ভারতে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া দীর্ঘদিনের প্রচলিত প্রথা। এবার সেই ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত করতে বড় পদক্ষেপ নিল রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে সোনার পাশাপাশি রুপাও ঋণের জামানত হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে সমস্ত নিয়ন্ত্রিত ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান—ব্যাংক, এনবিএফসি, কো-অপ ব্যাংক থেকে হাউসিং ফাইন্যান্স কোম্পানিও।
৬ জুন ঘোষিত এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, দেশে সোনা–রুপোর ঋণ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, মানসম্মত ও ঋণগ্রহীতাবান্ধব করাই RBI–র লক্ষ্য।
কোথায় মিলবে এই সুবিধা ও কোনগুলো নিষেধ?
ঋণ পাওয়া যাবে সোনা ও রুপোর গয়না, অলংকার ও কয়েন বন্ধক রেখে।
তবে বুলিয়ন (প্রাইমারি গোল্ড বা সিলভার বার) বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া যাবে না, যাতে জল্পনা রোখা যায়।
আগেই বন্ধক রাখা সোনা/রুপো পুনঃবন্ধক বা রিপ্লেজ করা যাবে না।
ঋণ নিয়ে সোনা, রুপো বা স্বর্ণভিত্তিক সিকিউরিটিজ (ETFs) কেনা নিষিদ্ধ।
সুবিধা কোথায় বাড়ল? RBI Gold Silver Loan Rules
ছোট ঋণে বাড়ল LTV অনুপাত:
২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণে সোনার মূল্যের ৮৫% পর্যন্ত লোন মিলবে (আগে ছিল ৭৫%)।
উদাহরণ: সোনার মূল্য ১ লক্ষ হলে এখন সর্বোচ্চ ৮৫,০০০ টাকা ঋণ মিলবে।
বুলেট রিপেমেন্টের সময়সীমা বেঁধে ১২ মাস:
প্রিন্সিপাল ও সুদ একসঙ্গে মেয়াদ শেষে দেওয়ার ঋণ এবার ১ বছরের মধ্যেই শোধ করতে হবে।
কতটা গয়না ঋণগ্রহীতা বন্ধক রাখতে পারবেন?
ধরণ সর্বোচ্চ সীমা (একজন ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রে)-
সোনা (অলংকার) ১ কেজি,
সোনার কয়েন ৫০ গ্রাম,
রুপোর অলংকার ১০ কেজি,
রুপোর কয়েন ৫০০ গ্রাম।
ঋণগ্রহীতার সুরক্ষায় শক্ত ব্যবস্থা:
ঋণ শোধের দিনেই বন্ধক রাখা সোনা–রুপো ফেরত দিতে হবে, নইলে দিনে ৫,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ,
মূল্যবান অলংকার হারালে বা নষ্ট হলে পুরো ক্ষতিপূরণ,
নিলাম স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়—রিজার্ভ প্রাইস বাজারদরের কমপক্ষে ৯০% (দুই নিলাম ব্যর্থ হলে ৮৫%),
নিলামে উদ্বৃত্ত অর্থ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ফেরত,
সব কাগজপত্র স্থানীয় ভাষায় বা ঋণগ্রহীতার পছন্দের ভাষায় দিতে হবে।
শেষ কথা:
RBI–র নতুন নিয়মে স্বর্ণঋণ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, দ্রুত পরিষেবা ও গ্রাহকসুরক্ষা আরও জোরদার হতে চলেছে। রুপোকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে ঋণের বিকল্পও বাড়বে, বিশেষত সাধারণ মধ্যবিত্ত ও কৃষিজীবী পরিবারগুলোর জন্য।


