মাধবী পুরীর বিরুদ্ধে মুম্বই আদালতের FIR দায়েরের নির্দেশ

মুম্বইয়ের একটি বিশেষ দুর্নীতি দমন আদালত (Anti-Corruption Court) ভারতীয় শেয়ার বাজারে জালিয়াতি ও নিয়ন্ত্রক লঙ্ঘনের অভিযোগে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI)-এর কিছু শীর্ষ…

mumbai-court-orders-fir-against-madhabi-puri

মুম্বইয়ের একটি বিশেষ দুর্নীতি দমন আদালত (Anti-Corruption Court) ভারতীয় শেয়ার বাজারে জালিয়াতি ও নিয়ন্ত্রক লঙ্ঘনের অভিযোগে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI)-এর কিছু শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে FIR দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে সাবেক SEBI চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচও রয়েছেন। আদালত বলেছে, এই মামলায় FIR দায়ের করা উচিত, যা শেয়ার বাজারের জালিয়াতি ও নিয়ন্ত্রক লঙ্ঘন সম্পর্কিত অভিযোগের ভিত্তিতে।

মুম্বইয়ের বিশেষ বিচারক এস ই ব্যাঙ্গার এই নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি একটি অভিযোগের ভিত্তিতে যে অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন সাপান শ্রীবাস্তব, একজন সাংবাদিক, যিনি থানে থেকে সংবাদ পরিবেশন করেন। এই অভিযোগে বলা হয়েছে, SEBI কর্মকর্তারা বাজারের প্রভাবিতকরণে সহায়তা করেছিলেন এবং একটি কোম্পানিকে তালিকাভুক্তির অনুমতি দিয়েছিলেন, যদিও এটি নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করেনি।

kolkata24x7-sports-News

   

এতে আরও বলা হয়, SEBI তার আইনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল, যার ফলে আর্থিক জালিয়াতি, অভ্যন্তরীণ ট্রেডিং এবং পাবলিক ফান্ডের অপব্যবহার ঘটে। অভিযোগে বলা হয়েছে যে BSE (Bombay Stock Exchange)-এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগে আরো কিছু উচ্চপদস্থ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে SEBI এর হোলটাইম সদস্য হিসেবে পরিচিত অশ্বিনী ভাটিয়া, কমলেশ চন্দ্র ভার্ষ্ণি, অনন্ত নারায়ণ জি, BSE-এর চেয়ারম্যান প্রমোদ আগরওয়াল এবং CEO সুন্দরারামান এর নাম রয়েছে।

অভিযোগটি পর্যালোচনা করার পর, বিচারক ব্যাঙ্গার মনে করেছেন যে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থায় গাফিলতি এবং ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা একটি বিস্তারিত তদন্তের দাবি রাখে। আদালত জানিয়েছে, অভিযোগগুলি এমন একটি গণনাযোগ্য অপরাধের প্রতি ইঙ্গিত দেয়, যা একটি সুবিচারপূর্ণ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করে। এই কারণে আদালত অ্যান্টি-কর্পশন ব্যুরো (ACB)-কে ভারতের দণ্ডবিধি, SEBI আইন এবং দুর্নীতির প্রতিরোধ আইনের অধীনে FIR দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারক আরও বলেন, ACB-কে 30 দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত জানিয়েছে, SEBI-এর উদাসীনতা এবং এই ঘটনার প্রভাব বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর পড়তে পারে, এজন্য বিচারিক হস্তক্ষেপ জরুরি ছিল।

এই মামলায় SEBI এবং BSE-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা দেখায় যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি যে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না, তা স্পষ্টভাবে ভারতের শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতি একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন ফেলে দেয়। বিশেষ করে, বাজারের মধ্যে বড় ধরনের কারচুপি, জালিয়াতি এবং অভ্যন্তরীণ ট্রেডিংয়ের ঘটনা সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারে বিশাল অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, SEBI ও BSE-এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে FIR দায়েরের আদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যা ভারতের শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা এবং নিয়মিততার প্রতি মানুষের আস্থাকে পুনর্স্থাপন করতে সহায়ক হতে পারে।

বিচারকের নির্দেশে আদালত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে SEBI-এর উদাসীনতার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা হারানোর আশঙ্কা রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে একটি নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মামলা আগামী দিনগুলোতে ভারতের শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কার্যকারিতা বিষয়ে একটি বড় পরীক্ষা হতে পারে।

এছাড়া, এই ধরনের একটি মামলার ফলে ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির প্রতি আরও কড়া নজরদারি ও পারদর্শিতা আশা করা যাচ্ছে, যাতে কোনো ধরনের শেয়ার বাজারের জালিয়াতি, কারচুপি বা নিয়ম ভাঙা যাতে সহজে না ঘটে।

মুম্বইয়ের আদালতের FIR দায়েরের আদেশ এমন একটি পদক্ষেপ, যা ভারতের শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। এই তদন্তের মাধ্যমে যদি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি একটি বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। এর পাশাপাশি, বিচারিক হস্তক্ষেপ শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা এবং নিয়মের প্রতি মানুষের আস্থাকে পুনরুদ্ধার করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে পরিগণিত হতে পারে।