দেশ জুড়ে 4G পরিষেবার সূচনা করলেন মোদী

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ৪জি (BSNL 4G) পরিষেবা চালু করল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে একসঙ্গে সংযুক্ত…

PM Modi Launches BSNL 4G Services Nationwide

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ৪জি (BSNL 4G) পরিষেবা চালু করল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে একসঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে প্রায় ৯৮ হাজার মোবাইল সাইট, যার মধ্যে ওড়িশার ঝাড়সুগুড়া থেকেও একাধিক প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে দেশের প্রতিটি প্রান্তে বিএসএনএল গ্রাহকরা দ্রুতগতির ৪জি ইন্টারনেটের সুবিধা পাবেন।

Advertisements

দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি BSNL 4G নেটওয়ার্ক

বিএসএনএল–এর ৪জি নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ভারতেই তৈরি হয়েছে। প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই নেটওয়ার্ক ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে স্থান করে দিয়েছে, যারা নিজস্ব প্রযুক্তিতে টেলিকম নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। বর্তমানে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন ও ডেনমার্কের সঙ্গে এই তালিকায় যোগ দিল ভারতও।

   

দেশজুড়ে প্রায় ৯ কোটি গ্রাহক সরাসরি উপকৃত হবেন বিএসএনএল–এর ৪জি পরিষেবা থেকে। এখনো অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে গ্রাহকরা বেসরকারি সংস্থার দিকে ঝুঁকতেন। কিন্তু নতুন ৪জি চালুর পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বিএসএনএল–এর রিচার্জ প্ল্যানগুলো বেসরকারি টেলিকম অপারেটরদের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সস্তা, ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি বড় সুবিধা হয়ে উঠবে। নেটওয়ার্কের প্রাপ্যতা বাড়লে সহজেই নম্বর পোর্ট করে গ্রাহকরা বিএসএনএলে যুক্ত হতে পারবেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ৫জি ও ৬জি

বিএসএনএল ইতিমধ্যেই তাদের ৫জি পরিষেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষের মধ্যেই দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো বড় শহরে ৫জি পরিষেবা চালু হতে পারে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদী ৬জি নিয়েও কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ইতিমধ্যেই একটি ৬জি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে ৬জি পরিষেবা চালু হতে পারে। এতে ভারত বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে একটি হিসেবে ৬জি প্রযুক্তি আনতে সক্ষম হবে।

বিএসএনএল–এর এই বৃহৎ প্রকল্পে দেশীয় সংস্থাগুলির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) পুরো ইন্টিগ্রেশন ও নেটওয়ার্ক রোলআউটের কাজ সামলাচ্ছে। অন্যদিকে, তেজস নেটওয়ার্কস তৈরি করেছে ৪জি নেটওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় রেডিও অ্যাক্সেস। এর ফলে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ দেশীয় দক্ষতার উপর দাঁড়িয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে।

বিএসএনএল–এর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ঠিক পরেই এই ৪জি (BSNL 4G) পরিষেবা চালু হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। প্রাথমিক পর্যায়ে ৯৮ হাজার সাইটে একযোগে নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে এবং শীঘ্রই আরও ৯৭,৫০০ মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে গ্রাহক সংযোগ উন্নত হওয়ার পাশাপাশি টেলিকম খাতে আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নও বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই উদ্যোগ শুধু দ্রুতগতির ইন্টারনেট নয়, ভারতের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।