Petrol price today: ভারতের তেল বিপণন সংস্থাগুলি (ওএমসি) প্রতিদিন সকাল ৬টায় পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য সংশোধন করে, যা বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যের ওঠানামা এবং মুদ্রা বিনিময় হারের উপর নির্ভর করে। এই নিয়মিত মূল্য সংশোধন গ্রাহকদের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং সর্বাধুনিক জ্বালানি মূল্যের তথ্য প্রদান করে। ২০২২ সালের মে মাস থেকে ভারতে জ্বালানির মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে, যখন কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার জ্বালানির উপর কর হ্রাস করেছিল।
২৫ এপ্রিল, ২০২৫-এ ভারতের বিভিন্ন শহরে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নিম্নরূপ:
• নতুন দিল্লি: পেট্রোল – ৯৪.৭২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৭.৬২ টাকা/লিটার
• মুম্বাই: পেট্রোল – ১০৪.২১ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯২.১৫ টাকা/লিটার
• কলকাতা: পেট্রোল – ১০৩.৯৪ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.৭৬ টাকা/লিটার
• চেন্নাই: পেট্রোল – ১০০.৭৫ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯২.৩৪ টাকা/লিটার
• আমেদাবাদ: পেট্রোল – ৯৪.৪৯ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.১৭ টাকা/লিটার
• বেঙ্গালুরু: পেট্রোল – ১০২.৯২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.০২ টাকা/লিটার
• হায়দ্রাবাদ: পেট্রোল – ১০৭.৪৬ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯৫.৭০ টাকা/লিটার
• জয়পুর: পেট্রোল – ১০৪.৭২ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.২১ টাকা/লিটার
• লখনউ: পেট্রোল – ৯৪.৬৯ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৭.৮০ টাকা/লিটার
• পুণে: পেট্রোল – ১০৪.০৪ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯০.৫৭ টাকা/লিটার
• চণ্ডীগড়: পেট্রোল – ৯৪.৩০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮২.৪৫ টাকা/লিটার
• ইন্দোর: পেট্রোল – ১০৬.৪৮ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯১.৮৮ টাকা/লিটার
• পাটনা: পেট্রোল – ১০৫.৫৮ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৯৩.৮০ টাকা/লিটার
• সুরাট: পেট্রোল – ৯৫.০০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.০০ টাকা/লিটার
• নাসিক: পেট্রোল – ৯৫.৫০ টাকা/লিটার, ডিজেল – ৮৯.৫০ টাকা/লিটার
পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণের কারণ
ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ভূমিকা পালন করে। এই উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে:
• অপরিশোধিত তেলের মূল্য: পেট্রোল ও ডিজেল উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হল অপরিশোধিত তেল। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যের ওঠানামা সরাসরি ভারতের জ্বালানি মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ে, তখন ভারতেও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পায়।
• মুদ্রা বিনিময় হার: ভারত তার অপরিশোধিত তেলের বেশিরভাগ আমদানি করে। ফলস্বরূপ, ভারতীয় রুপির তুলনায় মার্কিন ডলারের বিনিময় হার জ্বালানির মূল্যকে প্রভাবিত করে। রুপির মান কমে গেলে তেল আমদানির খরচ বেড়ে যায়, যা জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণ হয়।
• কর: কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার কর্তৃক আরোপিত বিভিন্ন কর পেট্রোল ও ডিজেলের চূড়ান্ত মূল্যের একটি বড় অংশ গঠন করে। এই করের হার রাজ্যভেদে ভিন্ন হয়, যার ফলে বিভিন্ন শহরে জ্বালানির মূল্যের তারতম্য দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, মুম্বাই বা হায়দ্রাবাদের মতো শহরে উচ্চ করের কারণে জ্বালানির দাম বেশি।
• পরিশোধন ব্যয়: অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল ও ডিজেল উৎপাদনের জন্য পরিশোধন প্রক্রিয়ার খরচও মূল্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। পরিশোধন ব্যয় তেলের গুণমান এবং পরিশোধন কারখানার দক্ষতার উপর নির্ভর করে।
• চাহিদা ও সরবরাহ: জ্বালানির চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য মূল্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। যখন পেট্রোল ও ডিজেলের চাহিদা বেড়ে যায়, তখন বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি পায়। বিপরীতে, চাহিদা কমে গেলে দাম কিছুটা কমতে পারে।
এসএমএস-এর মাধ্যমে জ্বালানির মূল্য জানুন
গ্রাহকরা এখন সহজেই তাদের শহরের সর্বশেষ পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য এসএমএস-এর মাধ্যমে জানতে পারেন। এই পরিষেবাটি তেল বিপণন সংস্থাগুলি যেমন ইন্ডিয়ান অয়েল, বিপিসিএল এবং এইচপিসিএল প্রদান করে।
• ইন্ডিয়ান অয়েল: গ্রাহকরা তাদের শহরের কোড সহ “RSP” লিখে ৯২২৪৯৯২২৪৯ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে পারেন।
• বিপিসিএল: “RSP” লিখে ৯২২৩১১২২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠান।
• এইচপিসিএল: “HP Price” লিখে ৯২২২২০১১২২ নম্বরে এসএমএস পাঠান।
এই পরিষেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই তাদের শহরের জ্বালানির মূল্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পারেন।
সরকারের ভূমিকা
ভারত সরকার জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্সাইজ শুল্ক, বেস প্রাইসিং এবং মূল্যের উপর সীমা নির্ধারণের মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার জ্বালানির দাম নিয়ন্ত্রণ করে। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার জ্বালানির উপর এক্সাইজ শুল্ক হ্রাস করেছিল, যার ফলে দাম কিছুটা কমেছিল। এছাড়া, বিভিন্ন রাজ্য সরকারও ভ্যাট এবং অন্যান্য কর হ্রাস করে জনগণের উপর আর্থিক বোঝা কমানোর চেষ্টা করেছে।
জ্বালানির দামের প্রভাব
পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সরাসরি ভারতের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেলে পরিবহন খরচ বেড়ে যায়, যা পণ্য ও পরিষেবার দাম বৃদ্ধির কারণ হয়। এটি মূল্যস্ফীতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, জ্বালানির দাম কমে গেলে গ্রাহকদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ত্বরান্বিত হয়।
পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য ভারতের গ্রাহকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তেল বিপণন সংস্থাগুলির দৈনিক মূল্য সংশোধন এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ জ্বালানির দামকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। গ্রাহকরা এসএমএস-এর মতো সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের শহরের জ্বালানির মূল্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে পারেন। ভবিষ্যতে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এবং মুদ্রা বিনিময় হারের ওঠানামা ভারতের জ্বালানির মূল্যের উপর প্রভাব ফেলতে থাকবে।