টানা বৃষ্টিতে বিপাকে বাজার, আকাশছোঁয়া সবজির দাম

গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণে নাকাল গোটা রাজ্য। সকাল-সন্ধ্যা থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে স্বাভাবিক জনজীবন যেমন ব্যাহত হয়েছে, তেমনই তার বড়সড় প্রভাব পড়েছে রাজ্যের…

Kolkata today's Vegetable Price

গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণে নাকাল গোটা রাজ্য। সকাল-সন্ধ্যা থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে স্বাভাবিক জনজীবন যেমন ব্যাহত হয়েছে, তেমনই তার বড়সড় প্রভাব পড়েছে রাজ্যের সবজি বাজারে  (Vegetable Price) । সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ। কারণ, লাগাতার বৃষ্টির কারণে জমি জলের তলায়, অনেক জায়গায় চাষের ক্ষতি, আর তার জেরেই সবজির দাম বেড়ে ছুঁয়েছে আকাশ।

বাজারে কেমন দাম?
কলকাতা ও আশপাশের বাজারগুলিতে বর্তমানে পটল ৮০-৯০ টাকা (Vegetable Price) কেজি, ঝিঙ্গে ৯০-১০০ টাকা, করলা ৮০-৮৫ টাকা, (Vegetable Price) বেগুন ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ২০০ টাকা (Vegetable Price) পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। এমনকি, যেসব সবজি সাধারণত বর্ষাকালে সস্তা থাকে — যেমন কুমড়ো বা কচু — সেগুলোর দামও ঊর্ধ্বমুখী।

   

চাষিদের কী বলছেন?
হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, টানা বৃষ্টির ফলে খেতে জল জমেছে। বেশ কিছু জায়গায় বীজ পচে গিয়েছে, কোথাও আবার সদ্য ফল ধরা গাছগুলিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে যে ফসল উঠেছে, তা খুবই কম। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, একটি গোটা জমি থেকে যা ফলন হওয়ার কথা, তার অর্ধেকও উঠছে না।

একজন চাষির কথায়,
“গত সপ্তাহে পটল তুলে বাজারে পাঠিয়েছিলাম, প্রায় ৬০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে জল ও অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে। এভাবে হলে তো আমরা ঋণও শোধ করতে পারব না।”

টানা বৃষ্টির জেরে রাস্তাঘাট জলমগ্ন, অনেক এলাকায় কাদামাটি জমে গেছে। সেই কারণে গ্রামের বাজার থেকে শহরের বাজারে সবজি পাঠানোও চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এর ফলে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, আর তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দামে।

Advertisements

একজন পাইকারি ব্যবসায়ীর কথায়,
“আগে যেখানে দিনে ১৫-২০ গাড়ি সবজি (Vegetable Price) আসত, এখন ৭-৮ গাড়িতেই সীমাবদ্ধ। ফলে দাম তো বাড়বেই।”

জনগণের ক্ষোভ
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ ক্রেতা। বাজারে গিয়ে ভোক্তাদের রীতিমতো মাথায় হাত! একজন গৃহবধূ বললেন,
“একটা কিলো বেগুন কিনতে ৮০ টাকা লাগছে! এক কেজি সবজি কিনলে আর কিছু কেনার জায়গা থাকে না। ছেলেমেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কিনতেই হচ্ছে, কিন্তু চলা যে ভার!”

সরকারি ভূমিকা ও সম্ভাব্য সমাধান
এই পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বড় কোনও হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি। যদিও কৃষি দপ্তরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন এবং কৃষকদের সাহায্যের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।