এপ্রিলেই আরও চড়বে সোনার দাম! মাথায় হাত মধ্যবিত্তের

গত এক সপ্তাহে যেখানে স্টক মার্কেট কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে এবং টাকার দামও বেড়েছে, সেখানে সোনার দাম (Gold Price) কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত…

old Price in India Remains High, Rs 3000 Increase in March

গত এক সপ্তাহে যেখানে স্টক মার্কেট কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে এবং টাকার দামও বেড়েছে, সেখানে সোনার দাম (Gold Price) কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সোনার দাম (Gold Price) বাড়তে বাড়তে এখন এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশেষ করে মার্চের শেষ সপ্তাহে সোনার দাম (Gold Price) ৩ হাজার টাকার বেশি বেড়ে গেছে, যা ভোক্তাদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন সোনার দাম (Gold Price) এতটাই বেড়েছে যে, সোনার প্রতি ১০ গ্রাম দাম ৮৮ হাজার টাকার কাছাকাছি চলে গেছে। মার্চের প্রথম দিনে যে দাম ছিল, তার তুলনায় এখন ৩ হাজার টাকা বেড়েছে। একদিকে যেখানে রুপোর দাম কিছুটা কমেছে, সোনার দাম বাড়ছে অবিরত। গত এক সপ্তাহে সোনার দামে কোনো ধরনের বড় কোনও পতন দেখা যায়নি, বরং ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী রেটেই তা বাজারে রয়ে গেছে।

   

কলকাতার বাজারে সোনার দর (Gold Price) এখন কিছুটা অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। যেখানে সাধারণ মানুষ সোনার দাম কিছুটা কমার আশায় বসে ছিল, সেখানে এই পরিস্থিতি বিশেষ করে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। পাকা সোনার দামও ৮৮ হাজার টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা একেবারে উর্ধ্বমুখী একটি ট্রেন্ডের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

  • পাকা সোনা বার (২৪ ক্যারাট): ৮৮ হাজার ২৫০ টাকা (প্রতি ১০ গ্রাম)

  • পাকা সোনা বার (খুচরো): ৮৮ হাজার ৭০০ টাকা (প্রতি ১০ গ্রাম)

  • হলমার্কযুক্ত গয়না সোনা (২২ ক্যারাট): ৮৪ হাজার ৩০০ টাকা (প্রতি ১০ গ্রাম)

  • রূপো (খুচরো): ৯৭ হাজার ৮৫০ টাকা (প্রতি কেজি)

এতদূর পর্যন্ত যতটা না আশাবাদী হবার মতো খবর, তার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এই দামগুলো যখন বাজারে উপস্থিত হয়, তখন সাধারণ মানুষ সোনা কেনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এবং যেহেতু সোনার দাম এতটা বাড়ছে, ক্রেতাদের জন্য বাজেটের মধ্যে সোনা কেনা এক কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে, এই দামগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণমূলক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যদিও খুচরো এবং গয়না কিনতে গিয়ে আসলে এর থেকে কিছুটা বেশি খরচ হবে। কারণ, সোনার এই দামগুলোর সাথে জিএসটি এবং গয়না তৈরির মজুরি যোগ হবে।

এই দামে ৩ শতাংশ জিএসটি ও মেকিং চার্জ এবং গয়না তৈরির মজুরি যোগ হয়ে দাম আরও কিছুটা বাড়বে। সাধারণত, গয়না তৈরির মজুরি বা মেকিং চার্জ প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে। তাই এই চার্জ জায়গায় জায়গায় কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তবে, কলকাতার বাজারে এই সোনার দাম যখন জিএসটি ও মেকিং চার্জের সঙ্গে যোগ করা হয়, তখন দাম প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার জন্য প্রায় ৯১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এছাড়া, ২২ ক্যারাট সোনার গয়না, শুধু জিএসটি যোগ করেই সাড়ে ৮৭ হাজার টাকার কাছাকাছি চলে আসবে। এই গয়না কিনতে গেলে মেকিং চার্জও যোগ হতে পারে, যা দামকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

Advertisements

এখন সোনার দাম বাড়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম অনেকটা বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আমেরিকা, ইউরোপ, এবং অন্যান্য দেশে সোনার দাম বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে। তাছাড়া, পেট্রোলিয়াম, রুপো এবং অন্যান্য ধাতুর দাম বাড়ার ফলে সোনার দামও বেড়েছে। এই ধরণের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে, সাধারণ মানুষের সোনার প্রতি আগ্রহ বাড়লেও, দাম বৃদ্ধির কারণে সোনা কেনার প্রবণতা কিছুটা কমেছে।

এছাড়া, ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিনিময় হারও সোনার দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। গত এক সপ্তাহে, যদিও স্টক মার্কেট এবং টাকার দাম কিছুটা বেড়েছে, সোনার দাম তেমন প্রভাবিত হয়নি। এক দিকে যেখানে অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হচ্ছে, অন্যদিকে সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য সোনা কেনা আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।

সোনার সঙ্গে সঙ্গে রূপোর দামও বাড়ছে। গত কয়েক দিনে রূপোর দাম এক লক্ষ টাকার উপরে চলে গিয়েছিল। যদিও গত ২ দিন ধরে রূপোর দাম কিছুটা কমেছে, তবুও রূপোর দাম এখনো বেশ উচ্চমানের অবস্থায় রয়েছে। রূপো, যা একসময় একেবারে সস্তা ছিল, আজকাল তার দাম এতটাই বেড়েছে যে, এটি এখন সাধারণ ক্রেতার জন্য একটি ব্যয়বহুল বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন পর্যন্ত সোনার দাম বাড়তে থাকা এবং রূপোর দামও ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর, বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে আগামী সপ্তাহগুলিতে সোনার দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে, তবে বড় ধরনের পতন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই যারা সোনা কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের উচিত বাজারের গতিবিধি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া।