দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আরও সহজ এবং সাশ্রয়ী করার লক্ষ্য নিয়ে নতুন দিশা দেখাল Paytm Money। ওয়ান৯৭ কমিউনিকেশন্স লিমিটেড (OCL)-এর সম্পূর্ণ মালিকানাধীন এই সংস্থা ভারতের প্রথম সিস্টেম্যাটিক অ্যাক্টিভ ইকুইটি (SAE) ফান্ড বাজারে আনল। এ ক্ষেত্রে তাদের অংশীদার হিসেবে রয়েছে জিওব্ল্যাকরক। এই সহযোগিতার মাধ্যমে খোলা হয়েছে জিওব্ল্যাকরক ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড, যা ভারতের বিনিয়োগ দুনিয়ায় ব্ল্যাকরকের SAE পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ।
ফান্ড অফারের সময়সীমা:
নিউ ফান্ড অফার (NFO) শুরু হবে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে এবং চলবে ৭ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত। বিনিয়োগ করা যাবে শুধুমাত্র পেটিএম মানি অ্যাপের মাধ্যমে। সবার নাগালে আনতে বিনিয়োগের ন্যূনতম সীমা রাখা হয়েছে মাত্র ৫০০ টাকা, যা বিনিয়োগ করা যাবে লাম্প সাম বা SIP-এর মাধ্যমে।
SAE কী এবং কেন বিশেষ?
ব্ল্যাকরক উদ্ভাবিত এই সিস্টেম্যাটিক অ্যাক্টিভ ইকুইটি (SAE) পদ্ধতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং (ML), ভোক্তাদের লেনদেন তথ্য, সার্চ অ্যাক্টিভিটি সহ বিভিন্ন বিকল্প তথ্য ব্যবহার করা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজারদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা। বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সম্ভাবনা বোঝার জন্য ব্যবহার করা হয় ব্ল্যাকরকের অত্যাধুনিক Aladdin® প্ল্যাটফর্ম। প্রায় এক হাজার ভারতীয় সংস্থার ডেটা বিশ্লেষণ করে তৈরি হয় বিনিয়োগের কৌশল। ফলে খুচরো বিনিয়োগকারীরাও পেতে পারেন প্রাতিষ্ঠানিক মানের সুযোগ।
ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ডের বৈশিষ্ট্য:
জিওব্ল্যাকরক ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড বড়, মাঝারি ও ছোট—তিন ধরণের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বহুমুখী সুযোগ তৈরি করবে। এর টোটাল এক্সপেন্স রেশিও (TER) মাত্র ০.৫০% এবং কোনও এক্সিট লোড নেই। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা তুলনামূলক কম খরচে লাভজনক পরিকল্পনায় অংশ নিতে পারবেন।
পেটিএম মানির ভূমিকা:
পেটিএম মানি ডিজিটাল-ফার্স্ট মডেলে কাজ করে, যেখানে বিনিয়োগকারীদের জন্য সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়া রাখা হয়েছে। কোনও কমিশন ছাড়াই সরাসরি বিনিয়োগ করার সুবিধা দিচ্ছে এই প্ল্যাটফর্ম। ফলে একজন সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীও ঘরে বসেই সহজে এই ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
সংস্থার প্রতিক্রিয়া:
পেটিএম মানির মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা জিওব্ল্যাকরকের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে ভারতের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ফ্লেক্সি ক্যাপ SAE ফান্ড আনতে পেরে গর্বিত। মাত্র ₹৫০০ থেকে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় এমন বিনিয়োগ কৌশল এখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসবে, যা আগে শুধুমাত্র বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সীমাবদ্ধ ছিল।”
অন্যদিকে, জিওব্ল্যাকরকের মুখপাত্র বলেছেন, “ভারতে খুচরো বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের SAE ক্ষমতা পৌঁছে দিতে পেটিএম মানির সঙ্গে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ডিজিটাল ফার্স্ট AMC হিসেবে পেটিএম মানির বিস্তৃত বিতরণ নেটওয়ার্ক আমাদের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। আমরা চাই ভারতের দ্রুত সম্প্রসারিত বাজারে একটি স্কেলযোগ্য, সাশ্রয়ী ইকুইটি সমাধান দিতে।”
ভবিষ্যৎ দিশা:
বর্তমানে পেটিএম মানি ইকুইটি, মিউচুয়াল ফান্ড, F&O, SIP, IPO, NPS এবং ঋণপত্রে বিনিয়োগের সুযোগ দিচ্ছে। নতুন SAE ফান্ড চালুর মাধ্যমে তারা খুচরো বিনিয়োগকারীদের আরও গভীরভাবে পুঁজিবাজারের সঙ্গে যুক্ত করতে চাইছে।
এই পদক্ষেপে স্পষ্ট, ভারতের খুচরো বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর বিনিয়োগ কৌশল এখন আর দূরের স্বপ্ন নয়। মাত্র কয়েকশো টাকার বিনিয়োগ থেকেই শুরু হতে পারে বিশ্বমানের ইকুইটি যাত্রা।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
