বর্তমানে সোনার দাম রীতিমতো আকাশছোঁয়া। দেশের বাজারে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার মূল্য ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফলে অনেক বিনিয়োগকারী এখন সোনায় বিনিয়োগ করার ব্যাপারে দ্বিধান্বিত। একদিকে যেমন সোনার মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিনিয়োগের খরচ বেড়েছে, অন্যদিকে তেমনই মূল্য সংশোধনের আশঙ্কাও থেকেই যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে রুপোর চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন করে রুপোর (Silver) দিকেই ঝুঁকছেন। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে—বর্তমান বাজারে রুপো সস্তা হলেও তার সম্ভাব্য রিটার্ন ভবিষ্যতে অনেক বেশি হতে পারে। অনেক মার্কেট এক্সপার্টের মতে, ২০২৫ সালে রুপোর দাম ১.৫ গুণ থেকে ২ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ফলে এখন রুপোতে বিনিয়োগ করলে আগামী ১–২ বছরের মধ্যে লাভের পরিমাণ হতে পারে চোখ ধাঁধানো।
সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স (পূর্বে ট্যুইটার)-এ কিয়োসাকি বলেছেন যে, বহু বছর ধরেই তিনি সোনা, রুপো ও বিটকয়েনে বিনিয়োগ করার উপর জোর দিয়ে আসছেন। কিন্তু রুপোর দাম এখন ৩৫ ডলার প্রতি আউন্সে রয়েছে, যা চলতি বছরের শেষের দিক নাগাদ দ্বিগুণ অর্থাৎ প্রায় ৭০ ডলার হয়ে যেতে পারে।
২০২4 সালের শেষ থেকেই সোনার দাম ধীরে ধীরে বেড়েছে এবং ২০২৫-এর প্রথমার্ধে তা ₹১ লক্ষের উপরে গিয়ে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির আগ্রহ, ডলারের মূল্য ওঠানামা, আন্তর্জাতিক মন্দা পরিস্থিতি এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা—এই সব কিছু মিলিয়ে সোনার প্রতি চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনই তার মূল্যও ঊর্ধ্বগামী হয়েছে।
রুপো শুধু অলংকার নয়, বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়—বিশেষ করে সৌর প্যানেল, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও ইলেকট্রনিক্সে। ভবিষ্যতে ইভি ও রিনিউএবল এনার্জির প্রসার বাড়লে রুপোর চাহিদা আরও তুঙ্গে উঠবে, ফলে তার মূল্যও বাড়বে—এমনটাই মত একাধিক বিশ্লেষকের।
মুম্বইয়ের এক নামী মার্কেট অ্যানালিস্ট বলেন, “সোনার দামে এখন সাময়িক সংশোধনের সম্ভাবনা রয়েছে, আর রুপো অনেকটাই আন্ডারভ্যালুয়ড। তাই দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য এখন রুপোতে বিনিয়োগ করাই যুক্তিযুক্ত।”
বর্তমানে রুপোতে বিনিয়োগ করার নানা উপায় রয়েছে—
ফিজিক্যাল সিলভার (মুদ্রা বা বার)
সিলভার ETF
সিলভার ফিউচার্স বা কমোডিটি মার্কেট
ডিজিটাল সিলভার ইনভেস্টমেন্ট অ্যাপস
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যারা ডাইভারসিফায়েড পোর্টফোলিও তৈরি করতে চান, তারা এখনই রুপোর দিক নজর দিন।
যদিও সোনা দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ বিনিয়োগের প্রতীক, তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে রুপো হয়ে উঠতে পারে ‘গেমচেঞ্জার’। রুপোর দামে উল্লম্ফনের সম্ভাবনা এবং শিল্পক্ষেত্রে তার ক্রমবর্ধমান চাহিদা এটিকে একটি লাভজনক বিকল্প করে তুলেছে। তাই ‘ভুলে যান সোনা’—এই কথাটি হয়তো এখন একেবারে যুক্তিসঙ্গত। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই হতে পারে ভবিষ্যতের বড় লাভের চাবিকাঠি।