২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অধীনে ভারতীয় অর্থনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক সংস্কার, ডিজিটালকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক তথ্য এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) এর সিদ্ধান্তগুলো থেকে মনে হচ্ছে, মোদী জমানায় অর্থনীতি একটি নতুন নজির সৃষ্টি করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব ও বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণের পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সাম্নে এসেছে এমন একটি তথ্য যে, গত জুলাই মাসে প্রথমবারের মতো ১১ বছর পর RBI-এর ডলার কেনার প্রবণতা বন্ধ হয়ে গেছে এবং $২.৫৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপটি রুপির মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য গ্রহণ করা হয়েছে, যখন রুপি ডলারের তুলনায় ৮৮.৬৭-এ পৌঁছে গেছে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, কারণ এর আগে RBI ডলার সঞ্চয় করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ শক্তিশালী করার পথে এগিয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে মার্কিন ডলারের প্রভাব কমানো এবং BRICS (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চায়না, দক্ষিণ আফ্রিকা) দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গাঢ় করার উদ্দেশ্য রয়েছে।
মোদী সরকারের এই কৌশলটি বিশ্বব্যাপী ডলারের আধিপত্য কমানোর চেষ্টার সঙ্গে সাংগঠনিক। ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে কিছু বিষয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে আগস্ট ২০২৫-এ ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের পর। এই পটভূমিতে, ভারত BRICS-এর মাধ্যমে একটি বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে কাজ করছে। এর ফলে ভারতীয় অর্থনীতি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, যেমন রুপির মূল্যহ্রাস এবং আমদানি খরচ বৃদ্ধি।
তবে, এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও জড়িত। ২০২৪ সালের একটি রিপোর্ট অনুসারে, রুপির মূল্য পরবর্তী কয়েক বছরে ৮-১০% হ্রাস পেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে RBI-এর $৭০০ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ব্যবহার করা হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, যা পূর্বের সঞ্চয়মুখী নীতির পরিবর্তন নির্দেশ করে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপগুলো দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে রুপির দুর্বলতা এবং বাজারে অস্থিরতা কাটানোর জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মোদী জমানায় ভারতের অর্থনীতি যে নতুন পথে এগোচ্ছে, তা দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে, এই পরিবর্তনের সফলতা নির্ভর করবে কতটা দক্ষতার সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যায়।
❓ FAQs
Q1. মোদী জমানায় ভারতের অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
👉 অর্থনৈতিক সংস্কার, ডিজিটালকরণ, আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার ওপর কৌশলগত পদক্ষেপ।
Q2. RBI সম্প্রতি কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
👉 ১১ বছর পর প্রথমবার RBI ডলার কেনা বন্ধ করে $২.৫৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে, রুপি স্থিতিশীল রাখতে।
Q3. কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
👉 রুপির মান ডলারের বিপরীতে ৮৮.৬৭ পৌঁছানোর পর তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ডলারের আধিপত্য কমাতে।
Q4. BRICS-এ ভারতের ভূমিকা কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
👉 BRICS-এর মাধ্যমে ভারত বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থা গড়ছে, যাতে মার্কিন ডলারের নির্ভরতা কমে।
Q5. এই পরিবর্তনের ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে?
👉 রুপির মূল্য হ্রাস, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, এবং বাজারে অস্থিরতা।
Q6. দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল কী হতে পারে?
👉 অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, বৈদেশিক মুদ্রার বৈচিত্র্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধি।
Q7. RBI-র বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কত?
👉 প্রায় $৭০০ বিলিয়ন, যা রুপির মান বজায় রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
Q8. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন?
👉 আগস্ট ২০২৫-এ ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের ফলে সম্পর্ক কিছুটা টানাপড়েনের মুখে।
🔑 Modi government economy reforms, RBI dollar sale 2025, BRICS India strategy, Indian rupee depreciation, Modi era economic policies