নতুন নির্দেশ জারি করল ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (NPCI)। এবার থেকে সমস্ত সদস্য ব্যাঙ্ককে বাধ্যতামূলকভাবে রিয়েল টাইম প্যান এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাইকরণ করতে হবে আয়কর দপ্তরের ই-পোর্টালের মাধ্যমে। কর ফাইলিং ও ভর্তুকি প্রদানের সময় যাতে তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় আরও গতি ও নির্ভুলতা আসে, সেই উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে এনপিসিআই।
কী বলা হয়েছে সার্কুলারে?
NPCI-এর তরফে সদ্য জারি হওয়া এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, এখন থেকে সমস্ত সরকারি বিভাগ একটি নির্দিষ্ট এপিআই (API) পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবে। এই API এমন একটি সফটওয়্যার ইন্টারফেস, যা সরকারের ট্যাক্স পোর্টাল এবং ব্যাঙ্কের মূল কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান সহজ ও সুরক্ষিতভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম। এর ফলে প্যান স্ট্যাটাস, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম এবং অ্যাকাউন্টের বৈধতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হবে।
এই পদক্ষেপটি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর সংক্রান্ত ডিজিটাল কাঠামোর অংশ। API ব্যবহারের মাধ্যমে যেমন স্বচ্ছতা বাড়বে, তেমনি ম্যানুয়াল ভুলের আশঙ্কাও হ্রাস পাবে।
করদাতাদের জন্য কী সুবিধা?
এই পরিবর্তনের ফলে করদাতাদের জন্য একাধিক সুবিধা আসতে চলেছে। বিশেষ করে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় প্যান ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করার যে ঝক্কি ছিল, তা অনেকটাই সহজ হবে। যাচাইকরণ প্রক্রিয়া হবে স্বয়ংক্রিয়, ফলে হাতে করে তথ্য দেওয়ার বা যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়বে না। এর ফলে রিটার্ন প্রসেসিং হবে দ্রুত এবং ই-রিফান্ড পেতে সময় অনেক কম লাগবে। সাধারণত রিটার্ন ফাইলের ১০-১২ দিনের মধ্যে বৈধতার স্ট্যাটাস আপডেট হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও, সরকারি ভর্তুকি এবং আর্থিক সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। যে কোনও ভর্তুকির টাকা সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বৈধ অ্যাকাউন্টে যাচাই সাপেক্ষে পৌঁছে যাবে, ফলে ভুয়ো দাবিদাররা আর সুবিধা নিতে পারবে না।
পূর্ববর্তী পদক্ষেপগুলির ধারাবাহিকতায় এই উদ্যোগ
NPCI ইতিমধ্যেই ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি পৃথক সার্কুলারে ইউপিআই লাইট ট্রান্সাকশনের সীমা সংক্রান্ত বদল কার্যকর করেছে। নতুন সীমা কার্যকর হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে। এবারে নতুন করে প্যান-ব্যাঙ্ক যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক করে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তুলতে চলেছে কেন্দ্র।
এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আয়কর ফাইলিং নয়, বরং সমগ্র ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়াবে। করদাতারা দ্রুত পরিষেবা পাবেন, সরকারও সঠিক জায়গায় ভর্তুকি পৌঁছে দিতে পারবে। আর্থিক দুর্নীতির সম্ভাবনা কমবে, ডিজিটাল ভারতে আরও একধাপ এগোবে দেশ।