অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: উত্তরবঙ্গে (North Bengal) দিন দিন তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার সহ বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে, যার ফলে জনজীবন হাঁসফাঁস অবস্থায় পৌঁছেছে। প্রচণ্ড গরমে শরীরকে সতেজ রাখতে এবং তাৎক্ষণিক স্বস্তি পেতে অনেকেই ডাবের জল বা আখের রসের উপর নির্ভর করছেন। এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর হলেও, ডাব ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ হয়ে উঠেছে।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজার এবং রাস্তার ধারে ডাব বিক্রেতারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্থানীয় এক ডাব ব্যবসায়ী, রমেশ মণ্ডল, জানান, “গরমের কারণে ডাবের চাহিদা এখন দ্বিগুণ হয়েছে। আগে যেখানে দিনে ৫০-৬০টি ডাব বিক্রি হতো, এখন তা ১০০-১২০-এ পৌঁছেছে। রোদে দাঁড়িয়ে কাজ করতে কষ্ট হলেও, বিক্রি বাড়ায় আমাদের আর্থিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এই সময়ে ডাবের দামও কিছুটা বেড়েছে, তবে গ্রাহকরা তা মেনে নিচ্ছেন, কারণ গরমে ডাবের জলের কোনও বিকল্প নেই।”
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এই তীব্র দাবদাহের মধ্যে ডাবের জল এবং আখের রসের মতো পানীয়ের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। শুধুমাত্র শহরাঞ্চল নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও ডাবের চাহিদা বাড়ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা, মিনতি বর্মন, বলেন, “এই গরমে বাড়ি থেকে বেরোলেই গলা শুকিয়ে যায়। ডাবের জল পান করলে শরীর সতেজ হয় এবং কিছুটা শক্তি ফিরে আসে।”
এই তীব্র গরমে ডাব ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আখের রস বিক্রেতারাও লাভের মুখ দেখছেন। তবে, ডাবের জলের তুলনায় আখের রসের চাহিদা কিছুটা কম। একজন আখের রস বিক্রেতা জানান, “ডাবের তুলনায় আমাদের বিক্রি একটু কম, তবে এই গরমে ব্যবসা বেশ ভালোই চলছে।”
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহেও তাপমাত্রা কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই পরিস্থিতি ডাব ব্যবসায়ীদের জন্য আরও কিছুদিন লাভজনক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, গ্রাহকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে ডাবের দাম বৃদ্ধি নিয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, বর্তমানে ডাব ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে এই তীব্র দাবদাহের মধ্যেও।