RBI-এর রেপো রেট হ্রাসের পর সুদ কমাল ৪ সরকারি ব্যাংক, জানুন কতটা কমবে আপনার EMI

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা ৯ এপ্রিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন, যেখানে তিনি রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা…

RBI May Cut Repo Rate Again in April: Will Your Loan EMIs Get Cheaper?

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা ৯ এপ্রিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন, যেখানে তিনি রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা জানান। এই সিদ্ধান্তের জেরে দেশের চারটি বৃহৎ সরকারি ব্যাংক তাদের ঋণের সুদের হার কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে গৃহঋণ, গাড়ি ঋণ সহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ঋণের উপর ইএমআই কমবে, যা সাধারণ মানুষের জন্য এক বড় স্বস্তির খবর।

এই চারটি ব্যাংক হল – পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (PNB), ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ব্যাংক এবং ইউকো ব্যাংক। এরা সবাই তাদের রেপো-লিংকড লেন্ডিং রেট (RBLR) কমিয়ে দিয়েছে ০.২৫ শতাংশ পর্যন্ত।

RBI-এর সিদ্ধান্ত ও তার তাৎপর্য

এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে RBI শেষবার রেপো রেট কমিয়েছিল। সেটাই ছিল গত পাঁচ বছরে প্রথমবার। এবার এপ্রিল মাসে ফের রেপো রেট হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। রেপো রেট হল সেই হার যার মাধ্যমে RBI বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে স্বল্পমেয়াদী ঋণ দেয়। এটি কমলে ব্যাংকগুলিও কম হারে ঋণ দিতে পারে গ্রাহকদের, যার ফলে ঋণ গ্রহণ সহজ হয় এবং বাজারে চাহিদা বাড়ে।

গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, “মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পাশাপাশি আর্থিক বৃদ্ধিকে সহায়তা করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এর ফলে বাজারে তরলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভোক্তাদের খরচ করার ক্ষমতাও বাড়বে।”

ব্যাংকগুলির রেট হ্রাসের ঘোষণা

ইন্ডিয়ান ব্যাংক জানিয়েছে, তারা তাদের RBLR ৮.৭০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, যা ১১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এর আগে এই হার ছিল ৯.০৫ শতাংশ।
পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (PNB) ঘোষণা করেছে যে, তারা তাদের RBLR ৯.১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮.৮৫ শতাংশ করেছে। এটি কার্যকর হবে বৃহস্পতিবার থেকে।
ব্যাংক অব ইন্ডিয়া-ও একই পথে হেঁটে তাদের RBLR ৮.৮৫ শতাংশ করেছে, যা আগে ছিল ৯.১০ শতাংশ। এটি কার্যকর হবে বুধবার থেকে।
ইউকো ব্যাংক-ও তাদের ঋণের হার কমিয়ে এনেছে ৮.৮ শতাংশে, যা বৃহস্পতিবার থেকে প্রযোজ্য হবে।

Advertisements

সাধারণ গ্রাহকদের উপকার

এই সুদের হার হ্রাসের ফলে নতুন এবং বিদ্যমান ঋণগ্রহীতারা উভয়েই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে যাদের ঋণ রেপো রেটের সঙ্গে যুক্ত, তাদের ইএমআই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাবে। এর ফলে মাসিক খরচ কিছুটা হ্রাস পাবে এবং অর্থনৈতিক চাপও কমবে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি ৩০ লক্ষ টাকার গৃহঋণে, যার মেয়াদ ২০ বছর, সেখানে ০.২৫ শতাংশ সুদের হ্রাসে বছরে প্রায় ৫,০০০-৬,০০০ টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

বাজার ও বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করবে। কোভিড পরবর্তী সময়ে সুদের হার অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে নতুন ঋণ নেওয়া কঠিন হয়ে উঠছিল। এখন সেই পথে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। এছাড়া আরও কিছু বেসরকারি ও সরকারী ব্যাংকও আগামী দিনে একই রকম ঘোষণা করতে পারে বলেই আশা।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

বিশ্লেষকদের মতে, RBI আগামী নীতিনির্ধারণী সভাগুলিতে আরও একবার রেপো রেট কমাতে পারে, যদি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি বজায় থাকে। তবে RBI সবসময় সতর্ক পদক্ষেপ নিতে চায়, যাতে সুদের হার কমার ফলে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা না বাড়ে।
RBI-এর এই রেপো রেট হ্রাস এবং তার জেরে বিভিন্ন ব্যাংকের সুদের হার হ্রাস সাধারণ জনগণের জন্য এক ইতিবাচক পদক্ষেপ। এতে যেমন ঋণগ্রহীতাদের স্বস্তি মিলবে, তেমনি অর্থনীতিতেও চাহিদা বাড়তে পারে। ঋণের ইএমআই কমে যাওয়ায় মানুষের খরচ করার ক্ষমতা বাড়বে, যা সামগ্রিকভাবে বাজারে গতি আনবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।