৩১ মার্চ ডেডলাইন! রেশন কার্ডহোল্ডারদের আধার ভিত্তিক e-KYC করার নির্দেশ জারি সরকারের

ভারত সরকার রেশন কার্ডহোল্ডারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করেছে। আগামী ৩১ মার্চ, ২০২৫-এর মধ্যে সব রেশন কার্ডহোল্ডারকে আধার-ভিত্তিক e-KYC (ইলেকট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার) প্রক্রিয়া…

march-31-deadline-government-directs-ration-card-holders-to-complete-aadhaar-based-e-kyc

ভারত সরকার রেশন কার্ডহোল্ডারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করেছে। আগামী ৩১ মার্চ, ২০২৫-এর মধ্যে সব রেশন কার্ডহোল্ডারকে আধার-ভিত্তিক e-KYC (ইলেকট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হল রেশন বিতরণে স্বচ্ছতা আনা এবং এই প্রকল্পের অপব্যবহার রোধ করা। যারা এই সময়সীমার মধ্যে e-KYC সম্পন্ন করবেন না, তাঁদের পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (PDS)-এর মাধ্যমে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য পাওয়ার সুবিধা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

   

e-KYC হল একটি ডিজিটাল যাচাই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে রেশন কার্ডহোল্ডারের পরিচয় আধার কার্ড ব্যবহার করে নিশ্চিত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ড (Ration Card) লিঙ্ক করা হয় এবং আধার-ভিত্তিক যাচাইয়ের মাধ্যমে তথ্যের সত্যতা পরীক্ষা করা হয়।

Advertisements

রেশন কার্ড e-KYC কী?

রেশন কার্ডের (Ration Card) জন্য e-KYC হল একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া, যেখানে কার্ডধারীদের আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ড (Ration Card) যুক্ত করে তাঁদের পরিচয় যাচাই করা হয়। এটি PDS-এ জাল বা ডুপ্লিকেট সুবিধাভোগীদের বাদ দিতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ:
এটি PDS-এর অধীনে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করে।

বিতরণ প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে এবং প্রকৃত সুবিধাভোগীদের শনাক্ত করে।

অ-সম্মতির কারণে রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়া রোধ করে।

অনলাইনে রেশন কার্ড e-KYC সম্পন্ন করার ধাপ:

ধাপ ১: রাজ্যের PDS ওয়েবসাইটে যান- আপনার রাজ্যের পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (PDS)-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। প্রতিটি রাজ্যের জন্য আলাদা e-KYC প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।

ধাপ ২: e-KYC বিভাগ খুঁজুন- হোমপেজে “রেশন কার্ডের জন্য e-KYC” বা অনুরূপ বিকল্পটি খুঁজে বের করুন। এটি সাধারণত পরিষেবা বা রেশন কার্ড মেনুর অধীনে থাকে।

ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় তথ্য দিন – আপনার রেশন কার্ড নম্বর লিখুন। পরিবারের প্রধান বা সংশ্লিষ্ট সদস্যের আধার কার্ড নম্বর দিন।

ধাপ ৪: মোবাইল নম্বর যাচাই করুন – আধারের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর ব্যবহার করুন। এই নম্বরে পাঠানো ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (OTP) দিয়ে লগইন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।

ধাপ ৫: যাচাইয়ের জন্য জমা দিন- তথ্য যাচাই হলে জমা দিন। e-KYC সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনি একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা পাবেন।

যদি আপনার অনলাইন সুবিধা না থাকে, তবে অফলাইনে রেশন কার্ড e-KYC সম্পন্ন করার ধাপ:

প্রথম ধাপ: স্থানীয় রেশন কার্ড অফিসে যান- আপনার কাছাকাছি রেশন কার্ড অফিস বা কমন সার্ভিস সেন্টার (CSC)-এ যান।

দ্বিতীয় ধাপ: মূল নথি নিয়ে যান- আপনার রেশন কার্ড এবং আধার কার্ডের মূল কপি সঙ্গে নিন।

তৃতীয় ধাপ: বায়োমেট্রিক যাচাই- আঙুলের ছাপ বা আইরিস স্ক্যানের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক যাচাই সম্পন্ন করুন।

চতুর্থ ধাপ: তথ্য জমা ও নিশ্চিতকরণ- তথ্য জমা দিন এবং একটি নিশ্চিতকরণ স্লিপ গ্রহণ করুন।

কেন এটি জরুরি?

সরকারের এই নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য হল PDS-এর মাধ্যমে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। জাল বা ডুপ্লিকেট রেশন কার্ডের মাধ্যমে প্রকল্পের অপব্যবহার বন্ধ করতে এই প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ। যারা ৩১ মার্চের মধ্যে e-KYC করবেন না, তাঁদের রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে, ফলে ভর্তুকির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

পশ্চিমবঙ্গের জন্য তাৎপর্য:

পশ্চিমবঙ্গে রেশন কার্ড অনেক পরিবারের জন্য জীবনধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাজ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ PDS-এর মাধ্যমে ভর্তুকিযুক্ত চাল, গম এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী পান। তবে গ্রামাঞ্চলে অনেকের ডিজিটাল সুবিধা বা সচেতনতা কম থাকায়, অফলাইন প্রক্রিয়া তাঁদের জন্য সহজ হতে পারে। কলকাতা বা শহরাঞ্চলে বসবাসকারীরা অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই এটি সম্পন্ন করতে পারেন।

কী করবেন?
সময়সীমা মনে রাখুন: ৩১ মার্চ, ২০২৫-এর আগে e-KYC সম্পন্ন করুন।

তথ্য প্রস্তুত রাখুন: রেশন কার্ড নম্বর, আধার নম্বর এবং আধার-লিঙ্কড মোবাইল নম্বর হাতের কাছে রাখুন।

সাহায্য নিন: অনলাইনে সমস্যা হলে স্থানীয় রেশন অফিস বা CSC-তে যোগাযোগ করুন।

রেশন কার্ডের e-KYC সম্পন্ন করা এখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি না করলে ভর্তুকির সুবিধা হারানোর ঝুঁকি রয়েছে। তাই সময় থাকতে অনলাইন বা অফলাইন পদ্ধতিতে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। পশ্চিমবঙ্গের রেশন কার্ডধারীদের জন্য এটি একটি জরুরি পদক্ষেপ, যাতে তাঁদের খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ থাকে।