গত শুক্রবার ভারতের শেয়ারবাজারে তীব্র ওঠানামার মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়েছে। বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (BSE) সেনসেক্স ৮১,২০৭.১৭ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ২২৩.৮৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (NSE) নিফটি ৫০ সূচক ২৪,৮৯৪.২৫ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, যা ৫৭.৯৫ পয়েন্ট বেড়েছে।
দিন শুরুতে পতন, পরে বাজারে স্বস্তি:
শুক্রবার সকাল ৯:১৫ মিনিটের সময় সেনসেক্স ৮০,৮৭৯ পয়েন্টে খোলা হয় এবং প্রাথমিকভাবে ১০০ পয়েন্টের বেশি পতনের মুখোমুখি হয়। নিফটি সূচকও ২৪,৮০০ পয়েন্টের ওপরে খোলার পর প্রাথমিকভাবে ৩৪ পয়েন্ট নিচে আসে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি তহবিল (FII) ক্রমাগত বিক্রি এবং প্রধান ব্যাংক শেয়ারের চাপ এই পতনের মূল কারণ।
শীর্ষ বৃদ্ধিকারী ও ক্ষতিগ্রস্ত শেয়ার: Sensex Nifty Closes Higher
বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবারের বাজারে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে টাটা স্টিল, পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, কোটাক ব্যাংক, এক্সিস ব্যাংক এবং এল অ্যান্ড টি। অন্যদিকে, মহেন্দ্রা অ্যান্ড মহেন্দ্রা (M&M), ইনফোসিস, এইচডিএফসি ব্যাংক, আদানি পোর্টস, ট্রেন্ট, টাটা মোটরস ও আইটিসি শেয়ারগুলো নেগেটিভ দিক থেকে প্রভাবিত হয়েছে।
বৃহত্তর বাজারের অবস্থা:
বৃহত্তর বাজারের সূচকগুলোর দিকে নজর দিলে, নিফটি মাইক্রোক্যাপ ২৫০ সূচক ২৩,৫১১.৮০ পয়েন্টে ১.৩৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। খাতভিত্তিক সূচকে, নিফটি হেলথকেয়ার সূচক ১৪,২৮৭.২০ পয়েন্টে ০.২২ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে, আর নিফটি মেটাল সূচক ১০,২৭৭.১০ পয়েন্টে ১.৮২ পয়েন্ট বেড়েছে।
মঙ্গলবারের পুনরুদ্ধারের প্রভাব:
এর আগে বুধবারের শেষ সেশনে বাজারে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা গিয়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (RBI) নীতি হার অপরিবর্তিত রাখে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৮ শতাংশে সংশোধন করে। সেই দিন সেনসেক্স ৭১৫ পয়েন্টের উত্থান ঘটিয়ে ৮০,৯৮৩ পয়েন্টে বন্ধ হয়, আর নিফটি ২২৫ পয়েন্ট বেড়ে ২৪,৮৩৬ পয়েন্টে শেষ হয়।
বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগের প্রভাব:
বাজারে বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগের পার্থক্যও সূচকের ওঠানামার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বুধবার FII ১,৬০৫.২০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছিল, যেখানে DII ২,৯১৬.১৪ কোটি টাকার শেয়ার ক্রয় করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের বিনিয়োগের পার্থক্য বাজারকে স্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করায় প্রভাবিত করে।
বাজারের সামগ্রিক চিত্র:
শুক্রবারের শেয়ারবাজারে দিন শুরুতে পতনের পর মধ্যাহ্নের পরে সূচকগুলো সবুজে ফিরে আসে। বিশেষ করে টাটা স্টিল, কোটাক ব্যাংক, এল অ্যান্ড টি এবং পাওয়ার গ্রিডের মতো কোম্পানির শেয়ারগুলো ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী সপ্তাহে শেয়ারবাজারের দিকনির্দেশনা নির্ভর করবে বিদেশি তহবিলের প্রবাহ, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি এবং দেশীয় নীতিমালার ওপর।