ভারতীয় শেয়ারবাজার শুক্রবার সামান্য নিম্নমুখী প্রবণতায় সপ্তাহের শেষ দিনটি শেষ করল। সেনসেক্স ও নিফটি—দুই সূচকই অল্প পতনে বন্ধ হলেও দিনের লেনদেন ছিল ওঠানামায় ভরপুর।
বাজারের সার্বিক চিত্র:
শুক্রবারের ট্রেডিং শেষে বিএসই সেনসেক্স ৮৫,৬৯৪.৯৬ পয়েন্টে গিয়ে থামে, যা আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট কম। অপরদিকে এনএসই নিফটি ২৬,২০৪.৮৫ পয়েন্টে বন্ধ হয়, যা ১০ পয়েন্ট নিম্নমুখী।
সেনসেক্সের ৩০-শেয়ারের প্যাকের মধ্যে দিনভর আংশিক পুনরুদ্ধার দেখা গেল।
শীর্ষ গেইনার হিসেবে উঠে আসে—
মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা,
সান ফার্মা,
কোটাক ব্যাংক,
স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া,
হিন্দুস্তান ইউনিলিভার।
অন্যদিকে ল্যাগার্ড হিসেবে ছিল—
মারুতি,
টাইটান,
টাটা স্টিল,
এনটিপিসি,
আইসিআইসিআই ব্যাংক।
দিনের লেনদেনের ওঠানামা:
বাজার সকালে নিস্তেজ সূচনাই করে। সেনসেক্স ৮৫,৬৫০-এর কাছাকাছি খুলে ৫০ পয়েন্টের বেশি পতন দেখেছিল। নিফটিও ২৬,২০০-এর নিচে নেমে ট্রেডিং শুরু করে, প্রায় ২৫ পয়েন্ট নিচে।
তবে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাজারে কিছুটা গতি ফিরে আসে। সকাল ৯:২০-র মধ্যে সেনসেক্স ৮৫,৮০০-এর উপরে, আর নিফটি ২৬,২০০-এর ওপরে উঠে পজিটিভ অঞ্চলে প্রবেশ করে। দিনের বেশ কয়েকটি সেশনে বাজার সবুজে থাকলেও শেষে তা লাভ টিকিয়ে রাখতে পারেনি।
গ্লোবাল মার্কেটের প্রভাব:
ওয়াল স্ট্রিটে থ্যাঙ্কসগিভিং ছুটির কারণে মার্কিন বাজার বন্ধ থাকায় ভারতীয় শেয়ারবাজার মূলত দেশীয় সংকেতের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
মেহতা ইকুইটিজ লিমিটেড-এর সিনিয়র ভিপি (রিসার্চ) প্রাশান্ত তাপসে জানান,
সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা—
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ
রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া
—এই দুইয়ের প্রত্যাশায় বাজারে ইতিবাচক মনোভাব বজায় ছিল।
পাশাপাশি ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা বাজারে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
এশিয়ার বাজারে মিশ্র ইঙ্গিত দেখা গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি, জাপানের নিক্কেই ২২৫ এবং হংকংয়ের হ্যাং সাঙ সূচক সবগুলোই নিম্নমুখী ছিল, কেবল চীনের সাংহাই এসএসই কম্পোজিট সামান্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
বিনিয়োগ প্রবাহ:
বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার ফের বিক্রেতা হিসেবে ফিরে আসে এফআইআইরা। তারা মোট
১,২৫৫.২০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
অন্যদিকে ডিআইআইরা ৩,৯৪০.৮৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনে বাজারে শক্তিশালী সাপোর্ট দেয়।
শেষ কথা:
সামগ্রিকভাবে বাজারে অস্থিরতা থাকলেও দেশীয় অর্থনৈতিক তথ্য, সুদের হারে সম্ভাব্য পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ আগামী সপ্তাহে বাজারের দিক নির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে বলে বিশ্লেষকদের মত।
