দেশজুড়ে প্রতিদিন বেড়ে চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, আর এই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ( Petrol Diesel Price) বৃদ্ধি। নতুন করে সরকার পেট্রো-পণ্যে আবারও মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পেট্রোলের ওপর লেভি ৮.০২ টাকা এবং হাই-স্পিড ডিজেলের ওপর লেভি ৭.০১ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে পেট্রোলের নতুন দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি লিটার ( Petrol Diesel Price) ২৫৪.৬৩ এবং ডিজেলের দাম ২৫৮.৬৪ প্রতি লিটার।
এই মূল্যবৃদ্ধি ১৬ এপ্রিল ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে এবং আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত এই দাম অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব
এত উচ্চ হারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ( Petrol Diesel Price) বৃদ্ধি শুধুমাত্র গাড়ি চালানো বা ব্যক্তিগত খরচের ওপর নয়, দেশের সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধির হারের ওপর প্রভাব ফেলছে। কারণ বেশিরভাগ পণ্য, বিশেষ করে কৃষিপণ্য ও খাদ্যদ্রব্য, দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহন করা হয় ডিজেলচালিত গাড়িতে। ফলে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই সব জিনিসের দাম বাড়ছে।
সরকারের যুক্তি ও বাস্তবতা
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে সামান্য ওঠানামা থাকলেও, দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বাজেটের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এই লেভি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয়, যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ( Petrol Diesel Price) ১৫ এপ্রিলের হিসাবে কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি ব্যারেল $৬৫, তবুও দেশের বাজারে এর কোনও ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।
পাকিস্তানের প্রসঙ্গ
প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার ফলে পেট্রোলের দামে বড়সড় ছাড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দেশটির OGRA (Oil and Gas Regulatory Authority) পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম কমানোর সুপারিশ করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে কিছু দেশ। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো চিত্র সামনে আসছে।
জনসাধারণের ভোগান্তি
বাড়তে থাকা জ্বালানির দামে ( Petrol Diesel Price) নাজেহাল সাধারণ মানুষ। এমনিতেই খাদ্যদ্রব্য, পরিবহন, গৃহস্থালি সামগ্রীর দাম লাগাতার বেড়ে চলেছে। সেখানে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি যেন আরও এক বোঝা কাঁধে চাপিয়ে দিল। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, “গাড়ি নয়, এখন পায়ে হাঁটা শুরু করাই বোধহয় সঠিক সিদ্ধান্ত।”
বিশেষজ্ঞদের মতামত
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মূল্যবৃদ্ধি সাময়িক হলেও বাজারে মুদ্রাস্ফীতির চাপ আরও বাড়াবে। এর প্রভাব পড়বে কৃষি, শিল্প এবং পরিবহন খাতে। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চাহিদা কমতে পারে, যার ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ব্যাহত হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষ চরম আর্থিক চাপে রয়েছেন। সরকার যদি দ্রুত কোনও স্থিতিশীল মূল্যনীতি গ্রহণ না করে, তাহলে আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। মানুষ তাকিয়ে আছে সরকার কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয় কি না, যা সত্যিই জনগণের স্বার্থে হবে।