কলকাতা, ২৩ সেপ্টেম্বর: জিও ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (Savings Pro Account) অধীনস্থ জিও পেমেন্টস ব্যাঙ্ক লিমিটেড শনিবার একটি উদ্ভাবনী সেবা চালু করেছে‘সেভিংস প্রো’ অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাতারাতি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ হয়, যা গ্রাহকদের ৬.৫% পর্যন্ত রিটার্নের সুযোগ দেয়। এটি একটি অটো-সুইপ সেভিংস অ্যাকাউন্ট, যা অব্যবহৃত অর্থকে লাভজনক করে তোলে এবং ডিজিটাল যুগের ফিনান্সিয়াল সচেতনতার সাথে খাপ খায়।
জিও ফাইন্যান্স অ্যাপের মাধ্যমে কয়েক ক্লিকে এই সেবায় আপগ্রেড করা যায়, যা ভারতের লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।জিও পেমেন্টস ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও ভিনোদ ইশ্বরান বলেছেন, “কম সুদের পরিবেশে আজকের ফিনান্সিয়ালি অ্যাওয়্যার গ্রাহকরা তাদের সেভিংস বাড়ানোর স্মার্ট উপায় খুঁজছেন।
সেভিংস প্রো এই অব্যবহৃত অর্থ থেকে আয় করার একটি সহজ, পুরোপুরি ডিজিটাল এবং অটোমেটেড অপশন প্রদান করে।” এই সুবিধা গ্রাহকদের নির্বাচিত থ্রেশহোল্ডের উপরে থাকা অর্থকে লো-রিস্ক রাতারাতি মিউচুয়াল ফান্ডের ‘গ্রোথ’ প্ল্যানে বিনিয়োগ করে। প্রাথমিক লঞ্চ ফেজে থ্রেশহোল্ড শুরু হচ্ছে ৫,০০০ টাকা থেকে, এবং প্রতিদিন ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের সীমা রয়েছে।
সেভিংস প্রো-এর মূল আকর্ষণ হলো এর স্বয়ংক্রিয়তা। গ্রাহকরা জিও ফাইন্যান্স অ্যাপে থ্রেশহোল্ড সেট করেন, এবং তার উপরে থাকা অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ হয়। রাতারাতি মিউচুয়াল ফান্ডগুলো লো-রিস্ক, যা সাধারণত একদিনের মধ্যে ম্যাচিউর হয় এবং লিকুইডিটি প্রদান করে। কোম্পানির দাবি অনুসারে, ৬.৫% রিটার্নটি গত দুই বছরের অ্যানুয়ালাইজড পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে, যা ওভারনাইট ফান্ডের গ্রোথ প্ল্যান থেকে আসে।
তবে, মিউচুয়াল ফান্ডগুলো মার্কেট রিস্কের অধীনস্থ, এবং কোনো লক-ইন পিরিয়ড নেই। গ্রাহকরা যেকোনো সময় অ্যাকাউন্টের স্ট্যাটাস দেখতে, থ্রেশহোল্ড পরিবর্তন করতে এবং রিটার্ন ট্র্যাক করতে পারেন—সম্পূর্ণ ট্রান্সপারেন্সি সহ।রিডেম্পশন প্রক্রিয়াও সহজ। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) নিয়মানুসারে, গ্রাহকরা তাদের বিনিয়োগের ৯০% পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে উত্তোলন করতে পারেন, যার সর্বোচ্চ সীমা ৫০,০০০ টাকা। ৫০,০০০ টাকার উপরের অংশ ১-২ কার্যদিবসের মধ্যে উত্তোলনযোগ্য।
এতে কোনো এন্ট্রি বা এক্সিট লোড, লুকানো চার্জ বা লক-ইন নেই, যা গ্রাহকদের পুরো নিয়ন্ত্রণ দেয়। জিও পেমেন্টস ব্যাঙ্ক বলেছে, “এটি অভিজ্ঞ এবং প্রথমবারের ইনভেস্টর উভয়ের জন্য ডিজাইন করা, যা লং-টার্ম ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশনকে সমর্থন করে।”এই লঞ্চ ডিজিটাল ব্যাঙ্কিংয়ের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। ভারতে পেমেন্টস ব্যাঙ্কগুলো ট্র্যাডিশনাল ব্যাঙ্ক থেকে আলাদা, কারণ তারা ডিপোজিট ইনশুরেন্স কভারেজ দেয় না এবং লোন দেয় না, কিন্তু ডিজিটাল লেনদেনে সুবিধা প্রদান করে।
জিওর এই উদ্যোগ ফিনটেক সেক্টরে একটি মাইলফলক, যা অ্যাইরটেল পেমেন্টস ব্যাঙ্ক বা পেটিএম পেমেন্টস ব্যাঙ্কের সাথে প্রতিযোগিতা বাড়াবে। গ্রাহকরা এখন তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে সহজে বিনিয়োগ করে সেভিংসকে বাড়াতে পারবেন, যা বিশেষ করে মিডল ক্লাসের জন্য উপকারী। তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, মিউচুয়াল ফান্ড রিস্ক বহন করে, তাই গ্রাহকদের নিজেদের গবেষণা করা উচিত।
এশিয়া কাপে গুরুর রেকর্ড টপকে শিরোনামে শিষ্য
জিও পেমেন্টস ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপ ভারতের ফিনান্সিয়াল ইকোসিস্টেমকে আরও ডিজিটালাইজ করে তুলবে। কোনো পেপারওয়ার্ক ছাড়াই, সহজ অ্যাক্সেস সহ এটি ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত প্রোডাক্ট, যা ভারতীয়দের অর্থ ব্যবস্থাপনাকে সহজ, বুদ্ধিমান এবং ডিজিটাল করে। গ্রাহকরা এখনই জিও ফাইন্যান্স অ্যাপ ডাউনলোড করে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। এই উদ্যোগ সেভিংসকে ইনভেস্টমেন্টে রূপান্তরিত করে, যা দেশের অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
