Retail inflation: ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির খবর, রিটেল মুদ্রাস্ফীতি ২.০৭% বাড়ল

ভারতের ভোক্তা মূল্যের সূচক (Consumer Price Index বা CPI) অনুযায়ী দেশের রিটেল মুদ্রাস্ফীতি (Retail Inflation) আগস্ট ২০২৫ এ সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২.০৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি…

India Retail Inflation

ভারতের ভোক্তা মূল্যের সূচক (Consumer Price Index বা CPI) অনুযায়ী দেশের রিটেল মুদ্রাস্ফীতি (Retail Inflation) আগস্ট ২০২৫ এ সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২.০৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি জুলাই মাসের তুলনায় ৪৬ বেসিস পয়েন্টের বৃদ্ধিকে নির্দেশ করছে। পরিসংখ্যান ও প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন মন্ত্রক শুক্রবার এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

জুলাই মাসে Retail Inflation ১.৫৫ শতাংশে

মন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক (All India Consumer Food Price Index বা CFPI) ভিত্তিক বছরের তুলনায় খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি -০.৬৯ শতাংশ। গ্রামীণ অঞ্চলে এটি -০.৭০ শতাংশ এবং শহুরে অঞ্চলে -০.৫৮ শতাংশ হিসেবে ধরা হয়েছে। তবে, জুলাই মাসে রিটেল মুদ্রাস্ফীতি ১.৫৫ শতাংশে নেমে আসে, যা জুন ২০১৭ সালের পর সর্বনিম্ন।

   

মুদ্রাস্ফীতির সামান্য বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে বিশেষ করে সবজি, মাছ ও মাংস, তেল ও চর্বি, ডিম ইত্যাদির মূল্য বৃদ্ধিকে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যাচ্ছে, খাদ্যপণ্যের দাম সামান্য হলেও বাড়ার কারণে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতিতে প্রভাব পড়েছে।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে আগস্টে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা গেছে। এর মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি রাজ্য হলো: কেরালা, কর্ণাটক, জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু। এই রাজ্যগুলিতে মূলত সবজি ও প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

India's Retail Inflation
India’s Retail Inflation

তবে, দেশের মুদ্রাস্ফীতি এখনও রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) নিয়ন্ত্রণযোগ্য সীমা ২-৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই অবস্থায় RBI মূলত অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে সমর্থন করার দিকে মনোযোগ দিতে পারবে। ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ প্রায় পাঁচ বছরের বিরতির পর RBI প্রথমবারের মতো রেপো রেট (Repo Rate) কমিয়েছিল। এর আগে এটি ৬.৫ শতাংশে স্থিতিশীল রাখা হয়েছিল, যা একেবারে দীর্ঘ সময় ধরে অপরিবর্তিত ছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সামান্য মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির পরও মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। অর্থনীতির সামগ্রিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে RBI-এর সম্প্রতি নেওয়া রেপো রেট কমানোর পদক্ষেপ একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাসও সামান্য হ্রাস করে ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৩.৭ শতাংশ ধরা হয়েছে। যদি মৌসুমি বৃষ্টি স্বাভাবিক থাকে, তবে প্রথম প্রান্তিকে (Q1) গড় মুদ্রাস্ফীতি ২.৯ শতাংশ, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (Q2) ৩.৪ শতাংশ, তৃতীয় প্রান্তিকে (Q3) ৩.৯ শতাংশ এবং চতুর্থ প্রান্তিকে (Q4) ৪.৪ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকি সমানভাবে বিতরণ থাকবে।

খাদ্যপণ্যের দাম কমে যাওয়ায় রীতিমতো ভোক্তাদের স্বস্তি মিলেছে। সরকার এবং RBI-র নীতি অনুযায়ী, রিটেল মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৪ শতাংশের কাছাকাছি রাখাই লক্ষ্য। বিশেষ করে ভারতের মতো বৃহৎ দেশ যেখানে কৃষি ও খাদ্যপণ্যের উপর মানুষের দৈনন্দিন জীবন নির্ভরশীল, সেখানে খাদ্য মূল্য স্থিতিশীল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থনীতিবিদরা আরও মনে করছেন, যদি খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং মৌসুমি বৃষ্টি স্বাভাবিক থাকে, তবে বছরের শেষের দিকে মুদ্রাস্ফীতির গতি কিছুটা বাড়লেও তা RBI-র লক্ষ্যসীমার মধ্যে থাকবে। এটি দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও বাজার স্থিতিশীলতার জন্য সুখবর।

আগস্টে রিটেল মুদ্রাস্ফীতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এটি এখনও RBI-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খাদ্যপণ্যের দামের সামান্য ওঠানামি ও কিছু রাজ্যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি থাকলেও সামগ্রিক অর্থনীতি ও ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার জন্য পরিস্থিতি ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।