ভবিষ্যতের সঞ্চয় কত হতে পারে? ETF ক্যালকুলেটর দিয়ে জেনে নিন

Future Savings with an ETF: আধুনিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আজকের দিনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আর সহজলভ্য বিনিয়োগ পদ্ধতির একটি হচ্ছে ইটিএফ বা এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড। এটি এমন…

Senior Citizen Savings Scheme

Future Savings with an ETF: আধুনিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আজকের দিনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আর সহজলভ্য বিনিয়োগ পদ্ধতির একটি হচ্ছে ইটিএফ বা এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড। এটি এমন এক ধরনের সম্মিলিত বিনিয়োগ মাধ্যম, যেখানে একসাথে একাধিক সম্পদ যেমন স্টক, বন্ড অথবা কমোডিটিতে বিনিয়োগ করা যায়। আর এই ইটিএফগুলিকে স্টক এক্সচেঞ্জে সাধারণ শেয়ারের মতোই কেনাবেচা করা যায়।

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি একটি নিফটি ৫০ ইটিএফ-এ বিনিয়োগ করেন, তাহলে আপনি নিফটি ৫০ সূচকের অন্তর্ভুক্ত সব ৫০টি সংস্থায় একসাথে বিনিয়োগ করছেন। ফলে আপনি একটি মাত্র বিনিয়োগের মাধ্যমে বহু সংস্থায় ডাইভার্সিফায়েড এক্সপোজার পাচ্ছেন।
এই বিনিয়োগের অন্যতম সুবিধা হলো, আপনি সহজেই নিজের অর্থ বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং স্টক মার্কেটের ওঠাপড়ার ভিত্তিতে ইটিএফের দামও পরিবর্তিত হয়। তবে এই সম্বন্ধে সঠিক ধারণা পেতে একটি বিশেষ হাতিয়ার আজ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে — ইটিএফ ক্যালকুলেটর।

   

কী এই ইটিএফ ক্যালকুলেটর?
ইটিএফ ক্যালকুলেটর এমন একটি ডিজিটাল টুল, যা আপনাকে আপনার ইটিএফ বিনিয়োগ কেমন লাভ দিতে পারে তা অনুমান করতে সাহায্য করে। এখানে আপনি মূলত তিনটি তথ্য প্রবেশ করান:
আপনি কত টাকা বিনিয়োগ করতে চান (এককালীন বা মাসিক SIP),
আপনি কী পরিমাণ বাৎসরিক রিটার্ন আশা করছেন (যেমন ৭%),
আপনি কত বছরের জন্য এই বিনিয়োগ ধরে রাখতে চান।
এই ক্যালকুলেটর কম্পাউন্ড ইন্টারেস্টের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিমাণ হিসেব করে দেখায়। যেমন ধরুন, আপনি যদি ১০,০০০ টাকা ১০ বছরের জন্য বিনিয়োগ করেন এবং বাৎসরিক ৭% রিটার্ন পান, তাহলে আপনার বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে প্রায় ১৯,৬৭২ টাকা হতে পারে।

কেন ব্যবহার করবেন ইটিএফ ক্যালকুলেটর?
অনেক বিনিয়োগকারীই প্রায়শই ভাবেন, “আমার বিনিয়োগ কতটা বাড়বে?” বা “এই ফান্ডটা কি আমার রিটার্নের জন্য যথেষ্ট?” ইটিএফ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যায় সহজে।

এই টুলের মাধ্যমে আপনি:
আপনার বিনিয়োগ কতটা সময় পর কত হতে পারে তা অনুমান করতে পারবেন,
বিভিন্ন ইটিএফের সম্ভাব্য রিটার্ন তুলনা করতে পারবেন,
অবসরের জন্য আর্থিক পরিকল্পনা করতে পারবেন,
কম বা বেশি রিটার্নের পরিস্থিতি কল্পনা করে বিভিন্ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে পারবেন।

Advertisements

ইটিএফ ক্যালকুলেটরের সুবিধাসমূহ:
১. কম্পাউন্ডিংয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ: ইটিএফ ক্যালকুলেটর আপনাকে দেখায় কিভাবে সময়ের সাথে সাথে আপনার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। কম্পাউন্ড ইন্টারেস্টের জোরে অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করেও বড় ফান্ড গঠন করা সম্ভব হয়।
২. বিভিন্ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ: আপনি চাইলে বিনিয়োগের পরিমাণ, রিটার্নের হার এবং সময় পরিবর্তন করে বিভিন্ন পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
৩. বিনিয়োগ তুলনা: ধরুন, আপনি দুটি ভিন্ন ইটিএফ ফান্ড নিয়ে ভাবছেন। একজন ৭% রিটার্ন দেয়, অন্যজন ৯%। ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে আপনি দেখতে পারবেন, দীর্ঘমেয়াদে কোন ফান্ডটি বেশি লাভ দেবে।
৪. অবসরের পরিকল্পনা: আপনি যদি অবসরের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেন, তাহলে ক্যালকুলেটর আপনাকে দেখাবে কত টাকা বিনিয়োগ করলে আপনি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।
৫. মাসিক SIP হিসাব করা: কেবল এককালীন বিনিয়োগ নয়, মাসিক SIP হিসেবেও ভবিষ্যৎ রিটার্ন নির্ধারণ করা যায়। ফলে আপনি পরিকল্পনামাফিক মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

কীভাবে ব্যবহার করবেন ইটিএফ ক্যালকুলেটর?
বেশিরভাগ ইটিএফ ক্যালকুলেটর অনলাইনেই পাওয়া যায় এবং ব্যবহার একেবারে সহজ। আপনি যে ওয়েবসাইটে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করবেন সেখানে আপনার বিনিয়োগের ধরন, পরিমাণ, সময়কাল এবং প্রত্যাশিত রিটার্ন প্রবেশ করালেই ক্যালকুলেটর ভবিষ্যতের পরিমাণ জানিয়ে দেবে। অনেক ক্যালকুলেটর চার্ট বা গ্রাফ আকারেও ফলাফল দেখায়, যা বোঝা আরও সহজ করে তোলে।

বর্তমান অর্থনৈতিক দুনিয়ায় বিনিয়োগ মানেই কেবল লাভের চিন্তা নয়, বরং বুদ্ধিমত্তা, সময় এবং পরিকল্পনার সঠিক সমন্বয়। আর এই পরিকল্পনায় সাহায্য করতে ইটিএফ ক্যালকুলেটর একটি অত্যন্ত কার্যকরী হাতিয়ার। আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক লক্ষ্য স্থির করে এগোতে চান—চাকরি, ব্যবসা বা অবসর—তাহলে আজই ইটিএফ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে আপনার বিনিয়োগ পরিকল্পনার গোড়াপত্তন করুন।