছে। ডিপফেক প্রযুক্তি, যা এআই-এর মাধ্যমে মানুষের মুখ, কণ্ঠ এবং অভিনয়কে কৃত্রিমভাবে তৈরি বা পরিবর্তন করতে পারে, হলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখন তাই গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই আধুনিকতম প্রযুক্তির দিকে।

ডিপফেক প্রযুক্তির উত্থান

ডিপফেক প্রযুক্তি (Actors) হলিউডে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি ব্যবহার করে বয়স্ক অভিনেতাদের চেহারা তরুণ করা, মৃত অভিনেতাদের পর্দায় ফিরিয়ে আনা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৫৫ সালে মৃত জেমস ডিনকে এআই-এর মাধ্যমে নতুন ছবি ‘ব্যাক টু এডেন’-এ প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে।

   

এছাড়া, ‘রোগ ওয়ান: আ স্টার ওয়ার্স স্টোরি’ ছবিতে ক্যারি ফিশার এবং পিটার কুশিংয়ের তরুণ চেহারা ডিপফেকের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। এমনকি ‘দ্য ইরিশম্যান’-এ রবার্ট ডি নিরোর বয়স কমানোর জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এই প্রযুক্তি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করলেও, এটি অভিনেতাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভিনেতাদের জন্য হুমকি (Actors)

ডিপফেক প্রযুক্তি অভিনেতাদের (Actors) চাকরির নিরাপত্তার উপর প্রশ্ন তুলেছে। হলিউডের অভিনেতা ও লেখকদের সংগঠন, যেমন স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড (SAG-AFTRA), এই প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন। ২০২৩ সালে হলিউডে অভিনেতা ও লেখকদের ধর্মঘটে এআই এবং ডিপফেকের ব্যবহার অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল।

অভিনেতারা (Actors) আশঙ্কা করছেন যে তাদের চেহারা এবং কণ্ঠের ডিজিটাল প্রতিরূপ তৈরি করে স্টুডিওগুলো তাদের সম্মতি বা ন্যায্য পারিশ্রমিক ছাড়াই ব্যবহার করতে পারে। এই প্রযুক্তি অভিনেতাদের মুখ, কণ্ঠ এবং ব্যক্তিত্বের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় তৈরি করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, টম হ্যাঙ্কস বলেছেন, “আমি কাল বাসের ধাক্কায় মারা গেলেও আমার অভিনয় চলতে থাকবে।” এই প্রযুক্তির ফলে অভিনেতারা তাদের মৃত্যুর পরেও চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে পারেন, যা নৈতিক ও আইনি প্রশ্ন উত্থাপন করে।

নৈতিক ও আইনি উদ্বেগ

ডিপফেক প্রযুক্তি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে। মৃত্যুর পর কারও মুখ, কণ্ঠ এবং ব্যক্তিত্বের অধিকার কার? অভিনেতারা (Actors) কীভাবে তাদের ইমেজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখবেন? উদাহরণস্বরূপ, কোনো গ্রিটি ড্রামায় অভিনয় করা অভিনেতার ইমেজ কি কমেডি বা অনৈতিক ছবিতে ব্যবহার করা যেতে পারে?

Advertisements

এই প্রযুক্তি অভিনেতাদের (Actors) সৃজনশীলতা ও স্বাধীনতাকে সীমিত করতে পারে। এছাড়া, অভিনেতাদের সম্মতি ছাড়া তাদের ইমেজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক ও কপিরাইট আইনের জটিলতা রয়েছে। হলিউড স্টুডিওগুলোর প্রস্তাবিত চুক্তি, যা অভিনেতাদের ইমেজের অসীমিত অধিকার দেওয়ার কথা বলে, তা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

চলচ্চিত্রে ডিপফেকের সুবিধা

ডিপফেক প্রযুক্তি চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যয় ও সময় বাঁচায়। ডিজনি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘রোগ ওয়ান’-এ তরুণ প্রিন্সেস লিয়া এবং গ্র্যান্ড মফ টার্কিনের চরিত্র তৈরি করেছে। ‘দ্য ইরিশম্যান’-এ ডি-এজিংয়ের জন্য ডিপফেক (Actors) ব্যবহার করা হয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী সিজিআই-এর তুলনায় কম খরচে নির্মিত। এছাড়া, ভাষার বাধা দূর করতে ডিপফেক ব্যবহার করা হচ্ছে, যেমন ডেভিড বেকহামের ম্যালেরিয়া নো মোর প্রচারণায় নয়টি ভাষায় বার্তা দেওয়া।

অভিনেতাদের ভবিষ্যৎ

ডিপফেক প্রযুক্তি কি অভিনেতাদের (Actors)সম্পূর্ণ প্রতিস্থাপন করবে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এআই দ্বারা সম্পূর্ণ ফটোরিয়ালিস্টিক দৃশ্য তৈরি করা এখনও অনেক দূরের পথ। অভিনেতার অভিনয়, মুখের অভিব্যক্তি এবং আবেগ এখনও অপরিহার্য। তবে, প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অভিনেতাদের ভূমিকা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে নতুন ও পটভূমির অভিনেতাদের ক্ষেত্রে।

কেন্দ্রীয় বনাম রাজ্য সরকারের বেতনের ব্যবধান! বেতন কমিশনের পর ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণ

ডিপফেক প্রযুক্তি হলিউডে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এলেও এটি অভিনেতাদের (Actors) জন্য হুমকি এবং নৈতিক প্রশ্ন তৈরি করছে। অভিনেতা ও স্টুডিওগুলোর মধ্যে চুক্তি এবং আইনি সুরক্ষা এই প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে, এআই এবং মানুষের অভিনয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।