ভারতীয় শেয়ার বাজারে আজ ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। সেনসেক্স এবং নিফটি সূচক উভয়ই ইতিবাচক সুরে শুরু হয়েছে, যেখানে সূচকের বৃদ্ধি হয়েছে ভারতের মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত ইতিবাচক তথ্যের প্রেক্ষিতে। আজকের বাজারে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে দেশের মুদ্রাস্ফীতি তথ্য, যা সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে, যদিও মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত উদ্বেগ বিশ্ব বাজারে ঝুঁকির অনুভূতি তৈরি করেছে।
ভারতের জানুয়ারি মাসের মুদ্রাস্ফীতি ৪.৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ডিসেম্বরের ৫.২ শতাংশের তুলনায় কম। এটি পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই তথ্য বাজারে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, কারণ এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) থেকে আরও একটি সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা এসেছে, যা বাড়িয়ে দিয়েছে শেয়ার বাজারের গতি।
তবে, এই ইতিবাচক সুর সাময়িকভাবে ঠান্ডা হয়ে যায় মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত উদ্বেগের কারণে। জানুয়ারিতে মার্কিন ভোক্তা মুল্যসূচক (CPI) ০.৫ শতাংশ বেড়ে গিয়ে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ৩ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ডিসেম্বর মাসে ছিল ২.৯ শতাংশ। ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পওয়েলও তার বক্তব্যে বলেন, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় তাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি, যা আসন্ন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে কমিয়ে দিয়েছে।
আজ সকাল ১০টায়, সেনসেক্স ৪২৪.৪৫ পয়েন্ট বা ০.৫৬ শতাংশ বেড়ে ৭৬,৫৯৫.৫৩ এ পৌঁছেছে, এবং নিফটি ১৩৪.২০ পয়েন্ট বা ০.৫৮ শতাংশ বেড়ে ২৩,১৭৯.৪৫ এ পৌঁছেছে। সার্বিকভাবে, ২,১৯০টি শেয়ার বৃদ্ধি পেয়েছে, ৯২৮টি শেয়ার কমেছে, এবং ১২৫টি শেয়ার অপরিবর্তিত ছিল। এই ধরনের একটি ইতিবাচক প্রবণতা বাজারে আসার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে আর্থিক, অটোমোবাইল এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের শেয়ারের উত্থান।
আজকের সেক্টর ভিত্তিক আপডেটে, সিপলা, ডক্টর রেড্ডি’স, কোটাক মাহিন্দ্রা, বাজাজ ফিনসার্ভ এবং সান ফার্মা নিফটিতে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, টেক মাহিন্দ্রা, আইশার মোটর, টাটা কনজিউমার, হিরো মোটোকর্প এবং হিন্দালকো সবচেয়ে বড় পতন দেখেছে, যেখানে তাদের শেয়ার প্রায় ১ থেকে ২ শতাংশ কমেছে।
ব্রডার মার্কেটে, BSE মিডক্যাপ সূচক ০.২ শতাংশ বেড়েছে, এবং BSE স্মলক্যাপ সূচক ০.৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে, স্মলক্যাপ সূচক এখনও তার সর্বকালের উচ্চতায় প্রায় ১৯ শতাংশ কম।
ভারতের মুদ্রাস্ফীতি কমে আসায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিললেও, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি এবং ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তের দিকে নজর রাখতে হবে। সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলোর নীতিমালা নির্ধারণের সময় দেশে এবং বিদেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে, যা শেয়ার বাজারের জন্য একটি মূল নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।
অতএব, বাজারের সামনের দিকে তাকালে, এটি পরিষ্কার যে বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে শেয়ার বাজারের অস্থিরতা বাড়তে বা কমতে পারে। তবে বর্তমানে ভারতীয় বাজারে যে ইতিবাচক প্রবণতা চলছে, তা সামগ্রিকভাবে একজন বিনিয়োগকারীর জন্য উপকারী বলে মনে হচ্ছে।