ভারতের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিট (FD) আজও অন্যতম জনপ্রিয় নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম। ২০২৫ সালে ছোট ফাইন্যান্স ব্যাংকগুলো (Small Finance Banks) তাদের আকর্ষণীয় সুদের হারের জন্য বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে। অন্যদিকে, পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট (Post Office Time Deposit) স্কিম দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রতীক। কিন্তু সুদের হার, কর সুবিধা, তারল্য ও নিরাপত্তার দিক থেকে এই দুটি বিনিয়োগ বিকল্পের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
সুদের হারের তুলনা:
বর্তমানে ছোট ফাইন্যান্স ব্যাংকগুলো দেশের সর্বোচ্চ এফডি সুদের হার দিচ্ছে। সিনিয়র নাগরিকদের ক্ষেত্রে সুর্যোদয় স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংক দিচ্ছে সর্বোচ্চ ৮.১% পর্যন্ত সুদ, আর জানা স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংক দিচ্ছে ৮% পর্যন্ত। তুলনায় পোস্ট অফিস এফডি-র সুদের হার কিছুটা কম, যা ৬.৯% থেকে ৭.৫% পর্যন্ত। তবে পোস্ট অফিসের জমা পুরোপুরি সরকার দ্বারা গ্যারান্টিযুক্ত, ফলে এটি নিরাপত্তার দিক থেকে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প হিসেবে ধরা হয়।
কর সংক্রান্ত নিয়ম:
দুই ক্ষেত্রেই অর্জিত সুদের উপর আয়কর প্রযোজ্য। যদি বছরে সুদের পরিমাণ ₹৪০,০০০ (সিনিয়র নাগরিকদের ক্ষেত্রে ₹৫০,০০০) অতিক্রম করে, তবে উৎসে কর কাটা হয় (TDS)। তবে পোস্ট অফিসের ৫ বছরের এফডি-তে বিনিয়োগ করলে আয়কর আইন ধারা ৮০সি-র অধীনে কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়, যা ব্যাংকের এফডি-তে নেই।
তারল্য ও প্রবেশযোগ্যতা:
পোস্ট অফিস এফডি সারা দেশের গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় সহজলভ্য। তবে আগাম অর্থ উত্তোলন করা যায় মাত্র ছয় মাস পর, এবং সেই ক্ষেত্রেও কিছু সুদ কমে যায়। অন্যদিকে, ছোট ফাইন্যান্স ব্যাংকের এফডি-তে আগাম উত্তোলনের সুযোগ থাকে, যদিও সেখানে কিছুটা সুদের কাটছাঁট হতে পারে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধার কারণে এই এফডি খোলা ও পরিচালনা করাও অনেক সহজ।
কোনটি বেছে নেবেন?
যদি আপনি তুলনামূলকভাবে বেশি রিটার্ন চান এবং কর বা আগাম উত্তোলনের নিয়মে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে ছোট ফাইন্যান্স ব্যাংকের এফডি হতে পারে আপনার জন্য সেরা বিকল্প। অন্যদিকে, যদি আপনার মূল লক্ষ্য নিরাপত্তা ও সরকারী গ্যারান্টি হয়, তবে পোস্ট অফিস এফডি-ই বেশি উপযুক্ত।
বিনিয়োগকারীদের উচিত তাঁদের আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি সহ্যক্ষমতা ও বিনিয়োগের মেয়াদ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। ছোট ফাইন্যান্স ব্যাংক এফডি যেখানে বেশি মুনাফা দেয়, সেখানে পোস্ট অফিস এফডি দেয় অটল নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা—উভয়ই ভিন্ন চাহিদা পূরণে সমান গুরুত্বপূর্ণ।


