মুম্বই, ২ অক্টোবর ২০২৫: দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় আলোড়ন ফেলে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-এর একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট। প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, ২০০০ টাকার নোটের প্রায় ৯৮.৩৫% ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে ফিরে এসেছে। এর আর্থিক মূল্য প্রায় ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে এখনো জনগণের হাতে প্রচলনে রয়েছে মাত্র ৫,৮৮৪ কোটি টাকার নোট।
এই রিপোর্টটি প্রথমে ইন্ডিয়ান ইনফ্রা রিপোর্ট-এর একটি পোস্টে উল্লেখিত হয় এবং দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে।
নোটের ইতিহাস
২০০০ টাকার নোট প্রথম চালু হয় ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে, ডিমনেটাইজেশনের সময় ৫০০ ও ১,০০০ টাকার পুরোনো নোট বাতিলের পর। উদ্দেশ্য ছিল নগদের ঘাটতি পূরণ করা এবং কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে আনা। তবে ২০২৩ সালের মে মাসে RBI ঘোষণা করে যে, ২০০০ টাকার নোট ধাপে ধাপে প্রচলন থেকে তুলে নেওয়া হবে। যদিও এটি এখনো বৈধ মুদ্রা এবং RBI-এর নির্দিষ্ট ১৯টি কার্যালয়ে জমা বা বিনিময় করা যাচ্ছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
রিপোর্ট প্রকাশের পর নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
- কেউ মনে করছেন, এখনো বাকি থাকা ৫,৮৮৪ কোটি টাকার নোটগুলো হয়তো কালো টাকা হিসেবে লুকিয়ে রাখা হয়েছে, যা কেবল তদন্ত সংস্থা যেমন ED-র হাতেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
- আবার অনেকে পরিবেশগত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ফেরত আসা নোটগুলো ধ্বংস করলে প্রচুর কাগজ নষ্ট হবে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মত
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
- অনেকের মতে, ৯৮% এর বেশি নোট ব্যাঙ্কে ফেরত আসা জনগণের সহযোগিতার প্রমাণ, যা সরকারের নীতির সাফল্য নির্দেশ করে।
- অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, এই উদ্যোগ কালো টাকা রুখতে সফল হয়নি। ২০১৬ সালের ডিমনেটাইজেশনেও প্রায় ৯৯% নোট ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছিল, যা তখন বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ধ্বংসিত নোটগুলো পরিবেশবান্ধব পুনর্ব্যবহার করা জরুরি। পাশাপাশি, সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং RBI-এর নীতি দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশ করবে।
এই রিপোর্ট স্পষ্ট করেছে যে, ২০০০ টাকার নোট প্রায় পুরোপুরি সিস্টেমে ফেরত এলেও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে—যে নোট এখনো ফেরেনি, তা কোথায়?