ভারতকে রেয়ার আর্থ উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর

রাষ্ট্ৰপতি দ্রৌপদী মুর্মু জাতীয় ভূ-বিজ্ঞান পুরস্কার ২০২৪-এর অনুষ্ঠানে দেশের জন্য রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট (REE) উৎপাদনে স্বনির্ভরতার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বুধবার, রাষ্ট্রপতি ভবনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত…

president-murmu-india-rare-earth-self-reliance-2025 National Geoscience Awards

রাষ্ট্ৰপতি দ্রৌপদী মুর্মু জাতীয় ভূ-বিজ্ঞান পুরস্কার ২০২৪-এর অনুষ্ঠানে দেশের জন্য রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট (REE) উৎপাদনে স্বনির্ভরতার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বুধবার, রাষ্ট্রপতি ভবনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট। এগুলো স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরিচ্ছন্ন শক্তি সমাধানকে শক্তিশালী করে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য এ ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হওয়া অত্যন্ত জরুরি।”

Advertisements

রাষ্ট্রপতি আরও উল্লেখ করেন, REE প্রকৃত অর্থে দুর্লভ নয়, বরং এগুলো ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। তিনি বলেন, “দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই জটিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জাতীয় স্বার্থে একটি বড় অবদান হবে।”

   

জাতীয় ভূ-বিজ্ঞান পুরস্কার, যা ১৯৬৬ সালে খনির মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছে, খনিজ আবিষ্কার, অনুসন্ধান, মৌলিক ও প্রয়োগভিত্তিক ভূ-বিজ্ঞান, খনি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য বিজ্ঞানীদের সম্মানিত করে। এ বছর মোট ২০ জন প্রখ্যাত ভূ-জ্ঞানীকে তিনটি বিভাগের মধ্যে ১২টি পুরস্কারে সম্মাননা জানানো হয়েছে।

লাইফটাইম অচিভমেন্ট ও যুব ভূ-জ্ঞানী পুরস্কার:
লাইফটাইম অচিভমেন্ট পুরস্কার ২০২৪ পেয়েছেন প্রফেসর শ্যাম সুন্দর রাই। তিনি INSA-র সিনিয়র বিজ্ঞানী ও IISER পুনেতে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। প্রফেসর রাই-এর অবদান মূলত সলিড আর্থ ও এক্সপ্লোরেশন জিওফিজিক্সে, বিশেষ করে পেনিনসুলার ভারত, পশ্চিম হিমালয় এবং লাদাখে সিসমিক গবেষণায়।
জাতীয় যুব ভূ-জ্ঞানী পুরস্কার পেয়েছেন সুষোভন নিয়োগী, সিনিয়র জিওলজিস্ট, ভূ-গবেষণা সংস্থা (GSI)। তিনি মেঘালয় ও ঝাড়খণ্ডে মোবাইল ও থ্রাস্ট বেল্টের টেকটনিক বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার কাজ সুপারকন্টিনেন্ট সংযোগ এবং খনিজ সৃষ্টির জ্ঞানকে অগ্রসর করেছে।

প্রযুক্তি ও টেকসই খনি ব্যবস্থাপনা:
রাষ্ট্রপতি মুর্মু ভূ-সম্পদ ও খনিজের শিল্পে খনিজের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে বলেন, “ভূ-জ্ঞানীদের সমুদ্রভিত্তিক খনিজ সম্পদ সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে, যাতে পরিবেশগত প্রভাব কম হয়।” তিনি এও উল্লেখ করেন, আধুনিক প্রযুক্তি যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন জরিপ এবং খনি বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ব্যবহার করে খনিজের মূল্য বাড়ানো এবং বর্জ্য কমানো সম্ভব।
মন্ত্রীপদে উপস্থিত, খনিজ মন্ত্রণালয়ের সচিব পিয়ূষ গয়ল Mines and Minerals (Development and Regulation) Act-এর মাধ্যমে খনিজ নিলামের প্রক্রিয়া সহজ এবং স্বচ্ছ করার পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। খনিমন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “ভূ-জ্ঞান ভারতের বিকশিত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূ-জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।”

পুরস্কারপ্রাপ্তরা শুধু দেশের খনিজ নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে নয়, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবেন। রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন, “এই পুরস্কার শুধুমাত্র সম্মানের প্রতীক নয়, এটি উদ্ভাবন এবং ভূ-বিজ্ঞানের উন্নতির অনুপ্রেরণা।”


❓ FAQs

Q1. রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট (REE) কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
👉 এগুলো এমন খনিজ উপাদান যা স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক যান, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির প্রযুক্তিতে অপরিহার্য।

Q2. রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রেয়ার আর্থ নিয়ে কী বলেছেন?
👉 তিনি বলেছেন, ভারতের জন্য REE উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ এগুলো আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি।

Q3. National Geoscience Awards 2024-এ কাকে লাইফটাইম অচিভমেন্ট পুরস্কার দেওয়া হয়েছে?
👉 প্রফেসর শ্যাম সুন্দর রাই, যিনি সিসমিক গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখেছেন।

Q4. যুব ভূ-জ্ঞানী পুরস্কার কে পেয়েছেন?
👉 ভূ-গবেষণা সংস্থার সিনিয়র জিওলজিস্ট সুষোভন নিয়োগী।

Q5. রাষ্ট্রপতি প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন দিকগুলোতে জোর দিয়েছেন?
👉 কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন জরিপ এবং খনি বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ব্যবহার করে খনিজ শিল্পে দক্ষতা বাড়ানোর উপর জোর দেন।

Q6. রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট আসলে দুর্লভ কি?
👉 না, এগুলো প্রকৃত অর্থে দুর্লভ নয়। তবে ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রূপান্তর করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।

Q7. খনিজ নীতিতে সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ কী?
👉 Mines and Minerals (Development and Regulation) Act-এর মাধ্যমে খনিজ নিলাম প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করা হয়েছে।

Q8. রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে ভারতের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কীভাবে উঠে এসেছে?
👉 ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূ-বিজ্ঞান ও খনিজ সম্পদ ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।


🔑 Rare earth elements India, Draupadi Murmu speech 2025, National Geoscience Awards 2024, India minerals self-reliance, REE production technology India