রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) সোনার ধাতু ঋণ (Gold Metal Loan – GML) সংক্রান্ত চূড়ান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নতুন নিয়মে সোনার আমদানি, বিক্রি ও অলঙ্কার উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ পাওয়ার সুযোগ আরও সহজ ও সম্প্রসারিত হয়েছে। আরবিআই এর সংশোধিত নির্দেশিকা এসেছে ‘মাস্টার ডাইরেকশন – আমদানি নীতি’ এবং ‘গোল্ড মনিটাইজেশন স্কিম (GMS)’–এ পরিবর্তন আনার মাধ্যমে। এর লক্ষ্য হচ্ছে জুয়েলারি ব্যবসায়ের তরলতা বৃদ্ধি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জোরদার করা এবং পুরো ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
জুয়েলারদের জন্য ঋণের পরিধি বাড়লো:
নতুন নীতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যে ব্যাংকগুলো স্বর্ণ আমদানি করে তারা দেশীয় ও রপ্তানি বাজারের জুয়েলারি প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতাদের GML দিতে পারবে। এবার শুধু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানই নয়, যারা নিজেরা উৎপাদন করে না তারাও ঋণ নিতে পারবে। তবে শর্ত হলো—তাদের উৎপাদনের কাজ নিবন্ধিত কারিগর, সোনা-কারিগর বা অনুমোদিত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে “জব-ওয়ার্ক” ভিত্তিতে দিতে হবে।
আরবিআই বলেছে, “স্বর্ণ আমদানিকারক নির্দিষ্ট ব্যাংকগুলো কেবল প্রস্তুতকারীই নয়, বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানকেও এই ঋণ দিতে পারবে, তবে উৎপাদন outsourcing করতে হবে বৈধ কারিগর বা প্রস্তুতকারকের কাছে।”
গোল্ড মনিটাইজেশন স্কিমের (GMS) অধীনে অতিরিক্ত সুবিধা:
গোল্ড মনিটাইজেশন স্কিম চালু করা ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন সুবিধাও ঘোষণা করা হয়েছে। এসব ব্যাংক GMS–এর সঙ্গে যুক্ত GML ইস্যু করতে পারবে জুয়েলারদের জন্য। বিশেষভাবে MMTC–কেও ঋণ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাদের কাজ ‘ইন্ডিয়া গোল্ড কয়েন’ মুদ্রণ।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও যোগ্যতা যাচাই:
ব্যাংকগুলোকে ঋণের ওপর আলাদা নীতি বানাতে হবে, যেখানে থাকবে—
ঋণগ্রহীতার শ্রেণিবিভাগ,
প্রতিটি গ্রাহকের জন্য কত পরিমাণ স্বর্ণ ঋণ দেওয়া যাবে,
মোট ঋণ সীমা।
এছাড়া গ্রাহকের যোগ্যতা, ঋণের প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রেডিট মূল্যায়ন কীভাবে করা হবে তা নিয়েও স্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করতে হবে। GML–এ দেওয়া ঋণ অন্যান্য ঋণ পণ্যের মতোই মূলধন পর্যাপ্ততা ও প্রুডেনশিয়াল নর্ম মেনে চলবে।
ফলাফল:
এই পরিবর্তনের ফলে:
সোনার বাজারে আরও তারল্য সৃষ্টি হবে,
জুয়েলারি শিল্পে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ বাড়বে,
স্বর্ণ ঋণের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও নজরদারি বাড়বে।
সার্বিকভাবে আরবিআই–এর এই নীতি ভারতের সোনা–ভিত্তিক ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও সুসংহত ও আধুনিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
