অবসর গ্রহণের পর নিজের সঞ্চয় কোথায় রাখবেন, কীভাবে নিয়মিত আয় নিশ্চিত করবেন—এই প্রশ্নগুলো প্রবীণ নাগরিকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবসরজীবনের আর্থিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে সরকার তাদের জন্য এনেছে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (Senior Citizen Savings Scheme)। এই স্কিমটি মূলত ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সিদের জন্য তৈরি, যেখানে বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও আকর্ষণীয় সুদের সুবিধা একসঙ্গে পাওয়া যায়।
বিনিয়োগ করতে পারবেন কারা?
এই স্কিমে যে কেউ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়স হলে সহজেই বিনিয়োগ করতে পারেন। এছাড়াও, যারা স্বেচ্ছা অবসর (VRS) বা সুপারঅ্যানুয়েশন নিয়ে চাকরি ছেড়েছেন, নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে তারাও এ সুবিধা নিতে পারেন। ফলে অবসরপ্রাপ্তদের জন্য একটি স্থিতিশীল ও নিশ্চিন্ত আয়ের পথ তৈরি করে SCSS।
বিনিয়োগ সীমা ও সুদের হার:
এ স্কিমে সর্বনিম্ন বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ₹1,000, আর সর্বোচ্চ ₹30 লাখ। বর্তমানে এই স্কিমে সুদের হার বছরে 8.2%। প্রতি তিন মাসে অ্যাকাউন্টে সুদের টাকা জমা হয়, ফলে নিয়মিত আয়ের সুবিধা পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রতি ত্রৈমাসিকে সরকার সুদের হার পুনর্বিবেচনা করতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধাবহুল।
মেয়াদ ও কর সুবিধা:
সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের মেয়াদ শুরুতে পাঁচ বছর। তবে চাইলে মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানো যায়। এই স্কিমে বিনিয়োগের অর্থ আয়কর আইনের 80C ধারার অধীনে কর ছাড়ের সুবিধা পায়। যদিও প্রাপ্ত সুদের ওপর কর আরোপযোগ্য, কিন্তু সুদের পরিমাণ বছরে ₹50,000 এর কম হলে কোনও উৎসে কর কর্তন (TDS) হয় না। ফলে কর সুবিধার দিক থেকেও এটি দেশের প্রবীণ নাগরিকদের কাছে একটি লাভজনক বিকল্প।
কোথায় ও কীভাবে খুলবেন অ্যাকাউন্ট?
পোস্ট অফিস বা যেকোনও সরকারি অনুমোদিত ব্যাংক শাখা থেকে সহজেই এই স্কিমের অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব। নথিপত্র জমা দেওয়া ও টাকা জমা করার প্রক্রিয়া একেবারে স্বচ্ছ ও নিরাপদ। যেহেতু এটি সরকারি নিশ্চয়তা-যুক্ত স্কিম, তাই বিনিয়োগের অর্থ সুরক্ষিত থাকে এবং প্রবীণরা নিয়মিত আয়ের সুবিধা পান।
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মত, অবসরপরবর্তী সময়ে যারা স্থির আয়ের নিশ্চয়তা চান, তাদের জন্য SCSS একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও লাভজনক পরিকল্পনা। দীর্ঘমেয়াদে সঞ্চয় রক্ষা ও নিয়মিত উপার্জনের পথ তৈরি করে এই সরকারি স্কিম প্রবীণদের আর্থিক স্বস্তি এনে দিচ্ছে।
