Petrol price today: ভারতের তেল বিপণন সংস্থাগুলি (ওএমসি) প্রতিদিন সকাল ৬টায় পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য সংশোধন করে, যা বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের মূল্যের ওঠানামা এবং মুদ্রা বিনিময় হারের উপর নির্ভর করে। এই নিয়মিত আপডেটগুলি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং ভোক্তাদের সবচেয়ে সঠিক এবং বর্তমান জ্বালানি মূল্যের তথ্য প্রদান করে। ২৮ এপ্রিল, ২০২৫-এ ভারতের বিভিন্ন শহরে পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য নিম্নরূপ:
শহর অনুযায়ী পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য (২৮ এপ্রিল, ২০২৫)
• নয়া দিল্লি: পেট্রোল – ৯৪.৭২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৭.৬২ টাকা/লিটার
• মুম্বই: পেট্রোল – ১০৪.২১ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯২.১৫ টাকা/লিটার
• কলকাতা: পেট্রোল – ১০৩.৯৪ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.৭৬ টাকা/লিটার
• চেন্নাই: পেট্রোল – ১০০.৭৫ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯২.৩৪ টাকা/লিটার
• আহমেদাবাদ: পেট্রোল – ৯৪.৪৯ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.১৭ টাকা/লিটার
• বেঙ্গালুরু: পেট্রোল – ১০২.৯২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.০২ টাকা/লিটার
• হায়দ্রাবাদ: পেট্রোল – ১০৭.৪৬ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯৫.৭০ টাকা/লিটার
• জয়পুর: পেট্রোল – ১০৪.৭২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.২১ টাকা/লিটার
• লখনউ: পেট্রোল – ৯৪.৬৯ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৭.৮০ টাকা/লিটার
• পুণে: পেট্রোল – ১০৪.০৪ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.৫৭ টাকা/লিটার
• চণ্ডীগড়: পেট্রোল – ৯৪.৩০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮২.৪৫ টাকা/লিটার
• ইন্দোর: পেট্রোল – ১০৬.৪৮ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯১.৮৮ টাকা/লিটার
• পাটনা: পেট্রোল – ১০৫.৫৮ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯৩.৮০ টাকা/লিটার
• সুরাট: পেট্রোল – ৯৫.০০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.০০ টাকা/লিটার
• নাসিক: পেট্রোল – ৯৫.৫০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.৫০ টাকা/লিটার
ভারতে জ্বালানি মূল্য ২০২২ সালের মে মাস থেকে স্থিতিশীল রয়েছে, যখন কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার জ্বালানি কর হ্রাস করেছিল। তেল বিপণন সংস্থাগুলি প্রতিদিন সকাল ৬টায় জ্বালানি মূল্য সংশোধন করে, যা বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের মূল্যের ওঠানামার উপর ভিত্তি করে। সরকার এই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে শুল্ক, ভিত্তি মূল্য এবং মূল্যের সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে।
ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যকে প্রভাবিত করার কারণগুলি
জ্বালানি মূল্য নির্ধারণে বিভিন্ন কারণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কারণগুলি বোঝা ভোক্তাদের জন্য জ্বালানি বাজারের গতিশীলতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়। নীচে প্রধান কারণগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
১. অপরিশোধিত তেলের মূল্য
অপরিশোধিত তেল পেট্রোল এবং ডিজেল উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল। বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের মূল্যের ওঠানামা ভারতের জ্বালানি মূল্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন দেশের পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্যও বৃদ্ধি পায়। বিপরীতভাবে, দাম কমলে জ্বালানি মূল্য হ্রাস পায়।
২. বিনিময় হার
ভারত তার অপরিশোধিত তেলের বেশিরভাগ আমদানি করে। ফলস্বরূপ, ভারতীয় রুপি এবং মার্কিন ডলারের মধ্যে বিনিময় হারের পরিবর্তন জ্বালানি মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে। রুপির মান কমে গেলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পায়, যা পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বাড়ায়। অন্যদিকে, রুপির মান বৃদ্ধি পেলে জ্বালানি মূল্য কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
৩. কর
পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্যের একটি বড় অংশ গঠিত হয় কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের আরোপিত বিভিন্ন কর থেকে। এই করের হার রাজ্যভেদে ভিন্ন হয়, যা ভোক্তারা পাম্পে চূড়ান্ত মূল্য পরিশোধ করার সময় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু রাজ্যে উচ্চ মূল্য সংযোজন কর (VAT) থাকায় সেখানে জ্বালানি মূল্য বেশি হয়।
৪. পরিশোধন ব্যয়
অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল এবং ডিজেল উৎপাদনের জন্য পরিশোধন প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, যা উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের সাথে সম্পর্কিত। পরিশোধন ব্যয় অপরিশোধিত তেলের ধরন এবং পরিশোধন কারখানার দক্ষতার উপর নির্ভর করে। এই ব্যয় জ্বালানি মূল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
৫. চাহিদা ও সরবরাহ
জ্বালানি মূল্য নির্ধারণে চাহিদা এবং সরবরাহের ভারসাম্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেট্রোল এবং ডিজেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে, বিশেষ করে উৎসবের মরসুমে বা অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির সময়, মূল্য বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, চাহিদা কমে গেলে মূল্য হ্রাস পেতে পারে।
এসএমএস-এর মাধ্যমে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য জানুন
আপনি সহজেই এসএমএস-এর মাধ্যমে আপনার শহরের সর্বশেষ পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য জানতে পারেন। নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
• ইন্ডিয়ান অয়েল গ্রাহকদের জন্য: শহরের কোড সহ “RSP” লিখে ৯২২৪৯৯২২৪৯ নম্বরে এসএমএস পাঠান।
• বিপিসিএল গ্রাহকদের জন্য: “RSP” লিখে ৯২২৩১১২২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠান।
• এইচপিসিএল গ্রাহকদের জন্য: “HP Price” লিখে ৯২২২২০১১২২ নম্বরে এসএমএস পাঠান।
এই পরিষেবাটি ভোক্তাদের জন্য সুবিধাজনক এবং দ্রুত মূল্য তথ্য প্রদান করে।
জ্বালানি মূল্যের স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যৎ
২০২২ সালের মে মাস থেকে ভারতে জ্বালানি মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের কর হ্রাস নীতির ফল। তবে, বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের বাজারে অস্থিরতা এবং ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাবলী ভবিষ্যতে জ্বালানি মূল্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বা অন্যান্য সংকট অপরিশোধিত তেলের সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করলে দাম বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়াও, ভারত সরকার বিকল্প জ্বালানি উৎস যেমন বায়োফুয়েল, ইথানল মিশ্রিত পেট্রোল এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের উপর জোর দিচ্ছে। এই উদ্যোগগুলি দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি মূল্যের উপর চাপ কমাতে পারে এবং ভোক্তাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী বিকল্প প্রদান করতে পারে।
পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য ভারতের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রতিদিনের মূল্য সংশোধন এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ নীতি ভোক্তাদের জন্য স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা নিশ্চিত করে। তবে, জ্বালানি মূল্যের ওঠানামা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসএমএস পরিষেবার মাধ্যমে সর্বশেষ মূল্য জানা এবং বিকল্প জ্বালানির দিকে ঝুঁকে ভোক্তারা তাদের জ্বালানি ব্যয় আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারেন।