আয়কর রিটার্ন দাখিলের (ITR Refund ) শেষ সময়সীমা শেষ হলেও এই বছর ফেরত প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য বিলম্ব দেখা যাচ্ছে। ২০২৫-২৬ কর বর্ষের জন্য দেশে মোট ১,৩৪.৯ মিলিয়ন ব্যক্তিগত নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর মধ্যে সেপ্টেম্বর ১৬ তারিখ পর্যন্ত ৭৫.৮ মিলিয়ন রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। জুন বা জুলাই মাসে রিটার্ন দাখিল করেও অনেক করদাতা এখনও ফেরত পাননি।
বিলম্বের মূল কারণ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিলম্বের প্রধান কারণ আয়কর বিভাগের বাড়তি যাচাই (Verification) এবং স্ক্রুটিনি প্রক্রিয়ার প্রতি ফোকাস। বড় ফেরতের পরিমাণ, উল্লেখযোগ্য ছাড় (Deduction) দাবি বা কর অব্যাহতি (Exemption) থাকা রিটার্নগুলোকে আরও বিস্তারিতভাবে যাচাই করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান:
সেপ্টেম্বর ২২ পর্যন্ত আয়কর বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৫০.১ মিলিয়ন রিটার্ন প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মানে, এখনও ১০ মিলিয়নের বেশি রিটার্ন মুলতুবি রয়েছে। ফলে অনেক করদাতা তাদের ফেরতের জন্য আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পরিচালক তারুণ গার্গ মনিকন্ট্রোলকে জানান, “যাচাই প্রক্রিয়ার ওপর বাড়তি নজরদারি হল বিলম্বের মূল কারণ। বড় ফেরতের পরিমাণ, উচ্চ ছাড় দাবি বা কর অব্যাহতি থাকলে রিটার্নগুলোকে আরও বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করতে হয়।”
একইভাবে, একে এম গ্লোবালের কর অংশীদার সন্দীপ সেহগাল বলেন, “বড় ফেরতের পরিমাণ, একাধিক আয়ের উৎস, বিদেশি আয় এবং ফর্ম ২৬এএস/এআইএস-এ তথ্যের মিল না থাকলে অতিরিক্ত যাচাই প্রয়োজন। এছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আগে থেকে যাচাই না থাকলে ফেরত বিলম্বিত হয়।”
অন্যান্য কারণে বিলম্ব:
ফেরতের ধীরগতি শুধুমাত্র যাচাই প্রক্রিয়ার কারণে নয়। কিছু অন্যান্য কারণও রয়েছে, যেমন:
টিডিএস (TDS) ডেটা মেলানো না হওয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তথ্যের ভুল বা অসম্পূর্ণতা, ই-ভেরিফিকেশন (e-verification) দেরি।
গার্গ আরও বলেন, সাধারণত চাকুরিজীবী বা সাধারণ ব্যক্তির রিটার্ন ই-ভেরিফিকেশনের পরে দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ হয়। কিন্তু যারা ক্যাপিটাল গেইনস, বিদেশি সম্পদ বা উচ্চ ছাড় দাবি করেন, তাদের ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
করদাতাদের জন্য পরামর্শ:
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, করদাতাদের উচিত রিটার্ন দাখিলের সময় সকল তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করা এবং ই-ভেরিফিকেশন দ্রুত সম্পন্ন করা। ব্যাংক তথ্য আগে থেকে যাচাই করা থাকলে ফেরতের সময়ও কমানো সম্ভব।
আয়কর বিভাগও নিশ্চিত করেছে যে, সমস্ত রিটার্ন যথাযথভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যদিও ফেরতের দেরি কিছুটা দীর্ঘ হচ্ছে, এটি ভবিষ্যতে করদাতাদের স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
ফলশ্রুতিতে, করদাতাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ছোটখাটো তথ্য ত্রুটি সংশোধন এবং ই-ভেরিফিকেশন সম্পন্ন থাকলে, ফেরতের প্রক্রিয়ার সময় অনেক দ্রুত হতে পারে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
