পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন, কি কি নতুন নিয়ম আসছে?

পাসপোর্টের নিয়মে সাম্প্রতিক পরিবর্তন কার্যকর হয়েছে। নতুন এই নিয়মগুলো পাসপোর্ট (সংশোধনী) বিধি, ২০২৫ নামে পরিচিত এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি ঘোষণা…

passport-application-process-major-changes-new-rules

পাসপোর্টের নিয়মে সাম্প্রতিক পরিবর্তন কার্যকর হয়েছে। নতুন এই নিয়মগুলো পাসপোর্ট (সংশোধনী) বিধি, ২০২৫ নামে পরিচিত এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি ঘোষণা করেছে। এই সংশোধিত বিধিগুলির মূল পরিবর্তন হলো, জন্মতারিখের প্রমাণ পেশ করার জন্য নতুন শর্তাবলী। বিশেষত, ১ অক্টোবর ২০২৩ বা তার পর জন্মগ্রহণ করা শিশুদের জন্য পাসপোর্টের আবেদন করতে গেলে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ধরনের প্রমাণ গ্রহণযোগ্য হবে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ বা তার পর জন্মগ্রহণ করা শিশুদের জন্য পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে জন্ম সনদ (Birth Certificate) একটি বাধ্যতামূলক প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। এই জন্ম সনদটি শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার অব বার্থস অ্যান্ড ডেথস অথবা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ দ্বারা ইস্যু করা হতে হবে, যারা “রেজিস্ট্রেশন অব বার্থস অ্যান্ড ডেথস অ্যাক্ট, ১৯৬৯” এর অধীনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত।

   

তবে, যারা ১ অক্টোবর ২০২৩ এর আগে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য পাসপোর্ট আবেদনের সময় কিছু অন্যান্য প্রমাণও গ্রহণযোগ্য থাকবে। যেমন:

১. জন্ম সনদ – যেটি রেজিস্ট্রার অব বার্থস অ্যান্ড ডেথস অথবা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন বা অন্য কোনো ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ থেকে ইস্যু করা হতে হবে।

২. স্কুল ট্রান্সফার সনদ বা স্কুল লিভিং সনদ – কোন স্বীকৃত স্কুল বা শিক্ষা বোর্ড থেকে ইস্যুকৃত, যেখানে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ উল্লেখ থাকবে।

৩. প্যান কার্ড – ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ দ্বারা ইস্যুকৃত প্যান কার্ড, যাতে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ উল্লেখ থাকবে।

৪. সরকারি চাকরিজীবীদের সেবা রেকর্ড – সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সেবা রেকর্ডের কপি অথবা পে পেনশন অর্ডার, যেটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অফিসার দ্বারা প্রত্যয়িত হতে হবে এবং আবেদনকারীর জন্ম তারিখ থাকতে হবে।

৫. ড্রাইভিং লাইসেন্স – সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স, যার মধ্যে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ থাকতে হবে।

৬. ভোটার আইডি কার্ড – নির্বাচন কমিশন দ্বারা ইস্যুকৃত ভোটার ফটো আইডি কার্ড, যার মধ্যে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ থাকবে।

৭. লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি – লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন বা অন্যান্য পাবলিক কোম্পানির পলিসি বন্ড, যাতে পলিসির হোল্ডারের জন্ম তারিখ উল্লেখ থাকবে।

এইসব প্রমাণের যেকোনো একটি বা একাধিক ব্যবহার করা যাবে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নতুন পরিবর্তন ঘোষণা করা হয়নি পাসপোর্ট নিয়মে, অর্থাৎ, আবেদনকারীরা আগের মতোই এসব প্রমাণের ভিত্তিতে পাসপোর্ট পেতে পারবেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ অক্টোবর ২০২৩ বা তার পর জন্মগ্রহণ করা শিশুদের জন্য জন্ম সনদ ছাড়া আর কোনো প্রমাণ গ্রহণযোগ্য হবে না। অর্থাৎ, তারা যদি অন্য কোনো ডকুমেন্টের মাধ্যমে জন্ম তারিখ প্রমাণ করতে চান, তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এর ফলে অনেক অভিভাবককে এখন শুধুমাত্র জন্ম সনদ সংগ্রহের জন্য আরও কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

যেহেতু জন্ম সনদ পেতে বেশ কিছু সময় লাগতে পারে, তাই এই পরিবর্তনটি বিশেষ করে নতুন বাবা-মায়ের জন্য একটি বড় পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়া, ১ অক্টোবর ২০২৩ এর আগে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকদের জন্য পূর্বের নিয়মই বহাল থাকবে, ফলে তাদের পক্ষে পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়া আগের মতোই সহজ থাকবে।

যারা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চান বা পুরনো পাসপোর্ট নবীকরণ করতে চান, তারা সরকারী ওয়েবসাইটে গিয়ে সমস্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। এখানে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র, পাসপোর্ট ফি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যও পাওয়া যাবে।

এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে সরকার পাসপোর্ট আবেদনের প্রক্রিয়া আরও সুসংগঠিত করার চেষ্টা করছে। তবে, বিশেষত শিশুদের জন্য আগের তুলনায় প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা আরও নির্দিষ্ট এবং কঠোর হওয়ায় কিছু পরিবারকে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হতে পারে।